চলনবিল বার্তা ডেস্ক : ঢাকায় এসেছেন। গতকাল সকালে যানজটের প্রস্তুতি নিয়ে বের হয়েছিলেন। সেটা পোহাতে হয়নি। ভোর বেলাতেই তাই স্টেডিয়ামে হাজির হয়ে গেছেন নতুন প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো। খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিচিতি পর্ব শেষে প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে মুখোমুখি হয়েছিলেন এই দক্ষিণ আফ্রিকান কোচ। সেখানে বললেন নিজের কোচিং দর্শন ও বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রহের কারণ—
আপনার বিসিবিকে দেওয়া প্রেজেন্টেশনের সবাই প্রশংসা করছে। কি ছিল সেই প্রেজেন্টেশনে?
এটা খুব মজার ব্যাপার। সবাই এই প্রেজেন্টেশনটা নিয়ে জানতে চাইছে। দেখুন, আমি বিভিন্ন স্তরের দলের সঙ্গে কাজ করেছি—অনূর্ধ্ব-১৫, অনূর্ধ্ব-১৭, ঘরোয়া ক্রিকেট, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। ফলে আমি মনে করি, আমি ক্রিকেটার তৈরির সিস্টেমটা সম্পর্কে ভালো জানি। সিস্টেমটা হলো জাতীয় দলের জন্য তৈরি। কারণ, ওটাই আপনার সেরা দল। আমি এজন্য জাতীয় দলের ঠিক নিচে এই যেসব দল, এগুলোর খেলোয়াড়দের নিয়েও কাজ করতে চাই।
বাংলাদেশে কেনো এলেন? কোনো বিশেষ আগ্রহ ছিল?
এটা বাংলাদেশে আমার সপ্তমবারের মতো আসা। ২০০৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে প্রথম এসেছিলাম। আমাকে এখানকার যে জিনিসটা ধাক্কা দিয়েছে, সেটা হলো মানুষের আবেগ। আমার সামনে (সংবাদ সম্মেলনে) এখন কত মানুষ বসা! দক্ষিণ আফ্রিকায় আমরা সবচেয়ে বড়ো ম্যাচের আগেও হয়তো আট বা নয় জন মানুষ পাই। আমি আমার জীবনে কখনো এত সাংবাদিক এক জায়গায় দেখিনি। কাল বিমানবন্দরে মনে হয় ১০০ ক্যামেরা ছিল। এটাই বাংলাদেশের ক্রিকেটের আমাকে টানার মূল ব্যাপার। এখানে যে পরিমাণের সমর্থন মানুষের, সেটাই আমাকে টেনেছে। মানুষের আবেগ দেখেই বাংলাদেশে এসেছি।
শ্রীলঙ্কাতে বাংলাদেশ হোয়াইট ওয়াশ হওয়ার পর এই দলটাকে উদ্বুদ্ধ করা কত কঠিন হবে?
বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কাতে খারাপ করেছে বলেই তারা খারাপ দল হয়ে গেছে, তা নয়। আমি শ্রীলঙ্কা সিরিজ নিয়ে খুব বেশি কথায় আগ্রহীও নাই। বিশ্বকাপ পারফরমেন্স বিচারে নিলে বাংলাদেশ দারুণ ক্রিকেট খেলেছে। দেখুন, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটা রান আউট মিস খেলাটা কেড়ে নিলো। আমি মনে করি, বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বড়ো শক্তি হয়ে ওঠার খুব কাছে আছে।
বিশ্বকাপে কি বাংলাদেশ খুব ভালো করতে পেরেছে?
তারা অষ্টম হয়েছে। আমি মনে করি, তারা এর চেয়ে অনেক ভালো ক্রিকেট খেলেছি। আমি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অনেকদিন ধরে দেখছি। এটা বলতে পারি, ফলাফল সবসময় দলের অবস্থা বোঝাতে পারে না। আমি মনে করি, দল বিশ্বকাপে যথেষ্ট ভালো করেছে।
বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা আপনার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারবে?
আমি এখানে সবকিছু বদলে ফেলতে আসিনি। ক্রিকেট উপমহাদেশে চিরকালই আছে। আমি আশা করতে পারি না যে, বাংলাদেশ আমার সঙ্গে মানিয়ে নেবে। আমি মনে করি, আমাদের বাংলাদেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। আমাদের এখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।
বাংলাদেশে কোচদের ওপর জয়ের জন্য প্রতি ম্যাচে চাপ থাকবে। এই চাপ কিভাবে সামলাবেন?
আমি পাঁচ বছর প্রধান কোচ ছিলাম। লোকেরা চায় তার দল অপরাজেয় হয়ে উঠুক। আমি এই প্রত্যাশা ও চাপ সম্পর্কে সচেতন আছি। কোচ হিসেবে আমরা সবসময়ই এই ব্যাপারগুলো উপভোগ করি। যদি আগে থেকে জেনে যাই যে, সব ম্যাচ জিতব এবং চাপ থাকবে না; তাহলে তো কাজটা খুব একঘেয়ে হয়ে যাবে!
টেস্টে বাংলাদেশের উন্নতি নিয়ে কী করতে চান?
বাংলাদেশ প্রায় ছয় মাস টেস্ট খেলে না। এটা দীর্ঘ একটা সময়। আপনি যখন টেস্ট ম্যাচ খেলবেন না, তখন উন্নতি করাটা খুব কঠিন। ফলে এই নতুন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আমাদের বেশি খেলার সুযোগ দেবে বলে আশা করছি। তাতে উন্নতিও বেশি হবে।