বিশেষ প্রতিনিধি : চলনবিল অধ্যূষিত তাড়াশে কচুরি পানা নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন কৃষক ও মৎস্যজীবি। তিন দফায় দীর্ঘ মেয়াদী বন্যার সঙ্গে কচুরিপানার আবির্ভাব, এ যেন মরার উপর খাড়াঁর ঘা! এই জলজ উদ্ভিদ সৃষ্ট জনদুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তা চেয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
ইতোমধ্যে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাউল করিম বরাবর একটি লিখিত আবেদন দিয়েছেন সগুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান টি এম আব্দুল্লাহেল বাকী। সরেজমিনে উপজেলার সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল এলাকা, নওগাঁ ইউনিয়নের পংরৌহালী এলাকা, মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের হামকুড়িয়া এলাকা, তাড়াশ সদর ইউনিয়নের উলিপুর এলাকা, মাধাইনগর ইউনিয়নের সোনাপাতিল এলাকা, বারুহাস ইউনিয়নের সরাবাড়ি এলাকায় দেখা যায়, অথই পানির নিচে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ আর পুকুর। আর পানির উপরে ভাসছে শুধুই কচুরিপানা। দুই-চারজন কৃষক নৌকা দিয়ে জমি থেকে কচুরিপানা বেড় করে দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ভুক্তভোগী কৃষক কুন্দইল গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলাম, বাবলু সরকার, সিরাজুল ইসলাম, পংরৌহালী গ্রামের আব্দুল জাব্বার, নজরুল ইসলাম, সাইদুর রহমান, সোনাপাতিল গ্রামের ময়নুল হোসেন, ইয়াকুব আলী, আলহাজ উদ্দিন, হামকুড়িয়া গ্রামের ইসাহাক আলী, আরমান আলী, সবুজ হোসেন, উলিপুর গ্রামের আব্দুল খালেক, আব্দুস ছালাম, মেনহাজ উদ্দিন, সোরাবাড়ি গ্রামের আব্দুল গফুর, আনার উদ্দিন, চান আলী প্রমূখ জানান, এ বছর তিনবারে অদ্যবদি চারমাসের বন্যায় ফসলাদি সব পানিতে তলিয়ে গেছে। তার উপর সবখানেই কচুরিপানা (জলজ উদ্ভিদ) জন্ম নিয়ে তা দ্রুত নতুন নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। কচুরিপানার প্রতিবন্ধকতায় নৌকায় করে বাড়ি থেকে বেড় হওয়াই মুশকীল হয়ে পড়েছে। তারা আরও জানান, এখনই এসব কচুরিপানা অপসরণ করে নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা না গেলে বন্যা কবলিত এলাকার গ্রামগুলোর লোকজন অনেকটা গৃহবন্দি হয়ে পড়বেন। তাছাড়া পানি কমে যাওয়ার পর কচুরিপানা পরিস্কার করতে প্রতিবিঘা জমিতে তিন/সারে তিন হাজার টাকার শ্রমিক লাগবে।
ভুক্তভোগী মৎস্যজীবি আব্দুল মজিদ, ফরহাদ হোসেন, আহম্মাদ আলী, মজনু মিঞা, বাবর আলী, মিজানুর রহমান, আব্দুল কুদ্দুস, আলেপ সরকার প্রমূখ জানান, প্রথম বারের বন্যাতেই পানিতে পুকুরের পাড় ডুবে সব মাছ বেড়িয়ে যায়। এখন পুকুরগুলো কচুড়িপানায় ভরে গেছে। সর্বপরি, শিগগিরই কচুরিপানা (জলজ উদ্ভিদ) সৃষ্ট জনদুর্ভোগ এড়াতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কৃষক ও মৎস্যজীবি। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাউল করিম বলেন, কচুরিপানার আবির্ভাব স্থানীয় সমস্যা হলেও জনদুর্ভোগ এড়াতে চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে তা নিরসনের চেষ্টা করা হবে।