সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তা পত্রিকার ২য় বর্ষ পূর্তি আজ। ১০ জুলাই থেকে শুরু হবে ৩য় বছরের পথ চলা। উল্লেখ, সরকারী ডিক্লারেশন পাওয়ার পর ২০১৭ সালের এই দিনে ট্যাবলয়েড সাপ্তাহিকের যাত্রা শুরু হয়। সেদিক থেকে এটা মাতৃক্রোড়ে দুগ্ধপোষ্য শিশুর মতো। কারণ কোন কোন শিশু ৩ বছরে পা রেখেও মায়ের বুকের দুধ টানতেই থাকে অমোঘ আকর্ষণে। সে দৃষ্টিকোনে এ পত্রিকা এখনো শৈশবের হাটি হাটি পা পা অবস্থায় চলছে। প্রকাশনা দিগন্তের শিক্ষা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করছে। নিরেট পল্লী এলাকা থেকে এ ধরণের প্রকাশনা নিয়মিত করা বেশ কঠিন তা এ লাইনের যারা করিৎকর্মা তারা ভাল করেই জানেন। কয়েক দশক আগেও দেখেছি, বগুড়ার জনৈক স্বনামধন্য সম্পাদক প্রেসে তার সাপ্তাহিক পত্রিকার ছাপার বিল পরিশোধের জন্য স্ত্রীর গহনা বিক্রি করেছেন বাধ্য হয়ে। তবে আর্থ-সামাজিক ও প্রযুক্তির উন্নতির ফলে সেই অবস্থার অনেক পরিবর্তন ঘটেছে। পত্রিকার মূল উদ্দেশ্য জনসেবার সাথে যুক্ত হয়েছে শিল্প, কর্পোরেট ব্যবসা, বাণিজ্য এমনকি রাজনীতি পর্যন্ত। তবে সেটা রাজধানীসহ শহরাঞ্চলেই বেশী। গ্রাম থেকে বিশেষ করে উপজেলা পর্যায় হতে সংবাদপত্র ধাঁচের কাগজ বের করা আজো নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মত। পত্রপত্রিকার মূল সহায়ক ব্যবসিক বিজ্ঞাপনের যোগান গ্রামীন উপজেলা শহরে নেই বললেই চলে। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ব্যক্তির শুভেচ্ছা বার্তা আর নিজেদের পকেটের মালপানি ঢেলে পত্রিকা ছাপাতে হয়।
তাছাড়া বর্তমানের সমাজ ব্যবস্থায় মিথ্যা কথনের দৌরাত্ম্য অধিক, সত্য কথনের চর্চা কম। অন্যায়, অবিচার, ব্যাভিচার ও দুর্নীতি বেড়ে যাওয়ায় সুশাসনের অভাব সর্বত্র। বৈশ্বিক ও দেশীয় নানা দৃশ্যপট ও প্রেক্ষাপটে অসুস্থ অনুশীলনের ফলে গণমাধ্যম এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। দেশে-বিদেশে সাংবাদিকদের নানা রকম হয়রানি ও নিপীড়নের শিকার হওয়াটা আজ প্রাত্যাহিক অনুসঙ্গ। অন্যদিকে প্রযুক্তির অপব্যবহারের দায়ভার সাংবাদিকদের উপর চাপিয়ে সে অজুহাতে বিভিন্ন কালাকানুন দিয়ে গণমাধ্যমের টুটি চেপে ধরা হচ্ছে। এতে মোটা দাগে মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্র ব্যাহত হয়ে চলেছে যার প্রতিফলন রাষ্ট্র ও সমাজের সব ক্ষেত্রেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। এই পরিস্থিতির মাঝে আমাদের লেখালেখি এবং প্রকাশনাও সময়ে সময়ে প্রতিকুলতার সন্মুখীন হয়ে থাকে তা বলাই বাহুল্য। তবু মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া যে নানা রকম চড়াইউৎড়াই পেরিয়ে আমাদের আদর্শিক প্রয়াস এখনো অব্যাহত আছে এবং আপনাদের সবার দোয়া ও সহযোগীতায় আশা করি এ মিশন চলতে থাকবে আগামীতেও। সবশেষে ২য় বর্ষ পূর্ত্রি এই শুভ লগ্নে আমাদের লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট, বিজ্ঞাপনদাতা, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য ও সকল শুভান্যুধায়ীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। সবারই কল্যাণ ও শান্তি কামনা করি।