মো. মনিরুজ্জামান ফারুক ও মাসুদ হাসান, ভাঙ্গুড়া থেকে: সংসারে আসছে নতুন অতিথি । আনন্দে সবাই যেন আত্মহারা। অপেক্ষা কেবল নতুন অতিথিকে বরণ করে নেওয়ার। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এ ধরণিতে আগমন হয় নতুন অতিথির । কিন্তু মাথার ওপর দেখতে আরেকটি মাথার মতো একটি টিউমার নিয়ে ভূমিষ্ঠ হয় সে! নতুন অতিথির আগমনে আনন্দের বদলে মুহুর্তেই পরিবারটিতে নেমে আসে বিষাদের কালো ছায়া! প্রায় ৩ মাস আগে পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার চরভাঙ্গুড়া খাঁ পাড়া গ্রামের এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম হয় ফুটফুটে একটি শিশুর। নাম তার জিহাদ। পিতা সুজন আলী অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করে সংসার চালায় । মাতা মেঘলা খাতুন গৃহিনী। অভাবের সংসারে রোগাক্রান্ত সন্তানের চিকিৎসা করাতে শিশু জিহাদকে নেওয়া হয় স্থানীয় চিকিৎসকের নিকট। চিকিৎসক জানান শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসা দিতে ঢাকায় নিয়ে যেতে হবে। কিন্তু সে সাধ্য নেই দরিদ্র পরিবারের। এদিকে বয়সের সাথে পাল্লা দিয়ে মাথার টিউমারটি যেন ক্রমেই বেড়ে চলছে। সন্তানকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে না পারার নিদারুণ কষ্ট প্রতিটি মূহুর্ত তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে দরিদ্র মাতা-পিতাকে। ভাঙ্গুড়া হেলথ কেয়ার লিমিটেডের আবাসিক মেডিকেল অফিসার শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মাসুদ করিম শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছেন । তিনি বলেন, শিশুটি মেনিনগোসিল রোগে ভুগছে। তার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।’ কিন্তু দরিদ্র পিতার একার পক্ষে সন্তানের চিকিৎসার ব্যয়ভার বহন করা সম্ভব নয় । জিহাদের পিতা সুজন আলী বলেন, ‘ছেলের চিকিৎসায় অনেক টাকার প্রয়োজন। ‘এখন আমি কি করব বুঝতে পারছি না। যতই দিন যাচ্ছে টিউমারটি ততই বড় হচ্ছে ।’ অর্থাভাবে সন্তানের চিকিৎসা করাতে না পেরে পরিবারটিতে চরম হতাশা বিরাজ করছে । দারিদ্রতার অভিশাপে ছোট্ট শিশু জিহাদের ভবিষ্যত আজ সংকটাপন্ন। মানুষ মানুষের জন্য। জীবন জীবনের জন্য। একটু সহাভূতি নিয়ে সমাজের সামর্থ্যবান ও বিত্তশালীরা পাশে এসে দাঁড়ালে হয়তো জিহাদ বেড়ে ওঠতে পারে সমাজের অন্য সকল সাধারণ শিশুদের মতো।