মুহাম্মদ জাকির হোসেন, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি : চলবিলের বিস্তীর্ণ এলাকায় কলা বাগানে মড়ক দেখা দেওয়ায় কোটি কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন কলা চাষীগণ। প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণে জানা যায়, চলনবিলের গুরুদাসপুর-সিংড়া- বড়াইগ্রাম ও নাটোর সদর উপজেলায় বিভিন্ন গ্রামের কলা বাগান ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে সয়লাব হয়ে যাচ্ছে। ভাইরাস আক্রান্ত গাছের কান্ড কেটে যাওয়া ,হলুদ রং ধারণ করে মরে যাওয়া, কলায় কালো রংয়ের দাগ পড়া,কলা ফেটে যাওয়া ও অকাল পক্কতা ইত্যাকার লক্ষণ পরিলক্ষিত হয়। গুরুদাসপুর উপজেলার নাজিরপুর, চাপিলা এবং বড়াইগ্রাম উপজেলার জোয়ারী, বড়াইগ্রাম , সিংড়া উপজেলার চামারী ও নাটোর সদর উপজেলার হালসা ইউনিয়নের চাষীগণ বেশ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
নজিরপুর ইউনিয়নের জনৈক নাসের উদ্দিন জানান, প্রতিএকর পুকুর পাড়ে যে কলার আবাদ করা যায় তাতে বাৎসরিক ৮০-৯০ হাজার টাকা আয় হয়। যা পুকুর লীজের টাকার সিংহ ভাগ। বিগত তিন-চার বছর যাবৎ অত্রাঞ্চলে ভাইরাস জনিত কারণে কলাবাগন সয়লাব হয়ে গেছে। বিশেষত: পুকুর পাড় আবাদশূন্য হয়ে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এত করে একদিকে যেমন হাজার হাজার একর জমি পতিত রয়েছে এবং উক্ত জমিতে বিকল্প ফসল ফলানোর উপায় উদ্ভাবন করতে না পারলে এ সমস্ত জমি স্থায়ীভাবে অনুৎপাদিত কৃষি জমিতে পরিণত হবে। অদ্যাবধি যে ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা প্রায় কয়েক কোটি টাকা হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। শুধু গুরুদাসপুর উপজেলাতেই ১৭৪৭ হেক্টও জমিতে পুকুর রয়েছে। উক্ত পুকুরের পাড়গুলিতে নতুন করে কলাগাছ রোপণ করে তা টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এব্যাপারে কীটনাশক কোম্পানীর জনৈক বিক্রয় প্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আক্রান্ত বাগানে জিওলাইট ব্যবহারে অনেক কৃষক উপকৃত হয়েছেন। ভূক্তভোগী কৃষকগণ জানিয়েছেন, তারা স্থানীয় কীটনাশক ডিলারের শরণাপন্ন হয়েও সন্তোষজনক কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না।স্থানীয় কীটনাশক ডিলার এমরান আলী সরকার বলেন, চাষীদের ব্যপকভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা ,স্থানীয় কৃষি অফিসের কর্মকর্তা ব্যক্তিদের তৎপর হওয়া, কীটনাশক কোম্পানীগুলোকে নতুন নতুন সমস্যা সমাধানের উপায় উদ্ভাবন করা, সর্বোপরি সরকারী দায়িত্বশীল ব্যক্তিগণের এগিয়ে আসা জরুরী। কৃষকদের এ অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে না পারলে কৃষকগণ, পুকুর মালিকগণ তথা জাতীয় আয় বহুলাংশে কমে যাবে বলে অভিজ্ঞ মহল অভিমত ব্যক্ত করেন।