পর্যটকদের মূল আকর্ষণ চলনবিলের ‘মা জননী সেতু’

Spread the love
এম এম আলী আক্কাছ

নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া জেলার মাঝখানে চলনবিল। পানি থই থই, সারি সারি ঢেউ, বিশাল জলরাশি। দূর থেকে দেখলে মনে হবে বিশাল সমুদ্র। এশিয়ার বৃহত্তম এই বিল মিনি কক্সবাজার নামেও পরিচিত। বর্ষার ভরা যৌবনে চলনবিল পর্যটকদের বিনোদনের প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। প্রতিদিন অসংখ্য ভ্রমণ পিপাসু গুরুদাসপুরের খুবজীপুরের বিলসা পয়েন্টে ভিড় জমায়। নির্মল হাওয়ার নরম পরশ নিতে এখানে বারবার মন ছুটে আসে।

বিলসা নদীর ওপর ‘মা জননী সেতু’ রয়েছে। এ সেতুকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র। সেতু থেকে যতদূর চোখ যায় শুধু পানি আর পানি। বিলের পানিতে অসংখ্য নৌকাবহরে থাকা নরনারী-শিশু যে যেভাবে পারে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়। চলনবিল মূলত নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলাকে বেশি সমৃদ্ধ করেছে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে। কিন্তু এখানে সেভাবে গড়ে উঠেনি উন্নতমানের হোটেল, থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থাপনা। থাকাখাওয়া ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পর্যটক এমনকি বিদেশীরাও চলনবিল পরিদর্শনে আসবে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।

শুক্রবার ছুটির দিনে বিলসা পয়েন্টে পর্যটকদের তিলধারণের জায়গা থাকে না। গাড়ী পার্কিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় অনেকের বিড়ম্বনা পোহাতে হয়। তাছাড়া চাঁচকৈড় থেকে বিলসা সড়ক প্রশস্তকরণ এখন সময়ের দাবি। বিলের ভিতরে দ্বীপের মত কয়েকটি গ্রাম রয়েছে। সেগুলো দেখতে অপূর্ব লাগে। পর্যটকরা নানা রঙের নৌকায় চড়ে দিনভর ভেসে চলেন সমগ্র চলনবিলজুড়ে। বিলের পানিতে গা ভিজিয়ে সাঁতার কেটে গোসল সেরে মজা লুটে অনেকে।

চলনবিলের বিলসা গ্রামের কৃতি সন্তান মো. আব্দুল কুদ্দুস এমপি আগামী অর্থবছরে চলনবিল উন্নয়নে সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন গুরুদাসপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন। চলনবিলের অপরুপ সৌন্দর্য দেখতে শহর ও গ্রামগঞ্জ থেকে হাজার হাজার মানুষ আসে। সরকারি বেসরকারি কর্মকর্তাসহ ধনাঢ্য ব্যক্তিরা রাতে আসেন বিলসার স্বর্ণদ্বীপ কফি হাউজে। বিলের চারদিকে পানি মাঝখানে কফি হাউজ। সেখানে রাতের বেলা লাল-নীল আলোর খেলা। আড্ডা দিতে দিতে কফির স্বাদ নিতে নিতে সময় কখন ফুরিয়ে যায়, তা বুঝাই যায়না।

শুকনো মৌসুমে বিলের পানি নেমে গেলে বিস্তৃর্ণমাঠে পরিণত হয় সমগ্র চলনবিল। সারা বিলজুড়ে হয় রবিশস্যের আবাদ। সরিষার রঙে হলুদ হয়ে উঠে চলনবিল। সেখানে সরিষা ক্ষেতে শতশত মৌ খামারে উৎপাদিত হয় টনকে টন মধু। এ যেন আরেক নতুন দিগন্ত। রবি ফসল ঘরে তোলা শেষে সোনালী রঙের ধানক্ষেতে ভরে যায় মাঠ। বছরে পাঁচমাস বিলে পানি থাকে। পাওয়া যায় দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ। এছাড়া পাখপাখালি, ঝিনুক-শামুক, শাপলা-শালুক, পদ্মফুল ও বিভিন্ন জীবজন্তুসহ নানা জীববৈচিত্র্যের অপরুপ সৌন্দর্য্যে ভরা থাকে চলনবিল।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD