স্টাফ রিপোর্টার ঃ চরমপন্থী অধ্যূষিত চলনবিলের উত্তর তাড়াশে আবারও নিষিদ্ধ ঘোষিত কথিত পূর্ববাংলা সর্বহারা পার্টির নারী-পুরুষ সদস্যদের আনাগোণা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ নিয়ে জনমনে আতংক বিরাজ করছে। থানা পুলিশ বলছেন, সর্বহারা পার্টির নামে সাধারণ মানুষের মাঝে আতংক ছড়াচ্ছে দূর্বৃত্তরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশীগ্রাম ইউনিয়নের গুড়পিপুল, ক্ষীরসিন, দোগাড়িয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের বিভিন্ন বাড়িতে রাতের আধারে সর্বহারা পার্টির লোকজন হানা দিচ্ছে। গ্রামের লোকজনকে মারধর করে গণহারে চাঁদা দাবি করছে। এভাবে এলাকার সাধারণ জনগণের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে দিচ্ছে।গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে দোগাড়িয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের (৫৪) বাড়িতে পুর্ববাংলা সর্বহারা পার্টির সশস্ত্র ১৫-২০ জন সদস্য হানা দিয়ে তার নিকট মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবি করে। সেখানে চাঁদা না পেয়ে নুরুল ইসলাম ও তার ছেলে মাসুদ রানাকে ব্যাপক শারীরিক নির্যাতন করে। ওই রাতেই থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তবে পুলিশকে খবর দেওয়ার অপরাধে পুর্ববাংলা সর্বহারা পার্টির সদস্যরা পরের দিন ফের ওই বাড়িতে গিয়ে হ্যান্ড মাইকে তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। সেই থেকে নুরুল ইসলাম পরিবার পরিজন নিয়ে রাতে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে থাকছেন।
কোরবানির ঈদের পরের দিন একটি রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের ইউনিয়ন সভাপতি ময়নুল ইসলামকে রাতের আধারে সর্বহারা পার্টির একদল সদস্য চাঁদার দাবিতে বেধরক মারপিট করে। একই সঙ্গে মারপিট করে গুড়পিপুল গ্রামের ফজলুর রহমান ও বাবুল আক্তার নামের দুই কৃষককে। এসময় গুড়পিপুল গ্রামের নিমগাছী সমাজ ভিত্তিক মৎস্য চাষ প্রকল্পের স্থানীয় নেতা সাখোয়াত হোসেনের কাছ থেকে চাঁদা না পেয়ে পুকুরের ডিসিআর কেড়ে নেয়। এসময় হাতে লেখা পুর্ববাংলা পার্টির আদর্শ সম্বলিত পোস্টার রাতের অন্ধকারে গুড়পিপুল বাজারের বিভিন্ন স্থানে সাটিয়ে দেওয়া হয় গত মাসে সর্বহারা পার্টির নামে গুড়পিপুল বাজারের মেশিনারীজ ব্যবসায়ী চৌড়া গ্রামের লাবু হোসেনকে রাত ৮ টার দিকে বাজারের মাঠে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সাথে ডেকে গণ আদালত বসিয়ে লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক এলাকাবাসী জানান, দেশীগ্রাম ইউনিয়নের প্রত্যন্ত বিভিন্ন গ্রামে সর্বহারা পার্টির আনাগোণা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে আতংক বিরাজ করছে। পার্টির সদস্যরা তাদেরকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। এদের কেইউ ভয়ে মুখ খুলছেনা। দেশীগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস সর্বহারা পার্টির আনাগোণার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দোগাড়িয়া ও গুড়পিপুল গ্রামের ঘটনা সম্পর্কে তিনি অবগত আছেন। থানার ওসির সঙ্গেও কথা বলেছেন।এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দোগাড়িয়া গ্রামের নুরুর বাড়ির বিষয়টি তিনি অবগত। তবে হ্যান্ড মাইকে হুমকি দেওয়ার বিষয়টি তার জানা নেই। এসকল অপকর্ম যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।