ডেঙ্গু এডিশ মশা বাহিত এবং জীবানুঘটিত একটি রোগ। সুতরাং মশার আক্রমন থেকে নিরাপদে থাকা বিষয়ে সতর্ক এবং সচেতন থাকাই ডেঙ্গু থেকে বেঁচে থাকার উপায়। এ কথা ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে পরিবার এবং সমাজ তথা রাষ্ট্র অবধি সমানভাবে প্রযোজ্য। আগে নিজের শয়ন ঘর ও সেই সাথে পরিবারের গোটা অঙ্গন এবং প্রতিবেশীদের সমগ্র পরিবেশ যথাযথ পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন, ময়লা-আবর্জনামুক্ত আর জলাবদ্ধ জায়গায় মশার ডিম পারতে না দিয়ে ওষুধ ছিটিয়ে মশা মেরে ফেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আসলে ডেঙ্গুতে আতংকিত না হয়ে মশা নিয়ন্ত্রণ ও এ রোগ প্রতিরোধে সম্যক পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যাবাশ্যক। কারণ এর প্রতিষেধকের চেয়ে প্রতিরোধ অপরিহার্য। মনে রাখতে হবে, ডেঙ্গু রোগ শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়, এটা গোটা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার উপমহাদেশীয় বা আঞ্চলিক সমস্যা রুপে আবির্ভূত হয়েছে। ভারত, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ বিশে^র অনেকগুলো দেশে ডেঙ্গু মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। কোন কোন দেশ রেড এলার্ট পর্যন্ত জারি করেছে এ কারণে। অর্থাৎ সংক্রামক ব্যাধি হিসেবে ডেঙ্গু ক্রমান্বয়ে বিশ^ব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থা। তারা সব দেশেই ডেঙ্গু মোকাবেলায় সমন্বিত ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। মোট কথা জনসচেতনতাই পারে এই সংক্রামক রোগ থেকে মুক্ত রাখতে।
আমাদের তাড়াশ উপজেলায় অদ্যাবধি ডেঙ্গু জ¦রের প্রাদুর্ভাব হয়নি মর্মে প্রশাসন বলছে। তবে এলাকার লোকজনের মধ্যে জ¦রের প্রকোপ চলছে অনেক দিন থেকেই। এটা মৌসুমী সর্দি-কাশি এবং ভাইরাস জনিত বলে শনাক্ত হয়েছে। তবে প্রশ্ন উঠতে পারে, এর মধ্যে কোথাও কারো ডেঙ্গু আছে কি না তা নির্ণয় করবে কে? কেননা উপজেলা সদরের একমাত্র হাসপাতালে তো ডেঙ্গু পরীক্ষার কীট বা যন্ত্রপাতি ও বিশেষজ্ঞ নেই। সেখানে ডেঙ্গু রোগী ভর্তি করারও সুযোগ নেই। ওদিকে সিরাজগঞ্জ জেলা সদরে ডেঙ্গুর অস্তিত্ব ইতোমধ্যেই ধরা পড়েছে। তাই বিশেষত আসন্ন্ ঈদ উপলক্ষে ঢাকা ও জেলা সদর থেকে তাড়াশ অঞ্চলে মানুষের গমনাগমন বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার প্রেক্ষিতে যে কোন মুহুর্তে ডেঙ্গুর আশঙ্কা উরিয়ে দেয়া যায় না। সবশেষে বলার, তাড়াশ উপজেলা পরিষদ ও প্রশাসন, পৌর কর্তৃপক্ষ, ইউনিয়ন পরিষদসহ সকল শিক্ষা ,সামাজিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সাথে দল-মত নির্বিশেষে সব রাজনৈতিক মহলের সম্মিলিত উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় আমরা ডেঙ্গুকে “নো” বলতে পারি। বাংলাদেশের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে আর প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে লড়ে বার বার বিজয়ী হয়েছে। সরকার সবাইকে সাথে নিয়ে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ডেঙ্গুকে থামিয়ে দিতে, এর বিস্তার রোধ করতে । তাই ডেঙ্গুর নিকট পরাজিত হওয়ার কোন প্রশ্নই ওঠে না। এ লড়াইয়ে আমরা বিজয়ী হবো ইনশাল্লাহ্ । আসুন, সবাই মিলে ডেঙ্গুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করি।