প্রেস বিজ্ঞপ্তি
সিরাজগঞ্জ -পাবনা এলাকার দুগ্ধ খামারের ইতিহাস বহু পুরোনো। বহুকাল ধরে হাজার হাজার খামার গড়ে উঠেছে এসব এলাকায়। আর দুধের সাথেই জীবিকার মেলবন্ধন গড়ে উঠে এ অঞ্চলের মানুষের। দুগ্ধ খামারের ব্যাপকতার রেশ ধরেই চল্লিশের দশকে এখানে গড়ে উঠে মিল্ক ভিটাসহ দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনকারী বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। যুগ যুগ ধরে এ অঞ্চল থেকেই যোগান হয়ে আসছিলো দেশের দুধের চাহিদার এক বড় অংশের।
কিন্তু প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস হঠাৎ যেন থামিয়ে দেয় খামারিদের জীবন। চলমান লকডাউনে থমকে যায় তাদের জীবনের চাকা। উৎপাদিত দুধ বিক্রি করতে পারছিলেন না তারা। পচনশীল পণ্য হওয়াতে সংরক্ষণ করারও সুযোগ না থাকায় নিরুপায় হয়ে মনের কষ্টে দুধ ফেলে দি”িছলেন তারা। র্যাব-১২ এর আওতাধীন এলাকার খামারিদের এমন দুঃসময়ে তাদের কষ্ট লাঘবে এগিয়ে আসেন র্যাব-১২ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মুহাম্মদ খায়রুল ইসলাম, পিএসসি। গত ২২ এপ্রিল, ২০২০ খ্রিস্টাব্দে নিত্যনৈমিত্তিক কাজের পাশাপাশি র্যাব-১২ প্রথমবারের মতো শুরু করেছিল দুধ কেনা কার্যক্রম। প্রথমে ১০,০০০(দশ হাজার) লিটার দুধ ন্যায্যমূল্যে কেনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ।
র্যাব-১২ এর এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, বিপিএম, পিপিএম এবং নির্দেশ দেন আরও বড় পরিসরে কাজটি করার। তার সে নির্দেশনার পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১,০০,০০০ (এক লক্ষ) লিটার দুধ কেনা হয়েছে এবং এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। এসব দুধ থেকে বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্য (ঘি, পনির ইত্যাদি) তৈরি করে তা সারা দেশের র্যাব সদস্যদের মাঝে খরচ মূল্যে বিতরণ করা হ”েছ। দুধের একটা বড় অংশ র্যাব কর্তৃক ক্রয় করাতে ফিরে এসেছে দুধের মূল্যের স্বাভাবিক গতি।
মূলত, তিন শ্রেণীর লোক র্যাব-১২ এর এ উদ্যোগে সরাসরি উপকারভোগী। প্রথমত, হতাশাগ্রস্ত খামারীরা দুধের ন্যায্যমূল্য পাওয়াতে কাটছে তাদের হতাশার ছাপ। তাদের জীবন ও জীবিকায় ফিরে আসছে স্বাভাবিক ছন্দ। দ্বিতীয়ত, দুগ্ধজাত পণ্য ঘি, পনির, মাখন প্রভৃতি উৎপাদনের সাথে জড়িতদেরও লাঘব হয়েছে বেকারত্ব। কেননা, র্যাব-১২ এর এ উদ্যোগে যুক্ত করা হয়েছে ১৫ জন কারিগরকে। তারা এসব দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহের একটা সুযোগ পা”েছ। তৃতীয়ত, পুষ্টিকর ও খাঁটি এসব খাদ্যদ্রব্যে (ঘি, পনির) পুষ্টির যোগান হ”েছ সারাদেশের র্যাব সদস্যদের। করোনার এ সময়টাতে যা অত্যন্ত প্রয়োজন সম্মুখ সারির এসব যোদ্ধাদের। “কীভাবে এমন ব্যতীক্রমী ভাবনা মাথায় এলো?”- এ প্রশ্নের জবাবে র্যাব-১২ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল খায়রুল বলেন, ” দেশের চলমান এ করোনা পরি¯ি’তিতে অর্থনীতি সচল রাখা অত্যন্ত প্রয়োজন। কৃষক, শ্রমিক, খামারি এরাই দেশের অর্থনীতির কান্ডারী। এ অঞ্চলের খামারিরা অর্থনীতিতে এক বিরাট অবদান রেখে যা”িছলো দীর্ঘদিন ধরে। উপরš‘, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন দেশের এ সংকটময় মুহূর্তে সাধ্যমত স্বল্প আয়ের মানুষের পাশে দাড়ানোর। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা সর্বাত্মকভাবে খামারিদের পাশে দাড়ানোর একটা অনুপ্রেরণা পাই এবং সে অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে উদ্যোগী হই।” র্যাব-১২ এর এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও আশস্ত করেন ব্যাটালিয়নটির অধিনায়ক।