তাড়াশে অযত্নঅবহেলায় শহীদদের গণকবর সংরক্ষণ ও উন্নয়নের দাবি

Spread the love

গোলাম মোস্তফা:

সিরাজগঞ্জের তাড়াশের আমবাড়িয়ায়  তিনজন মুক্তিযোদ্ধা ও দশজন মুক্তিকামী শহীদের গণকবর আজও অযতœ-অবহেলায় পড়ে আছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে তাদের স্মৃতি-চিহ্ন তুলে ধরতে গণকবরটি সংরক্ষণ এবং সেখানে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি মুক্তিযোদ্ধাসহ সব মানুষের দীর্ঘদিনের। আর যারা শহীদ হয়েছেন তাদের স্বীকৃতি চান শহীদ পরিবারগুলো।

 

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭১ সালে নভেম্বর মাসের ১৩ তারিখে পাক হানাদার বাহিনী উপজেলার চলনবিলস্থ মাগুড়াবিনোদ ইউনিয়নের আমবাড়িয়া গ্রামে প্রবেশ করে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞ চালায়। নির্বিচারে গুলি করে ও আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে গ্রামের তিনজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী দশজন যুবককে। ওই সময় আহত অবস্থায় বেঁচে যান দু’জন। তিন বছরের মতো হলো তারাও মারা গেছেন। তাদের সবাইকে সমাহিত করা হয়েছে আমবাড়িয়া গ্রামেরই একটি কবরস্থানে। যেখানে এক সাড়িতে সায়িত আছেন তারা।

 

আমবাড়িয়া গ্রামের শহীদ ইয়ার মোহাম্মদের ছেলে ও দোবিলা ইসলামপুর ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ লুৎফর রহমান জানান, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দান-অনুদানে গ্রামবাসী কোনোরকমভাবে গণকবরটিকে পাকা করে ঘিরে রেখেছেন। এখনও গণকবরটিতে যাতায়াতের জন্য রাস্তা, মাটি ভরাট, সুরক্ষা প্রাচীর নির্মাণ এবং বর্তমান ও ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে তাদের স্মৃতি-চিহ্ন তুলে ধরতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ করা খুবই জরুরি। সাথে তাদের আত্মত্যাগের সঠিক কাহিনি লিপিবদ্ধ করে তা বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা খুব দরকার।

 

এদিকে মুক্তিযোদ্ধা শামসুজ্জামান জানান, তার পরিবার থেকেও চারজন শহীদ হয়েছেন। মুক্তি যোদ্ধাদের নৌকার মাঝি ছিলেন যারা তারাও মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। অথচ আজও পর্যন্ত শহীদের স্বীকৃতি পেলনা শহীদ পরিবারগুলো।

 

সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গাজী আরশেদুল ইসলাম বলেন, পাক-হানাদারবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের কালের সাক্ষী গণকবর। এর যথাযথ সংরক্ষণ করা না হলে অদূর ভবিষ্যতে নিশ্চিন্ন হয়ে যেতে পারে স্মৃতি-চিহ্ন।

 

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিকামী শহীদের গণকবরটির রক্ষণাবেক্ষণ ও নাম ফলকসহ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষে ইতোমধ্যে এডিপি’র  আওতায় একটি প্রকল্প হাতে নেওয়ার  উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

 

 

লেখক : তরুণ সাংবাদিক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক,তাড়াশ প্রেসক্লাব।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD