পূণরায় জটিল ভোটের কুটিল রাজনীতির কবলে পড়তে যাচ্ছে তাড়াশ পাবলিক লাইব্রেরী। গত এক দশকেরও অধিক কাল তিন তিনটি কার্যকরী কমিটির চরম ব্যর্থতার ফলে এটা দীর্ঘদিন যাবৎ মুখ থুবরে পড়ে আছে। পদাধিকার বলে যার শীর্ষ নেতৃত্বে থাকেন স্থানীয় ইউএনও। একটি দলবাজ দুষ্ট চক্রের খপ্পর হতে বের হতে না পারাই এই লাইব্রেরীর দৈনদশার মূল কারণ। এই গ্লানিকর পরিবেশের মধ্যে সব বিকল্প প্রস্তাব পাশ কাটিয়ে আগামী ১৫ জুলাই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এ ধরনের একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানের রাজনৈতিক মতলবের নির্বাচন যার নীল নকশা ইতোমধ্যেই আঁকা হয়ে গেছে বলে সংশ্লিষ্ট সচেতন সদস্যগণ মনে করেন।
উল্লেখ্য, বিগত কমিটির মেয়াদ গত ডিসেম্বর ২০১৮ মাসে শেষ হলেও সেই অপনেতৃত্বের ছায়াপাত এখনো প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে অতীত মূল্যায়নের ভিত্তিতে সম্প্রতি যৌক্তিক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে গঠিত হয় ৭ সদস্যের সার্চ কমিটি যার প্রধান কাজ ছিল একটি অধিকাংশ বা সর্বসম্মত যোগ্য প্যানেল কমিটি মনোনয়নের উদ্দেশ্যে প্রস্তাব করা। কিন্তু গত মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত সভায় পরিলক্ষিত হয় যে, এই কমিটি প্রস্তাবিত নামের সদস্যদের সাথে আদৌ কোনো যোগাযোগ না করে বা মতামত না নিয়েই কেবল মাত্র সাধারণ সম্পাদক পদে কয়েকজনের নাম প্রস্তাব করে প্রতিবেদন দেয় যা প্রায় সম্পূর্ণ অসত্য আর মনগড়া। তারা সার্চ কমিটির একাধিক বৈঠকের কথা বললেও কমিটির কতিপয় সদস্য তা জানেন না বলে সভায় প্রকাশ্যে অবহিত করেন। এছাড়া সদস্য চাঁদা তোলাকে তারা শুধু মূখ্য ভেবে নিয়েছেন, সেটা এই কমিটির আসল লক্ষ্য ছিল না। সভায় অবশেষে টোকেনের মাধ্যমে সিলেকশন/ইলেকশনের পক্ষে মতামত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় অধিকাংশ সদস্য মনোনয়নের পরিবর্তে নির্বাচনে আগ্রহী বলে জানায়। অবশ্য এর কিছু পূর্বে সার্চ কমিটি তাদের পর্যবেক্ষণে অধিকাংশের অভিমত সিলেকশনের পক্ষে জানিয়েছিল মর্মে রিপোর্টে উল্লেখ করে। এভাবেই আবারো সংকীর্ণ ও ধান্দাবাজী নির্বাচনী রাজনীতির খপ্পড়ে পড়তে যাচ্ছে তাড়াশ উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরী। যদিও এই প্রক্রিয়ায় কাংখিত ফল পাওয়ার ব্যাপারে অনেকেই সন্দিহান। এর পূর্বে বিগত কমিটির নেতৃত্ব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিজয় লাভ করে ফেসবুকে উপহাস ছড়িয়ে ছিলেন বিজ্ঞ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। লাইব্রেরীটাকে পূঁজি করে একটি বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহল দীর্ঘদিন নিজস্ব ফায়দা লোটার হেতু এটা উঠে দাঁড়াতে পারছে না।
অপরদিকে তারাও এর ক্ষমতান স্বাদ ছাড়তে চাচ্ছে বলে কেউ বিশ্বাস করে না । একই কারণে স্থানীয় নিরপেক্ষ সাহিত্য-সংস্কৃতিসেবী নিবেদিত এমনকি প্রতিষ্ঠাতা সদস্যগণ পর্যন্ত কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছে। তাদের মধ্যে মতানৈক্য এবং সমন্বয়হীনতা জীইয়ে রেখেছে লবিং,গ্রুপিং ও ব্লকিং করার অপকৌশলে। পরিণতিতে অবক্ষয়ের চিহ্ন এখানে রন্ধ্রে রন্ধ্রে । এখন দেখার বিষয়, বর্তমান প্রশাসন সদসদের পাল্স বুঝে এ ব্যাপারে কতটুকু ন্যায় নিরপেক্ষ ও ভবিষ্যত গঠনমূলক ভূমিকা নিতে পারে যা লাইব্রেরীর পূণরুজ্জীবনে সহায়ক হবে সেদিকে তাকিয়ে থাকবে সবাই। আমরা চাই, অতীতের মতো তারাও যেন অবমূল্যায়িত আর নিন্দিত না হন। সর্বোপরি অন্যভাবে ব্যবহ^ত না হয়ে লাইব্রেরী হিসেবেই এটাকে প্রতিষ্ঠিত দেখতে চায় এলাকাবাসী।