সাপ্তাতিক চলনবিল বার্তা ২৭ সংখ্যা ২০২৩

Spread the love

“শুধু দীর্ঘ জীবনের কোন বিশেষত্ব নেই,
যদি না জীবনে চমৎকারিত্ব থাকে”। – রুশ একাঙ্কিকা

বাজেট অধিবেশন ৩১ মে 

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ একাদশ জাতীয় সংসদের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশন আগামী ৩১ মে শুরু হচ্ছে। ওইদিন বিকেল ৫টায় চলতি সংসদের ২৩তম এ অধিবেশন শুরু হবে। গত রবিবার (১৪ মে) রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের সংবিধানের ৭২ অনুচ্ছেদের (১) দফায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ অধিবেশন আহ্বান করেছেন। এ অধিবেশনে আগামী ১ জুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পেশ হতে পারে।জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের গণসংযোগ বিভাগের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) তারিক মাহমুদ সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, জুন মাসের শেষ দিকে কোরবানির ঈদ থাকায় এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা আগেভাগে বাজেট পাশ হবে। এ কারণে এ বছরের বাজেটও কিছুটা আগেভাগে পেশ করা হচ্ছে।আগামী ২৫ জুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট পাস হতে পারে বলে সংসদ সচিবালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে। সংসদ অধিবেশন শুরুর দিন বিকেল ৪টায় অনুষ্ঠেয় সংসদের কার্যউপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এসব বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।সূত্রঃ জনকণ্ঠ।

আন্দোলনের নতুন ‘ঢেউ’ তুলতে চায় বিএনপি 

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আদায় এবং সরকার পতনের লক্ষ্য নিয়ে চলমান আন্দোলন আরও জোরদার করতে চাইছে বিএনপি। নতুন করে তৃণমূল থেকে আবার আন্দোলনের নতুন ঢেউ তুলতে চাইছেন দলটির নেতারা। এজন্য তৃণমূল থেকে নতুন কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। এক দফার আন্দোলনে যাওয়ার আগে তৃণমূলের সাংগঠনিক শক্তি যাচাই করতেই এই কর্মসূচি হাতে নেয়ার কথা জানিয়েছেন নেতারা। মাঠ পর্যায়ে শক্তি বাড়িয়ে চলমান আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করতে ইতিমধ্যে ৮২টি সাংগঠনিক জেলায় নতুন কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। আগামী শুক্রবার থেকে চারধাপে জেলা, মহানগর ও রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ পালন করবেন দলটির নেতাকর্মীরা। কেন্দ্রীয় নেতারা জানান, গত বছরের বিভাগীয় সমাবেশের মতো আবারো সরকারবিরোধী আন্দোলনকে জোরদার করতে চান তারা। এজন্য জেলায় জেলায় কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। জেলা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে ঢাকাসহ সারা দেশে কঠোর আন্দোলন ঘোষণা করতে চায় বিএনপি। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য বলেন, বিএনপি ধারাবাহিকভাবে এক দফার আন্দোলনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। শিগগিরই কঠোর কর্মসূচির দিকে যাবে। তার আগে আরেকবার জেলাপর্যায় থেকে সমাবেশের মধ্য দিয়ে নতুনভাবে আন্দোলন শুরু হচ্ছে।
ক্ষমতাসীন সরকার আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে। সরকার দাবি না মানলে ঢাকা ও জেলা অবরোধের কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে। বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল গণমাধ্যমকে বলেন, তৃণমূল থেকে আন্দোলনের ঢেউ তোলা এটা আমাদের রাজনৈতিক কৌশল। সরকার শুধু চেয়ারের দিকেই তাকিয়ে আছে। সেখান থেকে দৃষ্টি সরানোর জন্য সরকারকে একটু ব্যতিব্যস্ত রাখতে চাইছি। কারণ ইতিমধ্যে দেখা গেছে ঈদের পরে আমাদের প্রায় হাজার সংখ্যক নেতাকর্মীর জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। উচ্চ আদালতের রায় বাতিল করে নিন্ম আদালত কারাগারে পাঠিয়েছে। এদের বেশির ভাগ নেতাই তৃণমূলের। এখন ঢাকায় ও সকল সাংগঠনিক জেলায় কর্মসূচির মধ্যে দিয়েই আন্দোলন জোরদার করা হবে। আমরা আর কেউ ঘরে বসে থাকবো না। সূত্রঃ মানবজমিন।

আওয়ামী লীগ মাঠে থাকবে পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে 
ডেস্ক রিপোর্ট ঃ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকান্ডের বিষয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। পাশাপাশি বিএনপিসহ সমমনাদের রাজনৈতিক কর্মসূচির বিপরীতে আওয়ামী লীগ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে বলে জানিয়েছেন নেতারা। গতকাল দলীয় সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠকে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে সম্পাদকন্ডলীর সদস্যরা বলেন, তৃণমূল কর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে তাদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতে হবে। আওয়ামী লীগের ডাকে প্রতিটি কর্মসূচি সফল করতে হবে। এজন্য নিজেদের মধ্যে কোনো ধরনের বিভেদ রাখা চলবে না। সমসাময়িক রাজনৈতিক আলোচনার পাশাপাশি বিরোধী দলগুলোর বিভিন্ন কর্মসূচি ও দেশের ৫ সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। এরমধ্যে বেশির ভাগ সময় আলোচনার বিষয়বস্তু হিসেবে থাকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলম ইস্যু। বৈঠকের শুরুতে সমসাময়িক রাজনীতির প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হয়।
সেখানে বলা হয়, রাজপথে নিয়মিত কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে। কর্মসূচি আরও বাড়াতে হবে। নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে বিরোধী শক্তিরা মাঠ দখলের চেষ্টা করছে। তারা একের পর এক কর্মসূচি ঘোষণা করছে। তাদের কর্মসূচিগুলোর ওপর নজর রাখতে হবে। বিশেষ করে রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে যেন কোনো ধরনের অরাজকতা তৈরি করতে না পারে সে বিষয়টি দেখতে হবে। মানুষের জানমালের কোনো ক্ষতি যেন তারা করতে না পারে সেজন্য সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। বৈঠকে জানানো হয়, এ বিষয়ে দলীয় সভাপতির সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। দলীয় নেতাকর্মীদের সেভাবেই কাজ করা উচিত। প্রতিটি কর্মসূচিতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সূত্রঃ মানবজমিন।

‘মোকা’ চলে গেছে, এখন মেরামতে নজর দিতে হবে -মাহবুবা নাসরীন

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ ঘূর্ণিঝড় মোকা অবশেষে গত রোববার বিকেলে কক্সবাজারের উপকূল অতিক্রম করে মিয়ানমারের দিকে চলে গেছে। কয়েক দিন এ দুর্যোগ নিয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি আমরা দেখেছি। যেভাবে ভাবছিলাম, এটি ‘সুপার সাইক্লোন’ হবে; সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়। আমি মনে করি, ক্ষয়ক্ষতি কমানোর জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতিই জরুরি। এ ঘূর্ণিঝড়ে আমাদের উপকূলীয় অঞ্চল বিশেষ করে কক্সবাজারের উখিয়া, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখানো হয়। সে জন্য কক্সবাজারের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহা-বিপৎসংকেতের আওতায় ছিল। এ ছাড়া উপকূলীয় জেলাগুলোর বিপৎসংকেত ছিল ৮। ঘূর্ণিঝড়টির মূল অংশ বাংলাদেশে আঘাত না হানায় বাতাসের গতিবেগও কম ছিল। সেন্টমার্টিনে ১৪৭ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়। আবার জলোচ্ছ্বাসের উচ্চতাও সেই অনুপাতে আমরা দেখেছি। অর্থাৎ যেখানে ১০-১২ ফুট উচ্চতার কথা বলা হয়, সেখানে জলোচ্ছ্বাস ৩-৪ ফুট ওঠে। বিষয়টি আমাদের জন্য স্বস্তির নিঃসন্দেহে।
রোববার সন্ধ্যায়ই ঘূর্ণিঝড়টি বলা চলে দুর্বল হয়ে যায় এবং সে পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির চিত্র সংবাদমাধ্যমে আসে। বাংলাদেশে হতাহতের খবর পাওয়া না গেলেও মিয়ানমারে তিনজনের মৃত্যুর খবর আমরা দেখেছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতির চিত্র স্পষ্ট হবে। তবে স্পষ্টতই কোনো প্রাণ যাতে না ঝরে, সে ব্যাপারে সরকার সচেষ্ট ছিল। উপকূলীয় মানুষ যাতে যথাসময়ে আশ্রয়কেন্দ্রে যায়, সে জন্য আগে থেকেই প্রচার চালানো হয়েছে। এ ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার অংশ হিসেবে সাড়ে ৭ লাখের মতো মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্যে আমরা দেখেছি। মহা-বিপৎসংকেত দেওয়ার পর বিজিবি, পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কক্সবাজারের পর্যটকসহ সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যায়।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো কক্সবাজারে হওয়ায় তারাও ঝুঁকির মধ্যে ছিলো। তাদের সুরক্ষায় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। প্রস্তুতি হিসেবে রোহিঙ্গা শিবিরে তিন হাজার স্বেচ্ছাসেবককে বন্যা, পাহাড়ধস মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। সেখানকার দুর্গম এলাকায় চিকিৎসাসেবা দিতে তিনটি ভ্রাম্যমাণ ক্লিনিক এবং নারী-শিশুসহ বেশি বিপদাপন্ন জনগোষ্ঠীর জন্য জরুরি সেবা দিতে ভ্রাম্যমাণ ইউনিট স্থাপন করা হয়। সূত্রঃ সমকাল।

শুধু সমুদ্রে নয় – ঝড় উঠেছে রাজনীতিতেও : ফখরুল 

ডেস্ক রিপোর্ট ঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে শুধু সমুদ্রে ঝড় নয় রাজনীতিতেও ঝড় উঠেছে। অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় তত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে। এটাই আপনাদের বাঁচার পথ। আমরা অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ ও তত্বাবধায়ক সরকার চাই।গত শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশ থেকে যুগপৎ আন্দোলনের ৪ পর্বের নতুন কর্মসূচি ঘোষণাও দেন মির্জা ফখরুল।
৪৭ বছর পর জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এর মূল কারণ হলো জনগণের আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করা। একই কায়দায় তারা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে করেছিল। এভাবে নির্বাচনের আগে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। তবে কোনো ধানাই-পানাই করে বা কেরিকাটা করে লাভ হবে না। ইনশাআল্লাহ, জনগণের বিজয় হবে।মাঝখানে টানা দুই সপ্তাহের বিরতির পর আবারও রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউন করল বিএনপি। এর আগে গত ১ মে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবসে রাজধানীতে বড় শোডাউন করেছিল বিএনপি।এবার ঢাকার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে অসংখ্য নেতাকর্মীর ঢল নেমেছিল। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ ১০ দফা দাবি আদায় এবং গায়েবি মামলায় নির্বিচারে গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা ও পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে ঢাকা মহানগরীর কর্মসূচি হলেও ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমাবেশে উপস্থিত হয়েছিলেন। একদিকে কাকরাইলের নাইটিঙ্গেল মোড়, বিজয়নগর, অন্যদিকে ফকিরাপুল ও আরামবাগ মোড় এবং আশপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। বেলা আড়াইটার দিকে সমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল বলেন, এই দেশে উচ্চ আদালত জামিন দেয় কিন্তু নিম্ন আদালত তা বাতিল করে দেয়। যেখানে কোনো ঘটনাই ঘটেনি, সেখানে ককটেল ফাটানোর মামলা দেওয়া হয়। এসবের উদ্দেশ্য হচ্ছে- আবারও গায়ের জোরে ক্ষমতায় থাকা। সেজন্যই আবারও গায়েবি ও মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। এসবের বিরুদ্ধে আমাদের সমাবেশ। আজকে রিকশাওয়ালা সারাদিন পরিশ্রম করে বাসায় গিয়ে শান্তিতে ঘুমাতে পারেন না। কারণ নিত্যপণ্যের দাম কয়েক গুণ বেড়েছে। দিন আনে দিন খায় এমন লোকেরা আজকে অসহায়। এই সরকার শুধু দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরছে। সাধারণ মানুষের পকেট থেকে টাকা কেটে বিদেশে পাচার করছে। সূত্রঃ কাল বেলা।

সর্বদাই মানুষ ও মানবতার সেবায় নিবেদিত
এমপি ডা. মোঃ আব্দুল আজিজ 

শামিউল হক শামীম ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে ঈদগাহ্ মাঠের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন, পাঠাগার পরির্দশন, গোন্তা বাজার ও বস্তুল মেলায় জনগণের সাথে মত বিনিময় এবং মাগুড়া বাজারে চা চক্র করেছেন সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ।
গত শুক্রবার (১২ মে) দুপুরে উপজেলার তালম ইউনিয়নের দেওঘর গ্রামে ঈদগাহ মাঠের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন শেষে গোন্তা বাজারে পাঠাগার পরির্দশন এবং জনসাধারণের সাথে কুশল বিনিময় করেন সাংসদ।এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মনিনুজ্জামান মনি, উপজেলা সহ-সভাপতি এডভোকেট নুরুল ইসলাম নুর ,সাংগঠনিক সম্পাদক খলিলুর রহমান, মোজ্জামেল হক মাসুদ, তালম ইউপি চেয়ামারম্যান আব্দুল খালেক, মাগুড়াবিনোদ ইউপি চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান ম্যাগনেট, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল আজিজ,ইউপি সদস্য আরিফুল ইসলাম, নাজির উদ্দিন, ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি গঞ্জের আলী, সাবেক ইউপি সদস্য জহুরুল ইসলাম, সাবেক ছাত্রলীগের সভাপতি আনিস প্রধান, ব্যাংকার মোস্তাক হোসেন, ছাত্রলীগের সভাপতি নিরব হোসেন ঠান্টু, সাধারণ সম্পাদক সাব্বির প্রমূখ।
এ সময় এমপি আজিজ বলেন, উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে পুনরায় নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে এই আসন উপহার দিতে হবে। বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। তালম ইউনিয়নে আনাচে কানাচে পাকা রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। যে কাজগুলো বাকি রয়েছে আশা করি চলতি বছরেই শুরু হবে। তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছেন সবগুলোই অক্ষরে অক্ষরে পালনের চেষ্টা করে যাচ্ছি। মানুষ ও মানবতার সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করতে চাই। সকল অনিয়ম ও দুর্নীতি দূর করতে চাই। আপনারা পাশে থাকলে রায়গঞ্জ-তাড়াশকে মডেল ডিজিটাল ও স্মার্ট আসন হিসেবে রুপান্তরিত করব।

তাড়াশ শিশু পার্কে ঢুকতেই বাঁশ!
গোলাম মোস্তফা, বিশেষ প্রতিনিধিঃসিরাজগঞ্জের তাড়াশে শিশু পার্কে যাতায়াতের রাস্তায় বাঁশ রেখে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ফলে পার্কে ঘুরতে এসে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন লোকজন, বাড়ছে জনভোগান্তি।এদিকে ব্যবসার জন্য পৌর শহরের মধ্যে নির্দিষ্ট জায়গা চেয়েছেন বাঁশের ব্যবসায়ীরা। যেখানে স্থায়ীভাবে ব্যবসা করতে পারেন তারা।
তাড়াশ শিশু পার্ক সংলগ্ন পৌর এলাকার ভাদাশ গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আলীম বলেন, আমার দুই শিশু কন্যাকে নিয়ে পার্কে ঘুরতে আসি। কিন্তু শিশু পার্কের প্রবেশ পথের রাস্তায় বাঁশ রাখায় বাঁশের সুচালো আগার আঘাত লাগে মাঝে মধ্যেই। তাছাড়া বাঁশ বেচার সময় রাস্তার কোন পাশ দিয়ে পার্কে যাওয়া যায় না। রাস্তা বন্ধ করে চলে বাঁশ বেচা-কেনা। নিরুপায় হয়ে অনেক সময় দাড়িয়ে থাকতে হয়। অপরদিকে দেশীগ্রাম ইউনিয়নের আরঙ্গাইল গ্রামের খাদেমুল ইসলামের মেয়ে মায়া খাতুন (১২) জানায়, সে ঈদুল ফিতরের দিন বিকেল বেলায় সহপাঠিদের সাথে তাড়াশ শিশু পার্ক ঘুরতে এসেছিল। কিন্তু পার্ক থেকে বেড় হওয়ার সময় মোটরসাইকেল এসে ধাক্কা দেয়। তার একটি পা ভেঙে যায়। পার্কের রাস্তায় বাঁশ রাখায় রাস্তা সরু হয়ে গেছে। এজন্য দুর্ঘটনা ঘটেছে।
সরেজমিনে গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে দেখা গেছে, ভ‚য়াগাঁতী আঞ্চলিক সড়ক থেকে নেমে তাড়াশ শিশু পার্কে যাওয়ার রাস্তার মুখেই দুই পাশে অসংখ্য বাঁশ মাটিতে ফেলে রাখা হয়েছে। পার্কে ঘুরতে এসেছেন বেশকিছু লোকজন। বাঁশের ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ ও মোস্তফা বলেন, আগে বাঁশ বাজার হাসপাতাল সংলগ্ন ফুটবল খেলার মাঠের এক পাশে ছিল। সেখান থেকে সরিয়ে শিশু পার্কের রাস্তায় দেওয়া হয়েছে। ফুটবল মাঠের কোণায় তাড়াশ ইসলামিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ১ একর ৭৭ শতাংশ জায়গা যুগ যুগ ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। ঐ জায়গা স্থানীয়রা যে যার মতো করে ব্যবহার করছেন। বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত জায়গাতে বাঁশ বাজার করে দিলে তাদের খুব ভালো হয়।
উপজেলা নাগরিক আন্দোলনের আহŸায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজু বলেন, তাড়াশ পৌর শহরে খেলার মাঠ নেই। না আছে বিনোদন কেন্দ্র। শিশু পার্কই একমাত্র ভরসা। বিশেষ করে, শিশুদের মানসিক পরিপক্কতার জন্য বাইরের নির্মল প্রাকৃতিক পরিবেশ অপরিহার্য। কেবল যাতায়াতের বিরাম্বনা থেকে মুক্তি নয়, তাড়াশ শিশু পার্কটির সার্বিক উন্নয়ন কাজ পূনরায় শুরু করে তা সম্পূর্ণরূপে বিনোদন উপযোগী করে গড়ে তোলা হোক। এ লক্ষ্যে স্থানীয়ভাবে একটি নাগরিক সংলাপের আয়োজন করা যেতে পারে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌর প্রশাসক মো. মেজবাউল করিম জানিয়েছেন, বাঁশ বাজার অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা তাদেরও রয়েছে। যাতে লোকজন নির্বিঘেœ শিশু পার্কে যাতায়াত করতে পারেন।এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জ-৩ (তাড়াশ, রায়গঞ্জ, সলঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তাকে বলেন, তাড়াশ শিশু পার্কের সার্বিক উন্নয়নের জন্য অর্থের জোগাড় হয়ে গেছে। কোরবানীর ঈদের আগেই পার্কটি বিনোদন উপযোগী করে গড়ে তোলা হবে।

এক বছরে ৫৩টি চুরি
তাড়াশে ট্রান্সফরমার চুরির হিড়িক

তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে একই রাতে ৫ টিসহ দশ দিনে কৃষকের বোরো মাঠের বিদ্যুৎ চালিত সেচ যন্ত্র থেকে ১২টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫ লাখ টাকা। এ দিকে অব্যাহত ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় সেচ কার্যক্রম চালু রাখতে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
জানা গেছে, গত বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের ওয়াশীন এবং উত্তর মথুরাপুর গ্রামের ফসলী মাঠ থেকে কৃষক মহসীন আলীর ৩ টি, চাঁন্দু সরকারের ১ টি, মনসুর রহমানের ১ টিসহ বিদ্যুৎ চালিত সেচযন্ত্রের ১০ কেভি ওজনের ৫ টি ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে গেছে চোরের দল। এ ছাড়া চলতি মাসের শুরুতে ভাদাস গ্রামের কৃষক এবাদ আলীর ১ টি, পৌষার গ্রামের সুশীল সরকারের ১ টি, বিলাসপুরের সমশের আলীর ৩ টি, উত্তর মথুরাপুর গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের ১ টি এবং একই গ্রামের মনসুর আলীর ১ টিসহ মোট ৭টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়।
উত্তর মথুরাপুর গ্রামের কৃষক মনসুর রহমান জানান, গত দেড় সপ্তাহে চোরের দল যে ১২ টি ট্রান্সফরমার চুরি করেছে। আর সে সকল সেচ যন্ত্রের সেচ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে অনেক জমিতেই ধান কাটা হয়নি। অথচ সেচ দিতে হবে। সে সকল কৃষক ট্রান্সফরমার হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কেননা এক একটি ৫ থেকে ১০ কেভি ওজনের ট্রান্সফরমার কিনতে কৃষককে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা ব্যয় করতে হবে। পাশাপাশি এসব ট্রান্সফরমার কেনার পর তা বৈদ্যুতিক খুঁটিতে এবং সংযোগ দিতে আরো ৫ থেকে ৭ দিন সময় লাগবে। ফলে সেচের অভাবে উঠতি বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে যাবে। বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হওয়া প্রসঙ্গে তাড়াশ পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মো. রাব্বুল হাসান বলেন, তাড়াশে বিপুল সংখ্যক ট্রান্সফরমার চুরি ঘটনায় বিদ্যুৎ বিভাগও শংকিত হয়ে পড়েছে। কেননা গত ১০ দিনে শুধু ১২টি নয় গত ২০২২ সালে এ উপজেলায় প্রায় ৫৩ টি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। তবে আমরা ট্রান্সফরমার চুরি বন্ধে সচেতনার জন্য এলাকায় মাইকিং করলেও কোন কাজ হচ্ছে না। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার পুলিশ পরির্দশক (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, চুরির ঘটনায় কৃষক থানায় অভিযোগ করেন না। তবে ট্রান্সফরমার চোরদের আটক করতে পুলিশের তৎপরতা চলছে।

ধানের বাম্পার ফলনে তাড়াশে কৃষকের আনন্দ 

মোঃ মুন্না হুসাইন, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধিঃ তপ্ত রোদে সবুজ পাতার আড়ালে চিকচিক করছে সোনা বর্ণে রাঙানো ধান। মাঠের পর মাঠ শুধুই ধান আর ধান। এমন ফসলের মাঠ দেখা গেছে তাড়াশ উপজেলায়। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে বোরো আবাদ। ফলন ভালো হওয়ায় আনন্দে আত্মহারা তাড়াশের কৃষকরা।উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২২ হাজার ৩৭০ হেক্টর। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে আবাদ হয়েছে প্রায় ২২ হাজার ৪৪৮ হেক্টরে। বেশি জমি আবাদ হওয়ায় ধানের উৎপাদন বেশি হবে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয় জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে সরকার প্রতি কেজি ধানের দাম নির্ধারণ করেছে ৩০ টাকা। সে হিসাবে প্রতিমণ ধানের মূল্য এক হাজার ২০০ টাকা। উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের মহেশরৌহালী গ্রামের চাষি আশরাফ মোল্লা জানান, চলতি মৌসুমে ৬৫ শতক জমিতে ব্রি ধান-২৮ ও ৫৮ জাতের ধান চাষ করেছেন। বীজতলা, জমি চাষ, রোপণ, সার, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিক বাবদ ব্যয় হয়েছে ২৮ হাজার ৩১২ টাকা। জমির ধান কেটে ঘরে তুলেছেন ৪১ মণ। এতে সরকারি দরে ৪৯ হাজার ২০০ টাকার ধান উৎপাদন হয়েছে। ব্যয় বাদে লাভ হয়েছে ২১ হাজার টাকা।
একই গ্রামের কৃষক আলামিন বলেন, ‘এবার সাড়ে তিন বিঘা জমিতে বোরো চাষ করেছি। ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত হলে আরও বেশি ফলন হতো। সরকার বাজার দর এ রকম দিলে আগামীতে আরও বেশি জমিতে বোরো আবাদ করব।’উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের খোরশেদ মাষ্টার ও এলাকার আবুল হোসেন বলেন, ‘তিন ফসলি জমিতে ১২০৫ উপজাত রোপন করে ছিলাম, শতকে ২৫ কেজি ফলেছে। সেচ ও অন্যন্য সুবিধার কারনে ফলন ভালো হয়েছে । এই আবাদের লাভ দিয়ে সংসারের ব্যায় মিটিয়ে আগামী চাসাবাদ করব, ইনশাআল্লাহ। চলতি বোরো আবাদের ফলন নিয়ে কৃষকদের পাশাপাশি কর্মকর্তারাও আশাবাদি।উপজেলা উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা বলেন, ‘এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চাষ বেড়ে যাওয়ায় ফলন বেশি হয়েছে। আশা করি, আবহাওয়া ও বাজারদর অনুকূলে থাকলে আগামী মৌসুমে বোরো চাষ বাড়বে।’ উপজেলা কৃষি অফিসার মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আবহাওয়া ভালো ছিল। তাই কৃষকরা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ধান চাষ করেছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার। এখন ভালো দাম পেলে, তারা লাভবান হবেন।’

তাড়াশে বিশ্ব মা দিবস পালিত 
মোঃ মুন্না হুসাইন ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে বিশ্ব মা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত ১৪ মে রবিবার সকালে উপজেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োাজনে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নূরী তাসমিন উর্মির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান।
এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক মর্জিনা ইসলাম,মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খাদিজা নাসরিন, তাড়াশ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ খাঁন জয় ও শিক্ষক শাহ আলম প্রমুখ। আলোচনা সভাযয় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আনোয়ার হোসেন খান বলেন,প্রাচীন গ্রিসে বিশ্ব মা দিবসের পালন করা হলেও আধুনিককালে এর প্রবর্তন করেন এক মার্কিন নারী। ১৯০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আনা জারভিস নামের নারী মারা গেলে তার মেয়ে আনা মারিয়া রিভস জারভিস মায়ের কাজকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য সচেষ্ট হন। ওই বছর তিনি তার সান ডে স্কুলে প্রথম এ দিনটি মাতৃদিবস হিসেবে পালন করেন। ১৯০৭ সালের এক রোববার আনা মারিয়া স্কুলের বক্তব্যে মায়ের জন্য একটি দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় সাহেদ খাঁন জয় বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে মধুরতম ডাক ‘মা’। ছোট্ট এ শব্দের অতলে লুকানো থাকে গভীর স্নেহ, মমতা আর অকৃত্রিম দরদ। তাইতো মমতাময়ী মায়ের সম্মানে প্রতি বছর মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ‘বিশ্ব মা দিবস’ পালন করা হয়। তবে অনেকের মতে, মাকে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা জানাতে কোনো দিনক্ষণ প্রয়োজন হয় না। মায়ের প্রতি প্রতিদিনই সন্তানের ভালোবাসা থাকে।

তাড়াশের কাটাখালে চায়না জালের ছড়াছড়ি
শাহজাহান আলী ঃ সম্প্রতি উল্লাপাড়ায় অবৈধ চায়না জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। অথচ তাড়াশে সারা বছর চায়না জালসহ নিষিদ্ধ জাল দিয়ে মাছ ধরে বহালতবিয়তে। তাড়াশে মৎস্য কর্মকর্তার সাথে জেলেরা আঁতাত আর সমন্নয় করেই সারা বছর চায়নাজাল দিয়ে মাছ ধরেন বলে গোপন একটি সুত্র জানিয়েছেন। সরকারীভাবে জেলেদের পুনর্বাসনে সহায়তা করা হলে অবস্থা সহনীয় পর্যায়ে থাকতো। অপরদিকে পাবনার ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহরের জেলেরা চলনবিলে ঢুকে বড় বড় বেড় জাল ফেলে মৎস্য সম্পদ লুণ্ঠন করে। প্রশাসন মাঠে থাকলে জনসাধারণ সহায়তা করবে। তাড়াশের চলনবিলের মৎস্য সম্পদ প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। নদ-নদী খাল বিলে মাছের প্রজননের এই সময়ে মা ও (ছা) পোনা মাছ রক্ষা করতে পারলেই মাছের অভাব হবে না। কিন্ত অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হচ্ছে এই সময়েই জেলেরা পোনা মাছ ধরার পুর্ব পরিকল্পনায় ব্যস্ত সময় পার করছে। বেড় জাল, চায়না দুয়ারী ,কারেন্ট ইত্যাদি জাল তৈরি করছে। তাড়াশের কাটাখালে সারা বছর নিষিদ্ধ চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরলেও দেখার কেউ নেই। সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলা মৎস্য বিভাগ থেকে প্রায় আড়াই লাখ টাকার অবৈধ চায়না দুয়ারী ও কারেন্ট জাল আটক করে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আতাউর রহমান মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতায় সকালের দিকে করতোয়া নদীর ঘাটিনা এলাকা থেকে সাতবারিয়া অবধি অভিযান চালিয়ে চল্লিশ পিচ চায়না দুয়ারী জাল ও কারেন্ট জাল ১০ পিচ আটক করে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এনে পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেন।
এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ উজ্জল হোসেন উপস্থিত ছিলেন। সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আতাউর রহমান বলেন, চায়না দুয়ারী জাল ও কারেন্ট জাল বিক্রি ও ব্যবহার নিষিদ্ধ। করতোয়া নদীর ঘাটিনার সাতবারিয়া এলাকায় অনেকেই অবৈধ এসব জাল দিয়ে মাছ ধরে আসছিলেন বলে অভিযোগ মেলে।

তাড়াশে ইউপি সদস্যের বেপরোয়া দুর্নীতি

ডবশেষ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে আলপনা খাতুন নামের এক হত দরিদ্র গৃহবধূর মাতৃত্বকালীন টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তের নাম লতা খাতুন। সে উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নাম্বার ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য। এর আগেও তার বিরুদ্ধে বিরৌহালী গ্রামের সড়কের গাইড ওয়ালের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। তারপর জনরোষে পরে তা দায়সারাভাবে নির্মাণ করে দেয়।
ভুক্তভোগী আলপনা খাতুন বলেন, ২০১৭ সালে আমাকে মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ড করে দেয় ইউপি সদস্য লতা খাতুন। কার্ড করে দেওয়ার সময়ও তার কাছ থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা উৎকোষ নেয়। এরপর ভাতা কার্ডের বহি ও চেক বহি তার কাছেই রেখে দেয়। ভাতা কার্ড হওয়ার পর থেকে তাকে শুধু ৯ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
হত দরিদ্র এই গৃহবধূ আরো বলেন, ইউপি সদস্য লতা খাতুনের কাছ থেকে ভাতা বহি ও চেক বহি চাইলে দীর্ঘ সময় ক্ষেপন করতে থাকে। টাকা চাইলে একাউন্টে টাকা আসেনি বলে সাফ জানিয়ে দেয়। কিন্ত গত বুধবার ব্যাংক স্টেটমেন্ট তুলে দেখতে পায় ২০২২ সালের পহেলা আগষ্ট একাউন্টে ৯ হাজার ৬০০ টাকা জমা হয়েছে। ঐ বছরের এগারই আগষ্ট মাসে সেই টাকা উত্তোলন করা হয়েছে।অভিযুক্ত সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য লতা খাতুন বলেন, মাতৃত্বকালীন ভাতা কার্ড করে দেওয়ার সময় টাকা নিয়েছি। কিন্তু ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে।এদিকে সোনালী ব্যাংক নওগাঁ শাখার শাখা ব্যবস্থাপক শরিফুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকের ভাউচার দেখে ভুক্তভোগীর স্বাক্ষর মিলিয়ে অভিযোগের সত্যতা যাচাই করে দেখা হবে।নওগাঁ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মজনু বলেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।এ প্রসঙ্গে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খাদিজা নাছরিন বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

 

 

 

 

বিশেষ মন্তব্য কলাম
গুরুদাসপুরে ঘুষ কেলেংকারী 
অব্যাহতি দেয়া মানে প্রশ্রয় দেয়ার শামিল

বিগত কিছু দিন যাবত নাটোরের গুরুদাসপুরে টক অব দ্য টাউন ছিল স্থানীয় জনৈক আওয়ামীলীগ নেতার ঘূষ কেলেংকারী। তিনি স্থানীয় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম। পাশাপাশি এলাকায় তিনি ‘মিনি এমপি নজরুল ইসলাম’ ওরফে ‘মিনি নজরুল’ নামে খ্যাত যার নির্জলা অর্থ হচ্ছে বেহালাল কামাই-রোজগারে তিনি অনেকটা এগিয়ে। আর একাজে ‘বিগ’ এমপিকে তিনি ব্যবহার করে থাকেন।।বক্ষ্যমান ঘটনায় তার চূড়ান্ত লক্ষ্য ছিল, উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর দেওয়ার নাম করে ৬ মাস পূর্বে ওখানকার ৭ জন দ:ুস্থ ও দরিদ্র নারীর প্রতিজনের নিকট থেকে গৃহীত ৫০ হাজার ঘুষের টাকা হালাল করে ফেলা বা ধামাচাপা দেয়া। এদিকে অনেক চেষ্টা-তদবির করেও ঘর না পেয়ে টাকা ফেরত পেতে গত ৩ মে ২০২৩ নাটোরের আমলী আদালতে মামলা করেন দুই ভুক্তভোগী মহিলা। তখন কিছুদিন হাজত খাটেন নজরুল। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও নাটোর জেলা প্রশাসকের নজরে আসে। এরপর গত বৃহস্পতিবার নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নূর মোহাম্মদ মাসুম গুরুদাসপুর ইউএনও’র দপ্তরে অভিযোগকারীদের বক্তব্য শুনানী গ্রহণ করেন। এসময় অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম, ইউএনও শ্রাবণী রায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল উপস্থিত ছিলেন। পরের দিন শুক্রবার সকালে ইউএনও শ্রাবণী রায় ভুক্তভোগী মহিলাদের তার বাসভবনে ডেকে নজরুল কর্তৃক ঘুষ গৃহীত ৫ জন নারীর টাকা গোপনে ফেরত দেন এবং নজরুলের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার না করায় দুই নারী টাকা ফেরত পাননি। এখানে এ দুই নারীর প্রতি তিনি পক্ষপাতহীন ভূমিকা নিতে পারেন নি। স্মরণযোগ্য, সাম্প্রতিককালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্প কেন্দ্র করে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির দায়ে বিভিন্ন পর্যায়ের লোকজন অভিযুক্ত হয়েছেন যার মধ্যে ইউএনও, এডিসি পর্যায়ের কর্তা ব্যক্তিরাও আছেন।
অপরদিকে খবরে জানা যায়, নাটোরের গুরুদাসপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাইয়ে দেওয়ার নামে উপকারভোগীদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া ও দলীয় শৃংঙ্খলা ভঙ্গ করায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলামকে স্থায়িভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন বলেন, গত শনিবার উপজেলা আওয়ামীলীগের এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে , নজরুল ইসলামের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডে সরকার ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এজন্য তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে তার নির্দিষ্ট দুস্কর্মের হেতু তাকে কোন শাস্তি দেয়া হয়েছে কি না সে মর্মে কিছু বলা হয়নি।
এদিকে ভুক্তভোগী ওই নারীরা জানান, শুনানীর গ্রহণের পর বৃহষ্পতিবার দিবাগত রাতের বেলা অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম লুকিয়ে তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করে এসেছেন এবং তাঁদের টাকা ইউএনওর মাধ্যমে ফেরত পাবেন বলেও জানিয়েছিলেন। তাঁর কথা ও ইউএনওর ফোনে আশ্বস্ত হয়ে শুক্রবার ইউএনওর বাসভবনে এসে ঘুষের টাকা ফেরত পেয়েছেন তাঁরা।
প্রাচীর টপকিয়ে পার হওয়া নারীদের মধ্যে জনৈক আসমা বেগম সংবাদকর্মীদের জানান, ‘সাংবাদিকদের দৃষ্টি এড়াতে ইউএনওর পরামর্শে তাঁর গাড়ি চালক জয়নাল হোসেনের সহায়তায় টাকাসহ মই বেয়ে প্রাচীর অতিক্রম করেছিলেন। অভিযুক্ত আওয়ামীলীগ নেতা নজরুল ইসলাম এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও শ্রাবনী রায় বলেন, ভ‚ক্তভোগী মহিলারা আমার কাছে অভিযোগ করেন। পরে উভয়পক্ষের মধ্যে শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে আমি বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি মাত্র। এখন এলাকার জনমনে প্রশ্ন হল, দলীয় নেতার নেয়া ঘুষের টাকা একজন প্রশাসনিক ক্যাডারের কর্মকর্তা এভাবে নাটকীয়তার মাধ্যমে ফেরত দিতে পারেন কি না। কারণ তিনি শুধু একজন অফিসার নন, প্রথম শ্রেণির একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বটে। যার সরল অর্থ তিনি বিচারক। তাহলে বিচারক হয়ে নষ্ট রাজনীতির একজন দুষ্ট নেতার অবৈধ ঘুষের টাকা কোন যুক্তিতে ইউএনও-র হাত দিয়ে ফেরত দেয়া হয়। তিনি কি পাবলিকের ঘুষের ঘরোয়া দরবার করার এখতিয়ার রাখেন? ুুুুএটা কেমন সৎ-স্বচ্ছ-পবিত্র কাজ। একদিকে ক্ষমতাসীন দল নজরুলের কুকীর্তির একটা ঘরোয়া সালিস বা বিচার পর্যন্ত না করে , সাজা-শাস্তি না দিয়ে তাকে দল থেকে বহিস্কার করে নিরাপদে সরে পড়ার সুযোগ করে দিয়েছে। এতে দলে কোন নীতি-আদর্শের বালাই আছে কি না তা নিয়ে জনমনে জিজ্ঞাসা দেখা দেবে। কেননা মাত্র অল্প দিন পূর্বেই তো প্রধানমন্ত্রী তার দলে কাউকে অন্তর্ভূক্ত করার আগে তার চরিত্র-নীতি-বৈশিষ্ট্য এমনকি পরিবার-বংশের অতীত খোঁজখবর নিতে বলেছেন। যার মানে দলকে আগাছা ও জঞ্জাল মুক্ত করা। অপরদিকে সংশ্লিষ্ট ইউএনও আইনের আশ্রয়ে না গিয়ে বরং ঘুষ ফেরতের মধ্যস্থতা করে এই দুর্নীতিপ্রবণ তথাকথিত নেতাকে নিরবে অব্যাহতি দিয়েছেন।এভাবে ন্যায্য বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে হতদরিদ্র মহিলারা। উপরোক্ত দু’টি পদক্ষেপের কোন্টিকে আইন, বিচার ও বিবেক সম্মত বলা যাবে। দেশে দুর্নীতি রুখতে যেখানে প্রধানমন্ত্রীর জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষিত হয়েছে, সেখানে গুরুদাসপুরে তার দলেরই ঘুষ খেকো নানা অপকর্মের হোতা নজরুল ইসলামকে আরো আশ্রয়-প্রশ্রয় দানের মাধ্যমে নির্বিঘেœ চলে যাবার পথ করে দেয়ায় তাকে আরো এ ধরনের ঘৃন্য কাজকর্মে উৎসাহিত করার শামিল। এর ফলে দুর্নীতিবাজরা সংশোধন না হয়ে আরো সাহস , আশ্রয় ও আস্কারা পাবে। শুধু তাই কি, গুরুদাসপুরেই গণগুঞ্জন চলছে, কিছুদিনের মধ্যেই নজরূলকে আবার দলে ফিরিয়ে আনা হতে পারে। এমনটিই চলছে ইদানিং দলীয় রাজনীতিতে। এতে সমাজে সুস্পষ্টরুপে ভুল বার্তা যায়। সাধারণ মানুষ ধরে নেয় , সমাজে সবল ও প্রবল তথা প্রভাবশালীদের অসৎ ও গর্হিত কর্মের বিচার হয় না, শাস্তি পায় না। বিচার হবে কেবল দুর্বলের। নেতা হলে সমাজে সব জায়েজ। ক্ষমতাসীন সরকারী দলের রাজনীতি করলে সাত খুন মাফ। এমনকি আদালতে বিচারাধীন নজরুলের মামলার চূড়ান্ত ফায়সালার পূবের্ই একজন ইউএনও ওই রাজনীতিকের ঘুষের টাকা তার হাত দিয়ে ভূক্তভোগীদের ফেরত দানের ব্যবস্থা না করে সে কাজটি তিনি স্বয়ং নিজে করে আইনের রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকা পালন করলেন কি না তা নিয়ে অবশ্যই সমাজে প্রশ্ন উঠবে। কারণ তিনি তো অপরাধের অভিযোগ ও তার প্রতিকার থেকে নেতাকে বাঁচাতে সহায়তা করলেন যা করা তার দায়িত্ব-কর্তব্যের মধ্যে মনে হয় পড়ে না। সবশেষে বলব, এই নির্লজ্জ দুর্নীতির শিকার সমাজের দুস্থ হতদরিদ্র মহিলারা সরাসরি প্রত্যক্ষ করলেন. কীভাবে একজন রাজনৈতিক নেতাকে সুরক্ষা দেয়ার উদ্দেশ্যে সংগোপনে গণমাধ্যমের চোখ এড়িয়ে সুকৌশলে ঘুষ ফেরতের নাটকীয় দেনদরবার করে সরকারী প্রশাসন তাদের অত্যন্ত অনাদরে, অসম্মানে ও অশ্রদ্ধার সাড়িতে ফেলে ইউএনও-র বাসভবনের পেছনের প্রাচীরে মই লাগিয়ে একে একে নামিয়ে দেয়া হয়েছে হেয় প্রতিপন্ন করে যার ছবি এসেছে বিভিন্ন সংবাদপত্রে সাহসী সাংবাদিকতার সুবাদে। এটা এক বিরল, ব্যতিক্রমী ঘুষ ফেরতের দৃশ্য যা সর্ব প্রকার আদর্শ-নৈতিকতার সাথে সাংঘর্ষিক। লক্ষ্যনীয়, আমাদের সংবিধান জনগনকে রাষ্ট্রের মালিক বলে অভিহিত করেছে। সেই জনগনকে সামনের দরজা দিয়ে যেতে না দিয়ে ঘুষ ফেরতের তথ্য চাপা দেয়ার লক্ষ্যে পেছনের প্রাচীর টপকিয়ে পাঠানো হয়েছে, এটা রাষ্ট্রের মালিককে চরম অপমান করা, লজ্জাজনক নয় কি? হয়তো এই নারীরা সমাজের কথিত নি¤œ স্তরের মানুষ বলে তাদেরকে এরকম অবজ্ঞা-উপেক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। গুরুদাসপুরের এই চাঞ্চল্যকর ঘুষ কেলেংকারীর কাহিনিতে আবারও প্রমাণিত হল, দেশে শাসক রাজনৈতিক দল, সরকারী প্রশাসন কারোই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়ার ইচ্ছে-অভিপ্রায় নেই, সুশাসন তো দূরের কথা। বরং মিলেঝিলে সব ম্যানেজ করে চলাই বর্তমানে প্রচলিত ধারা। এটাই আজকে আমাদের দূষিত রাজনীতি ও সরকারী দপ্তরের কালচারে পরিণত হয়েছে। এজন্যই বাংলাদেশ দুর্নীতির বৈশ্বিক সূচকে আজো কাংখিত উন্নতি লাভ করতে পারে নি, কখনো পারবে কি না তা ভবিষ্যতই বলে দেবে।

চলনবিলে পুকুর সংস্কারের নামে
ফসলি জমির মাটি বিক্রি
শাহজাহান আলী
চলনবিলভূক্ত সিরাজগঞ্জ,নাটোর, পাবনা জেলার কৃষিপ্রধান এলাকার বিভিন্ন অঞ্চলে পুকুর কাটা ও পুকুর সংস্কারের অজুহাতে প্রশাসনের চোখের সামনে দিয়ে ফসলি জমি কেটে মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। সেই মাটি চলে যাচ্ছে স্থানীয় বিভিন্ন ইটভাটায়। ড্রাম ট্রাকসহ অনেক বড় বড় হাইলোডেড ট্রাকে করে মাটি বহন করার ফলে আঞ্চলিক রাস্তা ও হাইওয়ে সড়ক পথও এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে গেছে। ট্রাকের মাটি রাস্তায় পড়ে রোদে শুকিয়ে ধুলাবালুতে একাকার হচ্ছে অথবা বৃষ্টিতে ভিজে কর্দমাক্ত হয়ে সড়ক পথে দুর্ঘটনা বাড়াচ্ছে। বিশেষ করে তাড়াশে ফসলি জমির মাটি কেটে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রির জন্য সকল রাস্তা নষ্ট হয়ে গেছে। গ্রামীণ রাস্তাগুলো মাটি বিক্রির ড্রাম ট্রাকের যাতায়াতে নষ্ট হয়ে চলাচলের সম্পূর্ণ অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাড়াশ উপজেলার ঘরগ্রাম, নওগা, মাগুড়া, হামকুড়িয়া প্রভৃতি গ্রামে সারা বছর চলে ফসলি জমিতে পুকুর খনন ও মাটি বিক্রির কাজ। প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেও কোন কাজ হয় নাই। চলনবিলের তাড়াশ,চাটমোহর ,ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর উপজেলায় পেঁয়াজ, ধান, পাটসহ সমৃদ্ধ কৃষি উন্নয়নমুখী এলাকা। এ সব উপজেলায় ব্যাপক ফসল উৎপন্ন হয়। ইদানীং দেখা যাচ্ছে দু-তিন ফসলি জমির মাটিও বিক্রি করে দিয়ে সেখানে কাটা হচ্ছে পুকুর। চলনবিলে আশঙ্কাজনক হারে হ্রাস পাচ্ছে ফসলি জমি। ফসলের মাঠে গড়ে উঠছে নতুন বসতি, ইটভাটা, পুকুর ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। প্রশাসনের অনুমোদন না নিয়েই বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ কাজে ফসলি জমিকেই ব্যবহার করা হচ্ছে। কৃষি জমি সুরক্ষা আইন থাকলেও তার যথাযথ প্রয়োগ নেই। ফলে প্রতি বছর বিপুল পরিমাণে কৃষি জমি চলে যাচ্ছে অকৃষি খাতে। এভাবে প্রতি বছর কমে যাচ্ছে আবাদি জমি, কমে যাচ্ছে খাদ্যশস্যের উৎপাদন।এভাবে একসময় খাদ্য ঘাটতি দেখা দিবে।
সরকারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইন্সটিটিউটের (এসআরডিআই) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশের কৃষি জমি বিলুপ্তির প্রবণতা’ শীর্যক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ সাল পরবর্তী ১২ বছরে দেশে প্রতি বছর ৬৮ হাজার ৭৬০ হেক্টর আবাদি জমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে। শুধু অবকাঠামো নির্মাণ কাজেই প্রতি বছর তিন হাজার হেক্টর জমি বিলীন হচ্ছে। জাতীয় ভূমি ব্যবহার নীতি ২০১০ এবং কৃষি জমি সুরক্ষা ও ভূমি জোনিং আইন ২০১০ অনুসারে কৃষি জমিকে কৃষি কাজ ছাড়া অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না। কোনো কৃষি জমি ভরাট করে বাড়িঘর, শিল্প-কারখানা, ইটভাটা বা অন্য কোনো অকৃষি স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। আইনটি শুধু নামেমাত্র আছে, যথাযথ প্রয়োগ নেই।সেজন্যই বাড়ছে এই ভয়াবহ প্রবণতা।
কৃষকের আয়ের উৎস কৃষি জমি তাদের হাত ছাড়া হয়ে যাচ্ছে। তিন ফসলি জমিতেই গড়ে তোলা হচ্ছে ইটভাটা। জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদফতরের তথ্য মতে, পাবনা জেলার ৯টি উপজেলা ও ১১টি থানা মিলে বৈধ ও অবৈধ মিলে ১৯৩টি ইটভাটা রয়েছে। এর মধ্যে বৈধ ইটভাটার সংখ্যা ৪০টি। আর অবৈধ ইটভাটার সংখ্যা ১৫৩টি। বেড়া উপজেলায় ১৬টি ভাটার মধ্যে বৈধ আছে মাত্র ৪টি ইটভাটা। পাবনা সদর উপজেলায় ৭১টি ইটভাটার মধ্যে বৈধ ইটভাটা ১৫টি। ঈশ^রদীতে ৫০টি ভাটার মধ্যে বৈধ মাত্র ৫টি। আটঘরিয়া উপজেলায় বৈধ ইটভাটা রয়েছে মাত্র ১টি। চাটমোহরে ৬টি ভাটার মধ্যে ৪টি বৈধ। সুজানগরে ১৭টি ভাটার মধ্যে ৯টি বৈধ। ভাঙ্গুড়ায় ৭টির মধ্যে বৈধ ভাটা আছে ২টি। ফরিদপুর ও সাঁথিয়া উপজেলাতে ১১টি করে মোট ২২টি ইটভাটা থাকলেও একটিরও কোনো বৈধতা নেই। অন্যদিকে ইটভাটা মালিকদের দেয়া তথ্য মতে এ জেলায় বর্তমানে ২৮০টি ইটভাটা রয়েছে। ধাপে ধাপে বিভিন্ন সেক্টরে টাকা দিয়ে অবৈধ ইটভাটাগুলো দিব্যি চালানো হচ্ছে।
ইটভাটা মালিকদের দেয়া তথ্যে জেলায় বর্তমানে ২৮০টি ইটভাটা চালু রয়েছে। প্রতিটি ইটভাটা স্থাপনে যদি ১০ বিঘা করে জমি লাগে, সেই হিসাবে ২৮০টি ইটভাটা স্থাপনে দুই হাজার ৮০০ বিঘা জমি ব্যবহার করা হয়েছে। আবাসিক এলাকা ও ফসলি জমিতে এসব ইটভাটা গড়ে ওঠায় হ্রাস পেয়েছে খাদ্যশস্য উৎপাদন। এ ছাড়া ইট তৈরির প্রধান উপকরণ মাটির জোগান দিতে প্রতি বছর ৩০০-৪০০ বিঘা তিন ফসলি জমি পুকুরে পরিণত হচ্ছে।
পাবনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানায়, দুই হাজার ৩৭১ দশমিক ৫০ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের পাবনা জেলায় প্রায় ৩১ লাখ মানুষের বাস। জেলায় পাঁচ বছর আগে আবাদি জমি ছিল এক লাখ ৮৫ হাজার ৭৩৬ হেক্টর। এখন তা কমে এক লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৭ দশমিক ২৯ হেক্টরে এসে দাঁড়িয়েছে। অপরদিকে সিরাজগঞ্জ জেলার ইটভাটার চিত্রটাও প্রায় একই রকম। চলনবিলস্থ তাড়াশ ও রায়গঞ্জের ৫০টিরও অধিক ইটভাটার মধ্যে আইনী বৈধতা রয়েছে হাতে গোনা কয়েকটির। মাত্র গত সপ্তাহে সিরাজগঞ্জ জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর ভ্রাম্যমান আদালতে অভিযান চালিয়ে তাড়াশ-রায়গঞ্জের বেশ কয়েকটি ইটভাটার জরিমানা করেছে। ইটভাটার প্রভাবশালী মালিকরা ভাটার আশপাশের জমি ক্রয় করেন অথবা আশপাশের জমির উপরিভাগের মাটি ক্রয় করে সেই মাটি কেটে নিয়ে যান। এভাবে কৃষি জমির ‘টপ সয়েল’ কেটে নেয়ায় কমে যাচ্ছে মাটির উর্বরতা। ইটভাটার কারণে দূষিত হচ্ছে বাতাস ও পরিবেশ। ইটভাটার ধোঁয়ায় গাছ, গাছের ফল-মূল ও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। মানুষ সর্দি-কাশি, শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। ভাটায় ইট পোড়ানো কয়লা থেকে নির্গত হচ্ছে স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর কার্বন-মনোক্সাইড। কিন্তু শর্ষের ভেতরে যেমন ভূত লুকিয়ে থাকে, এক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তেমনি। কেননা ভাটা মালিকরা যেহেতু সমাজের বিত্তশালী উঁচু শ্রেণির, তারা সবদিক ম্যানেজ করেই বেআইনী ব্রিকফিল্ড ব্যবসা করে চলেছে।
পাবনা বারের সাবেক সভাপতি এ্যাড. আব্দুল মতিন জানান, কৃষি জমি বিপর্যয়ের দিকে যাচ্ছে প্রধানত কয়েকটি কারণে। আর তা হলো- কৃষকের দূরদর্শিতার অভাব, জনসংখ্যার বিস্ফোরণ, ভূমিখেকো ও অসাধু ইটভাটা মালিকদের আগ্রাসন। তিনি বলেন, কৃষি জমি সুরক্ষা ও ভূমি ব্যবহার আইন অনুযায়ী কৃষি জমি নষ্ট করে বাড়িঘর, শিল্প-কারখানা, ইটভাটা এবং অন্যান্য অকৃষি স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। এ আইন অমান্য করলে কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। তবে যাদের ৩ থেকে ৫ শতক কৃষি জমি আছে, তারা অপরিহার্য ক্ষেত্রে বসতবাড়ি নির্মাণ করতে চাইলে আইনের বিধান অনুযায়ী ভূমি জোনিং মানচিত্র অনুযায়ী তা করতে পারবেন।সার্বজনিন জনসচেতনতার পাশাপাশি সরকারের প্রয়োজনীয় সুদৃষ্টি না থাকলে প্রতি বছর আবাদি জমি কমে কৃষি কার্যক্রম ধ্বংসেরর দিকে চলে যাবে।
লেখক ঃ বিশিষ্ট সাংবাদিক, প্রাবন্ধিক ও কলামিস্ট। তাড়াশ, সিরাজগঞ্জ।

 

জীবনের নিশ্চয়তা আছে কি?
বীরমুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ শুকুর মাহমুদ

জানাযায় যেতেই নিজের’ই জানাযা হয়ে গেলো। জীবের বাঁচা আর মরার নিশ্চয়তা জীবের হাতে নেই, কার হায়াতের পুঁজি কখন শেষ হবে তা কেউ জানে না। জীবন যিনি দিয়েছেন মরণও তারই নিয়ন্ত্রণে, তিনি ইচ্ছে করলেই মৃত্যু দিতে পারেন। একটি জীবের যখন জন্ম হয় সবাই তা জানতে পারে। একটি জীবের যখন মরণ হবে মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্ত পর্যন্তও কেউ জানতে পারে না। একটি সত্য কথা যার জন্ম হয়েছে, মৃত্যু অনিবার্য্য। সৃষ্টি কর্তাকে স্বীকার করো বা নাই করো মরণ তার হবেই।
এই সত্য বিষয়টি জানার পরও মানুষ অপরাধ করছে, হক্কদারের হক্ক নষ্ট করছে, অধিনস্থদের উপর জুলুম করছে, মালিকেরা শ্রমিকদের ঠকাচ্ছে। যে যেখানে সুযোগ পাচ্ছে বৈধ অবৈধ নেই উপার্জন করে সম্পদের পাহাড় গড়ছে। সম্পদ আহরণ করে অর্জিত ওই সম্পদে তার মালিকানা কতখন থাকবে তা কিন্তু জানে না। অর্জিত সম্পদ ভোগ করতে পারবে কি না তাও জানে না। কার জন্য সম্পদ সংগ্রহ করছে, গড়ছে বহুতল ভবন সে প্রশ্নেরও কোন উত্তর দিতে পারবে না। অথচ হক্কদারের হক্ক নষ্ট করছে, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ঋণ নিয়ে কৌশলে ঋণ খেলাপী হচ্ছে। শ্রমিকদের ঠকিয়ে সম্পদ সংগ্রহ করছে। বিদেশে পাচার করছে অবৈধ উপাযজনের অর্থ। নিজের অস্তিত্বে টিকে থাকতে ভাইকে হত্যা-নির্যাতন করিও না, তোমার অস্তিত্বের সময় খুব বেশি পাবে না।
মনে রেখো অবৈধ উপার্জিত সম্পদের হিসেব তোমাকেই দিতে হবে। ওয়ারিশগণ শুধু সঞ্চিত সম্পদই ভাগাভাগি করবে, পাপের ভাগ কেউই নিবে না। মানুষের সম্পদ সংগ্রহ করা দেখে মনে হয় ওরা মরার খবরই জানে না, কাউকে মরতে দেখেও নি। অল্প কিছুদিন আগে দেখা, অসুস্থ শাশুড়িকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিল কণ্যা জামাতা বগুড়া জিয়া মেডিকেল কলেজে ভর্তি করতে। শাশুড়ি মৃত্যু শয্যায়, রোগী বহনকারী গাড়িতে নিয়ে যেতে রাস্তায় দূর্ঘটনা বসত গাড়ির চালক সহ রোগীর কন্যা জামাতার মৃত্যু হয়। অতপর চিকিৎসা করে শাশুড়ি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আজও বেঁচে আছে, জামাতার আর ফিরে আসা হলো না। গত ২৭ এপ্রিল ২০২৩ বৃহস্পতিবার ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন উপজেলার চরফ্যাশন আঞ্চলিক মহাসড়কে চলন্ত বাসের ধাক্কায় মটর সাইকেল আরোহী দু’জনের মৃত্যু হয়। নিকট আত্মীয়ের জানাযায় অংশগ্রহণে যাচ্ছিলেন জামাই-শশুড়। পত্রিকার খবর সুত্রে জানা যায়, মনির শরিফ (৫০) ও আজগর আলী (৩০) ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়। সে সুত্রে বিত্তশালী, মজুদদার, দুনিয়াদার ও শিল্পপতি-মহাজনদের স্মরণ করিয়ে দেয়া যাচ্ছে ¯্রষ্টার প্রিয় মাখলুখ মানুষ, তাদের সাথে প্রতারণা ও চাতুরতা করিও না, তোমার সম্পদের মালিক তুমি নও, কে মালিক হবে তাও বলতে পারবে না। বলতে পারো কি? তোমার জীবনের নিশ্চয়তা কোথায়? হক্ক ও হালাল পথে উপার্জন করো, হিসেব করে যাকাত ওসুল করো নইলে রক্ষা পাবে না ওপারে।
লেখক ঃ কথাসাহিত্যিক ও কলামিষ্ট,শাহজাদপুর, সিরাজগঞ্জ।আলাপচারিতা: ০১৭৮২-৪৫৭৭৮৩

‘মিনি এমপি’ থেকে সাবধান! 
আবুল কালাম আজাদ
গুরুদাসপুরে তাঁকে ‘মিনি এমপি’ বলেন স্থানীয়রা। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল তাঁর কথা ও কাজের মাধ্যমে নানা আলোচিত ঘটনার জন্ম দিয়েছেন এলাকায়। এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়োগবাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। সর্বশেষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুজিব জন্মশতবর্ষের উপহার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বিনামুল্যের ঘর দেওয়ার নামে ভুমিহীন-গৃহহীনদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তিনি। পরে সেই টাকা ফেরত দিয়েছেন ইউএনও শ্রবনী রায়।
গুরুদাসপুরে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে দরিদ্র গৃহহীনদের মাঝে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে দুই কক্ষ বিশিষ্ট আধা পাকা টিন শেড ঘর দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছেন মিনি এমপি খ্যাত নজরুল ইসলাম। উপজেলার বৃন্দাবনপুর গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের স্ত্রী জয়নব বেগমের কাছ থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেন নজরুল। এ ছাড়া স্থানীয় অসহায় আরও সাত নারীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে আদায় করেন তিনি।ভুক্তভোগী সাত নারী হলেন নাজিরপুর ইউনিয়নের ল²ীপুর গ্রামের রেজাউল করিমের স্ত্রী আসমা বেগম, ছাইফুল হোসেনের স্ত্রী ইঞ্জিরা বেগম, মৃত হাসমত আলীর স্ত্রী রাবিয়া বেগম, মৃত আবেদ আলীর স্ত্রী রিজিয়া বেগম, মৃত তারা মিয়ার স্ত্রী হাবিয়া বেগম, আব্দুল হামিদের স্ত্রী সাহারা বানু ও ইয়াছিন আলীর মেয়ে বিউটি খাতুন।
জয়নব বেগম গত বছর বাদী হয়ে নজরুলের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করেন। এই মামলায় গত ২ এপ্রিল আদালতে জামিন চাইতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন নজরুল। এরপর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। ১৬ দিন কারাভোগের পর গত ১৮ এপ্রিল জামিনে বেরিয়ে আসেন নজরুল ইসলাম। এরপরই ফেসবুক লাইভে এসে বলেন, ‘জেল থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আবেদন পাঠানোর পর গুরুদাসপুর থানার ওসির বদলি হয়ে গেছে।’ ভিডিওটি মুহূর্তেই সামাজিক গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এরপর নজরুলকে দলে আগের পদে বহাল করা হয়। গত ৪ মে গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের পরিচিতি সভায় তাঁকে সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমপি আব্দুল কুদ্দুস।
এ দিকে টাকা না পেয়ে গত ৩ মে বুধবার ভুক্তভোগী সাহারা বেগম ও মমতাজ বেগম গুরুদাসপুর আমলি আদালতে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায়ের অভিযোগ এনে নজরুলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ৪ মে বৃহস্পতিবার নাটোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নূর মোহাম্মদ ইউএনওর কার্যালয়ে অভিযোগকারীদের বক্তব্য শোনেন। তখন ইউএনও শ্রাবণী রায় ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান উপস্থিত ছিলেন। ৫ মে শুক্রবার ওই সাতজনের মধ্যে পাঁচজনের টাকা ফেরত দেন ইউএনও শ্রাবণী রায়। দিনটি সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির দিন ইউএনওর সরকারি বাসভবনে ভুক্তভোগী নারীদের ডেকে নিয়ে এসব টাকা ফেরত দেওয়া হয়। তবে সাহারা বেগম ও মমতাজ বেগমের টাকা দেওয়া হয়নি। টাকা ফেরত পেতে তাঁদের শর্ত দেওয়া হয়েছে নজরুলের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
ইউএনও যখন তাঁর বাসভবনে ভুক্তভোগীদের ডেকে টাকা ফেরত দিচ্ছিলেন তখন স্থানীয় সাংবাদিকেরা তাঁর বাড়ির ফটকে উপস্থিত হন। সাংবাদিকদের উপস্থিতির খবরে ভুক্তভোগীদের ইউএনওর বাসভবনের প্রাচীর টপকে বের করে দেওয়া হয়।
ঘুষের টাকা ফেরত নেওয়া নারীরা জানান, ইউএনও বৃহস্পতিবার রাতে তাঁদের ফোনকল করে টাকা নেওয়ার জন্য শুক্রবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবনে যেতে বলেন। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আসমা বেগম, ইঞ্জিরা বেগম, রাবিয়া বেগম, রিজিয়া বেগম, হাবিয়া বেগম, সাহারা বেগম ও মমতাজ বেগম ইউএনওর বাসভবনে যান। সেখানে প্রায় ৩ ঘণ্টা ধরে অভিযোগকারীদের সঙ্গে বৈঠক করেন ইউএনও। বিষয়টি গোপন রাখার শর্তে অভিযোগকারী ৭ জনের মধ্যে ৪ জনকে ৫০ হাজার টাকা করে এবং একজনকে ৪০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
প্রাচীর টপকে পার হওয়া নারীদের মধ্যে আসমা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, সাংবাদিকদের দৃষ্টি এড়াতে ইউএনওর পরামর্শে তাঁর গাড়িচালক জয়নাল হোসেনের সহায়তায় মই বেয়ে প্রাচীর টপকে বেরিয়ে যান তিনি। ভুক্তভোগী নারীরা আরও জানান, গত বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুম আহমেদ অভিযোগের বিষয়ে শুনানির পর রাতে নজরুল ইসলাম তাঁদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে আসেন এবং ইউএনওর মাধ্যমে তাঁরা সবাই টাকা ফেরত পাবেন বলেও আশ্বাস দেন। ইউএনও শ্রাবণী রায় জানান, নজরুল ইসলামের কাছ থেকে আদায় করেই টাকাগুলো ভুক্তভোগীদের ফেরত দেওয়া হয়েছে। এখানে কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি। টাকা ফেরত দিতে এত গোপনীয়তা কেন তার কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি ইউএনও। তিনি বলেছেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ আমাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে। আমি শুধু আমার সরকারি দায়িত্ব পালন করেছি। কোনো নেতার প্রতি দুর্বলতা থেকে আমি কিছু করিনি।’ টাকা ফেরত দেয়ার ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে ভাইরাল হলে দলের হাই কমান্ডের নির্দেশে গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সকল পদ ও পদবি থেকে বহিস্কার করা হয়েছে নজরুলকে। এলাকাবাসির ধারণা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আবারও নজরুলকে দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত নজরুল বলেন ‘আমি পুকুর খননে বাধা দেওয়ায় সাংবাদিক ও স্থানীয় প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিরুদ্ধে আমার প্রতিপক্ষ গৃহহীনদের দিয়ে মামলা করিয়ে আমাকে জেল খাটিয়েছে। জেলে যাওয়ার আগে আমি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে পুকুর খননের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়ার ব্যাপারে চিঠি দিই। এই চিঠিতে গুরুদাসপুর থানার তৎকালীন ওসি আব্দুল মতিনের সংশ্লিষ্টতার কথা উল্লেখ ছিল। এরপর তিনি বদলি হয়েছেন। আমি জেল থেকে বের হয়ে লাইভে বলেছিলাম যে, আমি ওসিকে বদলি করিয়েছি। শুক্রবার ইউএনও আমার থেকে কোনো টাকা নিয়ে ভুক্তভোগী কাউকে দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। তবে ইউএনও অত্যন্ত ভালো মানুষ।’ তাহলে ইউএনও কার স্বার্থ রক্ষা করতে কার টাকা ভূক্তভোগীদের দিলেন? আবার কেনইবা মূল অভিযোগকারিদেরকে মামলা তুলে নেওয়ার শর্তের বেড়াজালে ফেলে তাদের টাকা ফেরত দিলেন না? তিনি কী নিজেকেও অভিযুক্ত করলেন না?এলাকায় তাঁকে ‘মিনি এমপি’ ডাকা হয় কেন জানতে চাইলে নজরুল পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, ‘আমি মিনি এমপি হলে আমার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করবে কী করে? আমি এমপি কুদ্দুসের রাজনীতি করি।’
নাজিরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী বলেন, ‘নজরুল পেশায় একজন ফার্নিচার ব্যবসায়ী। কিন্তু এলাকায় প্রভাবশালী। প্রতারণা করে বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে হয়রানি করেন। প্রশাসনও তাঁর কথায় চলে। এমপির ঘনিষ্ঠ এই নজরুলের বিরুদ্ধে এলাকার মানুষের বিস্তর অভিযোগ রয়েছে।’ গুরুদাসপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহনেওয়াজ আলী বলেন, ‘নজরুল সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুসের ডান হাত হিসেবে পরিচিত। তিনি প্রতারক হিসেবে নানা অপকর্মে জড়িত। আমাদের লজ্জা হয় , প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের আশ্রয়ণ প্রকল্প বেচে যিনি গরিবদের থেকে টাকা আদায় করার পরও সাংসদের সঙ্গে থাকেন।’এ ঘটনার পর থেকে ‘ মিনি এমপি’র কাহিনি টক অব দ্যা কান্ট্রি ছড়িয়ে পড়েছে। তাই কথিত মিনি এমপি থেকে সব দলের নেতারা সাবধান!

# আবুল কালাম আজাদ, গুরুদাসপুর, নাটোর, ০১৭২৪ ০৮৪৯৭৩# ১২/৫/২৩#

চলনবিলে হারিয়ে যাচ্ছে লাঙল দিয়ে জমি চাষ 

মো. আকছেদ আলী

জমি চাষের ঐতিহ্যবাহী একটি চিরায়ত পদ্ধতি ছিলো গরু-মহিষ, জোয়াল ও কাঠের লাঙল দিয়ে জমি চাষ। এটি ছিলো অনেক উপকারী এক পদ্ধতি। কারণ লাঙলের ফলা জমির অনেক গভীর অংশ পর্যন্ত আলগা করতো। গরুর পায়ের কারণে জমিতে কাদা হতো অনেক এবং গরুর গোবর জমিতে পড়ে জমির উর্বরতা শক্তি অনেক বৃদ্ধি করতো।
কিন্তু কালের বিবর্তনে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার এই ঐতিহ্যটি। পাবনার ভাঙ্গুড়ায় লাঙ্গল দিয়ে জমি চাষ এখন আর চোখে পড়ে না। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির আগমনে হারিয়ে গেছে এই চিরচেনা দৃশ্যটি। এ দৃশ্য চলনবিলের সবখানেই। একসময় দেখা যেত সেই কাক ডাকা ভোরে কৃষকরা গরু ও কাঁধে লাঙল-জোয়াল নিয়ে বেরিয়ে পড়তো মাঠের জমিতে হালচাষ করার জন্য। বর্তমানে আধুনিকতার স্পর্শে ও বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে কৃষকদের জীবনে এসেছে নানা পরিবর্তন। আর সেই পরিবর্তনের ছোঁয়াও লেগেছে কৃষিতে। তাই সকালে কাঁধে লাঙল-জোয়াল নিয়ে মাঠে যেতে আর দেখা যায় না কৃষকদের।কৃষি প্রধান বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে গরু, লাঙল ও জোয়াল। এই লাঙল-জোয়াল নিয়ে রয়েছে অসংখ্য কাব্য, সাহিত্য-সংস্কৃতি। বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটি পত্রিকার নামই ছিল ‘লাঙ্গল’। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হালচাষের পরিবর্তে এখন ট্রাক্টর অথবা পাওয়ার টিলার দিয়ে অল্প সময়ে জমি চাষ করা হয়। এসেছে ধান মাড়াইয়ের অত্যাধুনিক হারভেস্টার। এক সময় দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে কৃষক গরু, মহিষ পালন করত হালচাষ করার জন্য।
আবার অনেকে গবাদিপশু দিয়ে হালচাষকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়ে ছিলেন। এছাড়া অনেকে, ধান গম, ভুট্টা, তিল, সরিষা, কলাই, আলু প্রভৃতি চাষের জন্য ব্যবহার করতেন। নিজের সামান্য জমির পাশাপাশি অন্যের জমিতে হালচাষ করে তাদের সংসারের ব্যয়ভার বহন করত। হালের গরু দিয়ে দরিদ্র মানুষ জমি চাষ করে ফিরে পেত তাদের পরিবারের সচ্ছলতা।আগে দেখা যেত কাক ডাকা ভোরে কৃষক গরু, মহিষ, লাঙল, জোয়াল নিয়ে মাঠে বেরিয়ে পড়তো। এখন আর চোখে পড়ে না সে দৃশ্য। জমি চাষের প্রয়োজন হলেই অল্প সময়ের মধ্যেই পাওয়ার টিলারসহ আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি দিয়ে চালাচ্ছে জমি চাষাবাদ। তাই কৃষকরা এখন পেশা বদল করে অন্য পেশায় ঝুঁকছেন। ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গরু, মহিষ, লাঙল, জোয়াল দিয়ে জমিতে হাল চাষ।পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ গ্রামের কৃষক আজাদ প্রামানিক বলেন, ‘ছোটবেলায় হালচাষের কাজ করতাম। বাড়িতে হালচাষের বলদ গরু ছিল ২-৩ জোড়া। চাষের জন্য দরকার হতো এক জোড়া বলদ, কাঠের তৈরি লাঙল, বাঁশের তৈরি জোয়াল, মই, লরি (বাঁশের তৈরি গরু তাড়ানোর লাঠি), গরুর মুখের টোনা ইত্যাদি। আগে গরু দিয়ে হালচাষ করলে জমিতে ঘাস কম হতো। অনেক সময় গরুর গোবর জমিতে পড়তো, এতে করে জমিতে অনেক জৈবসার হতো। খেতে ফলন ভালো হতো।’ শুধু তাই নয় আগেকার দিনে চলনবিলের বিশাল গোচারণ ভূমিতে অগনিত গরু-মহিষের পাল দেখা যেত।
এখন নতুন নতুন আধুনিক বিভিন্ন মেশিন এসেছে। সেই মেশিন দিয়ে এখানকার লোকজন জমি চাষাবাদ করে। তাই গরু, মহিষ, লাঙল, জোয়াল নিয়ে জমিতে হাল চাষ করা এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। গরুর লাঙল দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৬৬ শতাংশ জমি চাষ করা সম্ভব। আধুনিক যন্ত্রপাতির থেকে গরুর লাঙলের চাষ গভীর হয় এবং তা পরিবেশ বান্ধব। জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি ও ফসলের চাষাবাদ করতে সার, কীটনাশক কম লাগতো। দিনে দিনে এভাবেই ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের গ্রামবাংলার কৃষ্টি ঐতিহ্য। আর গরুর গাড়ি শুধু দেখা যায় পহেলা বৈশাখ পালন করতে। গরু-মহিষ, লাঙ্গল ও জোয়াল ছিলো আমাদের ঐতিহ্য ও পরিবেশসম্মত কৃষি পদ্ধতি। সেই সময় কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ার স্পর্শ ছিলো না। কিন্তু বর্তমান সময়ে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি পুরাতন চাষ পদ্ধতিকে আমূল পরিবর্তন করেছে। কৃষকরা আগে যা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি বর্তমানে কৃষি প্রযুক্তির উন্নয়নের ছোঁয়াই তার চেয়ে অনেক বেশি পাচ্ছেন। অধিক ফলনশীল জাতের ফসল চাষ করে কম সময়ে-অল্প খরচে অধিক লাভবান হচ্ছেন শুধুমাত্র আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির কল্যাণে। আগামীতে কৃষিতে আরও বড় রকম পরিবর্তন আসবে যা কৃষকদের ডিজিটাল এবং স্মার্ট বানিয়ে দেবে। এভাবে গোটা কৃষি সেক্টর অত্যাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে যাবে যা অভিনব কৃষি বিপ্লব ঘটাবে তাতে সন্দেহ নেই। আর সেদিন হয়তো কাঠের লাঙ্গল দেখা যাবে শুধুই যাদুঘরে।তখনকার প্রজন্ম বুঝতেই পারবে না, এক সময় কাঠের লাঙল ছিল বাংলার কৃষি ঐতিহ্য, কৃষকের জীবন-জীবিকার অপরিহার্য অনুসঙ্গ।

লেখক ঃ বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক ও কলামিস্ট। অষ্টমনিশা মির্জাপুর, ভাঙ্গুড়া, পাবনা।

চাটমোহরে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট উদ্বোধন 

জাহাঙ্গীর আলম, চাটমোহর : পাবনার চাটমোহরে শুরু হয়েছে ক্লেমন মিশুক টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। গত শুক্রবার (১২ মে) সকাল সাড়ে দশটায় চাটমোহর সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের নিজস্ব পৌর সদরের বালুচর খেলার মাঠে এই টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাসুদ পাইলট। তিনি বলেন, চাটমোহরে না আসলে জানতে পারতাম না যে এখানে এত সুন্দর ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন হতে পারে। আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই তৃণমুল পর্যায়ে ক্রিকেটকে এভাবে ছড়িয়ে দেবার জন্য। আগামীতে এখান থেকেই জাতীয় দলের খেলোয়াড় বেরিয়ে আসবে বলে মনে করেন তিনি।প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চাটমোহর পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন সাখো ।
মিশুক ক্রীড়া চক্রের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাবলু’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছা. মমতাজ মহল।
মিশুক ক্রীড়া চক্রের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বাবলু বলেন, মিশুক ক্রীড়া চক্র পাবনার এক সময়ের ঐতিহ্যবাহী ক্রিকেট দল। নতুন করে আমরা শুরু করেছি। আগামীতে স্কুল পর্যায় থেকে ক্রিকেট খেলোয়াড় খুঁজে বের করার উদ্যোগ নেবো। তিনি আরো বলেন, মিশুক ক্রীড়া চক্রের উদ্যোগে আয়োজিত ক্লেমন মিশুক টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) আম্পায়ার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। টুর্নামেন্টের টাইটেল স্পন্সর ক্লেমন। টুর্নামেন্টে ৮টি দল অংশগ্রহণ করবে। রাজশাহীর ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমী, পাবনার টেবুনিয়ার বাড়ইপাড়া নবদূত স্পোর্টিং ক্লাব (বিএনএসসি), পাবনার সংগ্রাম ক্রিকেট ক্লাব, ঈশ্বরদী ক্রিকেট ক্লাব, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের আব্দুর রহমান (এমসিএ) স্মৃতি ক্রিকেট একাদশ, চুয়াডাঙ্গার সিটি বয়েজ ক্রিকেট ক্লাব, পাবনা মোহামেডান স্পোটিং ক্লাব ও স্বাগতিক মিশুক ক্রীড়া চক্র চাটমোহর।

নাটোর-৪ আসনে মেয়র জাকিরকে
নৌকার প্রার্থী করার দাবী

আবুল কালাম আজাদ ঃ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম ও গুরুদাসপুর ) আসনে এবার বনপাড়া পৌরসভার টানা তিনবার নির্বাচিত হ্যাট্রিক মেয়র কেএম জাকির হোসেনকে আওয়ামীলীগের মনোনয়নের দাবী জানানো হয়েছে।
বড়াইগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ এই দাবী জানিয়েছেন। এর আগে বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দসের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবী জানান এই নির্বাচনী এলাকার আওয়ামীলীগের চার শীর্ষ নেতা ও কর্মী-সমর্থকরা। গত ২৯ এপ্রিল গুরুদাসপুর পৌরসভা কার্যালয়ে সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস বিরোধীদের সভায় এই দাবী জানিয়েছিলেন। ওই সভায় অন্যান্যের মধ্যে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গুরুদাসপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সরকার এমদাদুল হক মোহাম্মদ আলী, বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডাঃ সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী,গুরুদাসপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন, গুরুদাসপুর পৌর মেয়র শাহনাজ আলী,রাবি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামীলীগের কোষাধ্যক্ষ আহম্মদ আলী মোল্লা প্রমুখ।
শনিবার (১৩ মে) নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার বনপাড়ায় স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণের লক্ষ্যে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান সরকারের ৪৪টি উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার পত্রের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এই দাবী জানানো হয়। একাট্টা হয়ে বনপাড়ায় সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ডা. আইনুল হক ফাউন্ডেশন চত্বরে ৮০’র দশক থেকে বর্তমান পর্যন্ত ছাত্রলীগের প্রাক্তন নেতাকর্মীদের ঈদ পূণর্মিলনী ও মতবিনিময় সভায় ওই মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বনপাড়া পৌর মেয়র কে এম জাকির হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে এই প্রচার পত্রের মোড়ক উন্মোচন করেন। প্রচার পত্রের এই মোড়ক উন্মোচনের পর বনপাড়া বাইপাস চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যূরালসহ স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতাদের কবর ও ম্যূরালে পুষ্পস্তবক অর্পনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সুচনা হয়। পরে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব সরকারি মহিলা কলেজ চত্বরে সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিভিন্ন স্তরের কয়েক’শ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটোর-৪ আসনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বনপাড়া পৌরসভার মেয়র কেএম জাকির হোসেনকে আওয়ামীলীগ দলীয় প্রার্থী করার দাবী তোলেন ছাত্রলীগের সাবেক নেতৃবৃন্দ। এসময় উপস্থিত নেতা-কর্মীদের শ্লোগানে কলেজ ক্যাম্পাস প্রকম্পিত হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বড়াইগ্রাম উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মিয়াজী, পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বাবলু, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মাসুদ রানা মান্নান, আবু হেলাল, জিল্লুর রহমান জিন্নাহ, শফিক সরদার প্রমুখ। সভায় বক্তারা বলেন, এই আসনটি দখলে রাখতে পৌর মেয়র কেএম জাকিরকে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী করলেই সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী সব কিছু জানেন ।তিনি চাইলে কেএম জাকির হোসেনকে নৌকার মনোনয়ন দিতে পারেন।
পরে পৌরমেয়র কেএম জাকির হোসেন নেতাকর্মীদের নিয়ে শহীদ ডাঃ আয়নাল হকের বেদীতে এবং পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পূষ্পার্ঘ অর্পণ ও এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। এরপর শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মহিলা সরকারি অনার্স কলেজ চত্বরে আয়োজিত উন্মুক্ত আলোচনা সভায় অংশ নেন তিনি। এসময় আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান সরকারের ৪৪টি উন্নয়নমূলক কাজের প্রচার পত্রের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
তাড়াশে ধর্ষণ ও হত্যার দায় স্বীকার 

তাড়াশ প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মোছা. সুমাইয়া পারভীন (১৩) নামের এক কিশোরীকে ধর্ষণের পর হত্যার দায় স্বীকার করে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছে মামলার একমাত্র আসামী মো. ছাবেন আলী (৩২)।
বুধবার রাতে সুমাইয়ার বাবা বেলাল হোসেন বাদী হয়ে ছাবেন আলীকে একমাত্র আসামী করে তাড়াশ থানায় একটি ধর্ষণ এবং হত্যা মামলা দায়ের করেন।
তাড়াশ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নুরে আলম জানান, মূলতঃ সুমাইয়াকে ধর্ষণের জন্য আসামী ছাবেন আলী দীর্ঘদিন সুযোগ খুঁজছিল। গত মঙ্গলবার দুপুরে আসামী সেই সুযোগটি কাজে লাগান। সুমাইয়ার দাদি বেগম খাতুন (৬৫) সুমাইয়াকে বাড়িতে একা রেখে মাঠে ছাগল চড়াতে মাঠে যান। আর সে সুযোগে ছাবেন আলী সুমাইয়ার ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের সময় বাঁধা দেবার কারণে ধর্ষিতাকে মারধরও করা হয়েছিল। তাঁর শরীরের বিভিন্ন অংশে একাধিক আঘাতের চিহৃও রয়েছে। এ ছাড়া ধর্ষণের পর কিশোরী সুমাইয়া ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ করার কথা বলায় তাঁকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ ফেলে রাখা হয় বলে স্বীকারোক্তি দেন ধর্ষক ছাবেন আলী।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে তাড়াশ থানা পুলিশ পৌর এলাকার কোহিত মহল্লার দিঘিপাড়ায় একটি বাড়িতে কিশোরীর মরদেহ পড়ে থাকার খবর পান। পরে সেখানে পুলিশ গিয়ে সুরতহাল প্রতিবেদন করার সময় কিশোরী সুমাইয়াকে ধর্ষণ করা হয়েছে এমন আলামত পান। তখন পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠান। পাশাপাশি একই মহল্লার পশ্চিম পাড়ার ওসমান আলীর ছেলে ছাবেন আলীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। আর সেখানে ছাবেন আলী সুমাইয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা দিয়ে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দেন। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশ সুমাইয়ার মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘটনে শতভাগ পেশাদায়িত্বভাবে কাজ করেছেন। তাই ২৪ ঘন্টার কম সময়ের মধ্যেই বিষয়টি উন্মোচন হয়েছে। ইতিমধ্যেই মামলার একমাত্র আসামীকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি মামলাটি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।

বড়াইড়গ্রামে পাঙ্গিয়ার দিঘী পুন:খনন কাজের উদ্বোধন 

বড়াইগ্রাম প্রতিনিধিঃ নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার নগর ইউনিয়নের খিদির আটাই মৌজার ৫৪ একর পাঙ্গিয়ার দিঘীর পুন:খনন কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে।
গত রবিবার দুপুরে আটাই গ্রামে (পাঙ্গিয়ার দিঘীর পাড়ে) অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী আলোচনা সভায় নগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মোঃ ইয়াসিন আলী সরকার এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর)এর সাংসদ অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প (বিএমডিএ) এর পরিচালক মোঃ শরিফুল হক, নাটোর রিজিয়নের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মনিরুজ্জামান মনির, সহকারী প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ, বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু সিদ্দিক, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস মিয়াজী ও নগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নিলুফার ইয়াসমিন ডালুসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
চলনবিলে ধান কাটা শেষে
এবার বাড়ি ফেরার পালা 

গোলাম মোস্তফা, বিশেষ প্রতিনিধিঃ উত্তরাঞ্চলের শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার কৃষকের ধান কেটে নিজেদের খোরাকের ধান নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে মৌসুমি কৃষি শ্রমিকদের। বিশেষ করে, এ কাজের বিনিময়ে তাদের পরিবারের প্রায় সারা বছরের খাওয়ার যোগাড় হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। ফলে যাবার বেলায় তাদের মুখে ছিলো তৃপ্তির হাসি।
এদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছেন, আবহাওয়া অনুক‚লে ছিলো, শ্রমিক সংকট নাই। এজন্য তুলনামূলক আগেই ধান কাটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার পৌর এলাকার সাঁথিয়া গ্রামের শ্রমিক হাবু মিঞা, লিটন, মাইদুল, বাতেন আলী, এদেল, আলিম ও আছাদ বলেন, তারা এক দলে ১৯ জন শ্রমিক এসেছিলেন চলনবিলে। প্রতিবছর বোরো মৌসুমে তাড়াশের কৃষকের ধান কাটতে আসেন। ২০ দিন ধান কেটে ১৫ মণ করে ধান সংগ্রহ করেছেন এক একজন শ্রমিক। এ কাজ করে অধিকাংশ শ্রমিক পরিবারের সারা বছরের খাওয়ার চালের ব্যবস্থা হয়ে গেছে। তারা খুব খুশি। শ্রমিকরা আরও বলেন, সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমড়া ইউনিয়ন, ধুলাউড়ি, ভুলবাড়িয়া, ধোপাদহ, করমজা, কাশিনাথপুর, গৌরীগ্রাম, নন্দনপুর, ক্ষেতুপাড়া ও আতাইকুলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে অসংখ্য শ্রমিক ধান কাটতে আসেন তাড়াশ উপজেলাতে।
তাড়াশ পৌর এলাকার আসানবাড়ি গ্রামের কৃষক ছাত্তার প্রামানিক, এনছাব প্রামানিক, জিল্লুর রহমান ও কামরুল ইসলাম বলেন, বোরো মৌসুমের ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য আমরা বহিরাগত মৌসুমী শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল। সাঁথিয়া উপজেলার শ্রমিক দলগুলো প্রায় ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে আমাদের বিস্তীর্ণ মাঠের জমির ধান কেটে দিচ্ছেন। তারা যথেষ্ট পরিশ্রমী। সরেজমিনে গত শনিবার দুপুরের দিকে দেখা গেছে, পৌর এলাকার আসানবাড়ি গ্রাম থেকে একদল শ্রমিক চুক্তি মতো কৃষকের ধান কাটা শেষ করে নিজেদের বাড়ি ফিরবেন। সাধারণত তারা খোরাকের ধান ট্রাকে নিয়ে বাড়ি চলে যায়। যাওয়ার সময় তারা মাথায় গামছা বেধে আনন্দে মেতে রয়েছেন।
জানা গেছে, কৃষকের বাড়িতে কাজের সুবাদে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে মায়ার বন্ধন গড়ে ওঠে শ্রমিকদের। তাইতো শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় বিদায় জানাতে দাঁড়িয়ে থাকেন কৃষক পরিবারের লোকজন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন সাপ্তাহিক চলনবিল বার্তাকে বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে ২২ হাজার ৩ শ ৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন কৃষকরা। এরই মধ্যে ৮১ ভাগ ধান কাটা হয়ে গে

ভাঙ্গুড়ায় সরকারি রাস্তার গাছ কেটে সাবাড়! 
ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের সরকারি রাস্তার পাশের বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত: ৮ থেকে ১০টি গাছ কেটে নিয়েছেন । এই প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষাকারী সরকারি সম্পত্তি যেন দেখার কেউ নেই। গত বুধবার (১০ মে) উপজেলার ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের কৈডাঙ্গা ওয়াবদার বাঁধের উপরের নিম,কড়ই ও বড়ইসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ গুলি কেটে নিয়েছেন । কৈডাঙ্গা এলাকার বাসিন্দা মৃত তোরাপ আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম ও তার প্রতিবেশী আবুল হোসেন মিলে সরকারি গাছগুলি গোপনে বেতুয়ান গ্রামের গাছ ব্যবসায়ী আদম আলীর নিকট বিক্রয় করায় এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয়দের ভাষ্য সরকারি সম্পত্তির গাছ কিভাবে একজন সাধারণ মানুষ বিক্রি করেন তা বোধগম্য নয়।
জানা গেছে, ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের মৃত তোরাপ আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম কৈডাঙ্গা এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রায় ৩ একর খাল লিজ নিয়ে মাছের চাষ করে আসছেন। পাশ দিয়ে বয়ে গেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাওজন রেল লাইন টু বেতুয়ান রাস্তা। রাস্তার উভয় পাশে দিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ধনকারি নানান প্রজাতির গাছ মনোরম শোভা বর্ধন করছে। কিন্তু ওই খাল লিজ গ্রহণকারি শহিদুল ইসলাম ও আবুল হোসেন সরকারি সম্পত্তির ২৫-৩০ বছর বয়সী নিম, কড়ই,বড়ইসহ গোপনে গাছগুলি মোটা অংকের টাকায় বিক্রয় করেছেন। আর ক্রয়সূত্রে বেতুয়ান গ্রামের গাছ ব্যবসায়ী আদম আলী রাতের ও দিবসের আলোতে গাছগুলি কেটে নিয়েছেন। প্রকৃতির অন্যতম শোভাবর্ধনকারী সরকারি সম্পত্তির গাছগুলো যেনো দেখার কেউ নেই।গত বুধবার বিকালে সরেজমিন ওই এলাকা ঘুরে ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ঘটনার বিষয়ে নাম না প্রকাশে একাধিক ব্যক্তি বলেন, সরকারি সম্পত্তি একজন ব্যক্তি কিভাবে বিক্রয় করতে পারেন ? এ ব্যাপারে সরকারি গাছ বিক্রয়কারী শহিদুল ইসলাম বলেন, তার মাছ চাষ করার সমস্যা হচ্ছিল । তাই গাছগুলি বিক্রয় করেছেন। সরকারি সম্পত্তির গাছ বিক্রয় করতে পারেন কি? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, যা হবার তা হয়েছে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।ঘটনার বিষয়ে ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, রাস্তার গাছ কাটার বিষয়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগের । তাই তারা কোনো ব্যবস্থা নিলে তাদের সহায়তা দেওয়া হবে।
উপজেলা বন কর্মকর্তা মো. জাহিদ হোসেন বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সরকারি গাছ কাটার সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, সরকারি রাস্তার গাছ কাটার সুযোগ নেই। গাছ কাটার বিষয়টি জেনে স্থানীয় বন কর্মকতাকে ঘটনা স্থলে পাঠিয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পানি উন্নয়ন বোর্ড পাবনার ভাঙ্গুড়া পওর শাখা,ডেমরা পওর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আল আমিন হোসাইন বলেন, সরকারি গাছ কাটা অন্যায়। এ ব্যাপারে লোক পাঠিয়ে অফিসিয়ালী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তাড়াশে দিন-দুপুরে তালা ভেঙে
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের টাকা চুরি 

তাড়াশ প্রতিনিধিঃ দিন-দুপুরে সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মেসার্স স্বর্ণালী এন্টারপ্রাইজ নামক এক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্যাশ বাক্স থেকে ৪ লাখ টাকা চুরি করেছে দুর্বৃত্তরা। গত বুধবার (১০ মে) ভোর ৬টার দিকে উপজেলার তাড়াশ-রানীরহাট আঞ্চলিক সড়কের বিনসাড়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
আর এ ঘটনায় সাত জনকে সন্দেহ করে তাড়াশ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মেসার্স স্বর্ণালী এন্টারপ্রাইজ এর সত্বাধিকারী মো. শফিকুল ইসলাম।লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বুধবার সাপ্তাহিক হাট হওয়ায় মের্সাস স্বর্ণালী এন্টারপ্রাইজ এর সত্বাধিকারী মো. শফিকুল ইসলাম ধান কেনার জন্য বাড়ি থেকে সকাল সাড়ে ৬টায় দোকানে আসেন। তিনি দোকানের ক্যাশ বাক্সে ৪ লাখ ৫ হাজার টাকা রেখে বাজারেই ধান কিনছেন। এরপর সকাল ৭টার দিকে তাঁর দোকানের ম্যানেজার মো. মোস্তফা ফোন করে জানান ক্যাশ বাক্স ভেঙ্গে কে বা কারা সমস্ত টাকা চুরি করে নিয়েছে। আর ওই দোকানের সামনে উপজেলার কোহিত তেতুলিয়া গ্রামের মো. টিক্কা ও তাঁর ছেলে মো. ইমরান, কোহিত গ্রামের মো.আব্দুল, আসানবাড়ি গ্রামের ভ্যানচালক খবির উদ্দিন ও তার ছেলে, মো. নজরুল ইসলাম ও তার ছেলে, মো. শফি, মো. আবু সাইদ ধান বিক্রি করার জন্য ধান নিয়ে বসে থাকায় তাদেরকে সন্দেহ করে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়। এ প্রসঙ্গে তাড়াশ থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি , তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সলঙ্গায় হিরোইন সহ নারী গ্রেফতার 

সলঙ্গা প্রতিনিধিঃ সিরাজগঞ্জের সলঙ্গায় মাদক বিরোধী অভিযান চালিয়ে ২৮ লাখ টাকার হিরোইন সহ এক নারী মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত নারী গাইবান্ধার পলাশবাড়ি থানার বাগমারা গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী মনি আক্তার (৩১)।
গত শুক্রবার দিবাগত সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে রেব-১২ এর আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে সলঙ্গা থানার নিউ লাইন হসপিটালের সামনে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের উপর থেকে ২৮৫ গ্রাম হিরোইনসহ তাকে গ্রেফতার করা হয়।

শাহজাদপুরে ধর্ষণের সালিসে
২ লাখ টাকা জরিমানা

শাহজাদপুর প্রতিনিধিঃএকাধিক বিয়ে করার পরে ঘরে গর্ভবতী স্ত্রীকে রেখে কলেজ ছাত্রীর ঘরে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করার সময় আনিছুর রহমান নামের এক যুবককে আটক করে গ্রামবাসী।পরে গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে অভিযুক্ত যুবককে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও ১০ জোড়া জুতার বাড়ি দিয়ে বিচার কার্যকর করা হয়।
জানা যায়, গত শুক্রবার রাত আনুমানিক ১১টায় সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার রুপবাটি ইউনিয়নের বড়ধুনাইল গ্রামের আলাউদ্দিন ব্যাপারী ওরফে গদাই এর ছেলে আনিছুর রহমান পার্শ্ববর্তী বাগধুনাইল গ্রামের এক কলেজ ছাত্রীর ঘরে প্রবেশ করে।
এসময় কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে সে চিৎকার দেয়। পরে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে অভিযুক্ত যুবককে আটক করেন।
সরেজমিনে শনিবার সকালে বাগধুনাইল গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামপ্রধান, স্থানীয় ইউপি সদস্য ও উভয়পক্ষের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে শালিস অনুষ্ঠিত হয়। এসময় শালিসের রায় হয় অভিযুক্ত যুবকের ২ লাখ টাকা জরিমানা ও ১০ জোড়া জুতাপেটা। তৎক্ষনাত জুতা পেটা কার্যকর করে অভিযুক্ত যুবককে তারিয়ে দেয়া হয়।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী কলেজছাত্রী জানায়, দুইদিন যাবৎ উক্ত যুবক আমাকে মোবাইল ফোনে বিরক্ত করতো। শুক্রবার বাড়িতে কেউ ছিলনা, এসময় আমি নিজ ঘরে পড়ালেখা করছিলাম। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় ঘরের দরজা টোকানোর শব্দ হয়। আমি ভেবেছিলাম আমার ভাই এসেছেন, আমি দরজা খুলতেই আনিসুর রহমান ঘরে প্রবেশ করে আমাকে জাপটে ধরে। এসময় আমি চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাকে আটক করেন।

 

শাহজাদপুরে প্রতিবন্ধী শিশু
অপহরণের সময় আটক ১ 

শাহজাদপুর প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরে ১০ বছরের এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী শিশুকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হাতে আটক এক যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার হাবিবুল্লাহনগর ইউনিয়নের নগরডালা বাজার এলাকা থেকে ওই যুবকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।গ্রেফতারকৃত ওই যুবক শাহজাদপুর পৌর সদরের দ্বারিয়াপুর বাজারপাড়া মহল্লার মৃত রমজানের ছেলে শাহাদত হোসেন।
শিশুটির পিতা মাসুদ ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সন্ধ্যার পর থেকে বুদ্ধী প্রতিবন্ধী শিশুটিকে কোথাও খুজে পাওয়া যাচ্ছিলনা। খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে জানতে পারে যে ,শাহাদত নামের এক ব্যক্তি মেয়েটিকে রিকশাযোগে নগরডালা বাজারের দিকে নিয়ে গেছে। পরে পরিবারের লোকজন নগরডালা বাজারে উপস্থিত হলে শাহাদতের কাছে মেয়েটিকে দেখতে পেয়ে পরিবারের লোকজনের ডাকচিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে মেয়েটিকে উদ্ধার করে এবং শাহাদতকে আটক করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে শাহজাদপুর থানার এসআই আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে অপহরণের শিকার শিশুটিকে উদ্ধার ও অপহরণকারী শাহাদত হোসেনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।এই বিষয়ে শাহজাদপুর থানার ওসি (তদন্ত) সাজ্জাদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে দ্রæত থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে অপহরণের শিকার শিশুটিকে উদ্ধারসহ অপহরণকারী শাহাদতকে আটক করা হয়। তিনি আরও জানান, শনিবার শিশুটির মেজিস্ট্রেটের সামনে ২২ ধারায় জবানবন্দী গ্রহণসহ আসামীকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

চলনবিলে সবজির দাম বেড়ে চলেছে 

ভাঙ্গুড়া প্রতিনিধি: ঈদ পরবর্তী সময় ভাঙ্গুড়াসহ চলনবিলের সর্বত্র বেড়ে চলেছে সব ধরনের সবজির দাম। এতে করে হিমশিম খেতে হচ্ছে নিম্নআয় ও মধ্যবর্তী শ্রেণীর মানুষ।সংসারের খরচ যোগাতে গিয়ে কুলাতে পারছেনা অনেক পরিবার। ফলে বাজারে গিয়ে পর্যাপ্ত তরিতরকারি কিনতে না পারায় হতাশ হয়ে ফিরছে বাসায়। অনেকের মাসিক যে আয় তা দিয়ে না চলতে পারায় দোকানে বাকি করে মাস চালাতে হচ্ছে।
গত কয়েকদিনে হঠাৎ করেই দেশে চিনি ও তেলের বাজার অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর পাশাপাশি ঈদ পরবর্তী সময়ে ভাঙ্গুড়া ও চলনবিলের অন্যান্য উপজেলায় বেড়েছে আলুসহ প্রায় সবধরনের সবজির দাম। গত শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ভাঙ্গুড়া ও তাড়াশ বাজারে সপ্তাহ ব্যবধানে ২০ টাকার আলু ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মানভেদে কাচামরিচ কেজিপ্রতি ১২০থেকে ১৩০ টাকা, করলা, ঝিঙা, দেশি শসা ৮০ টাকা, পেপে ৬০ টাকা ও বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। আর মানভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে একেকটি লাউ।এদিকে দেশি আদা ৩২০, হাইব্রিড আদা ২৪০, দেশি রসুন ১৮০, আমদানি করা রসুন ২০০ এবং পেয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে।বাজার করতে আসা ক্রেতারা বলছেন, সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে গেছে। আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ দিনে ৫০০ টাকা আয় করলে খরচ হচ্ছে হাজার টাকা। ফলে আমরা এই সীমিত আয় দিয়ে সংসার চালাতে পারছিনা।
ক্রেতারা জানান, দেশে হঠাৎ করেই লাগামহীন বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেনা সরকার। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা ভাবনা করে সরকারের প্রতি বাজার নিয়ন্ত্রণের অনুরোধ জানাচ্ছি। বাজার দর নিয়ে বিক্রেতারা বলছেন, আমদানি কমের কারনে দাম বেশি। তবে এই সময়ে কিছু সবজির দাম বেশী হয় কিন্তু প্রায় সবধরনের সবজির দাম বেশী কেনো তা নিজেরাও বুঝতে পারছেন না বলে মন্তব্য করেন তারা।

গুরুদাসপুরে ঘুষখেকো
আ’লীগ নেতা নজরুল বহিষ্কার

গুরুদাসপুর প্রতিনিধিঃ নাটোরের গুরুদাসপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার নামে উপকারভোগীদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়া ও দলীয় শৃংঙ্খলা ভঙ্গ করায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলামকে স্থায়িভাবে বহিস্কার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুল মতিন বলেন, গত শনিবার উপজেলা আওয়ামীলীগের এক জরুরিসভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানাযায়, নজরুল ইসলামের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডে সরকার ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। এজন্য তাকে দল থেকে স্থায়ীভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। জানাযায়, এলাকায় নজরুল ইসলাম ‘মিনি এমপি নজরুল ইসলাম’ ওরফে ‘মিনি নজরুল’ নামে খ্যাত। তিনি ছয় মাস পূর্বে উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর দেওয়ার নাম করে দুস্থ ও দরিদ্র নারীদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে ঘুষ নেয়। অনেক চেষ্টা-তদবির করেও ঘর না পেয়ে টাকা ফেরত পেতে গত ৩ মে নাটোরে আমলী আদালতে মামলা করেন দুই ভুক্তোভোগী। বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও জেলা প্রশাসকের নজরে আছে। এর পর বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) নূর মোহাম্মদ মাসুম ইউএনও’র দপ্তরে অভিযোগকারীদের বক্তব্য গ্রহন করেন। এসময় অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম, ইউএনও শ্রাবণী রায়, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী হাসান শাকিল উপস্থিত ছিলেন। পরের দিন শুক্রবার সকালে ইউএনও শ্রাবণী রায় ভুক্তভোগীদের তার বাসভবনে ডেকে ৫ নারীর টাকা ফেরত দেন এবং নজরুলের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার না করায় দুই নারী টাকা ফেরত পাননি।

রায়গঞ্জে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ
স.ম আব্দুস সাত্তার ,রায়গঞ্জ ঃ সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত, আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নয় এমন পরিবারের সন্তানদের নিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের পায়তারার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত সোমবার সকাল ১১টায় রায়গঞ্জ প্রেসক্লাব চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা ছাত্রলীগের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ধানগড়া ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নাসিম সরকার। সম্মেলনে ছাত্রলীগের অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আ’লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ২০১৯ সালে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার কারণে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম হোসেন শোভন সরকারকে বহিস্কার করা হয়। ঐ সময়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি না থাকায় মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। উপজেলা আ’লীগের নেতৃবৃন্দ বারবার ও জেলা ছাত্রলীগকে তাগিদ দিলেও গত ৩৯ মাস যাবত উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন হয়নি। সম্মেলনে ত্যাগী, পরীক্ষিত ও শহীদ পরিবারকে মূল্যায়ন করে রায়গঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের দাবি জানান । সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ছাত্রনেতা আবুল কালাম আজাদ, ফয়সাল আহম্মেদ ফরহাদ, সাব্বীর আহম্মেদ স্বাধীন, রাসেদ রায়হান জয় ও উপজেলা, ইউনিয়ন, পৌর ও কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীবৃন্দ।

চাটমোহর কেমিস্টস্ এন্ড ড্রাগিস্টস্ সমিতির বার্ষিক সমাবেশ 

চাটমোহর প্রতিনিধি ঃ বাংলাদেশ কেমিস্টস্ এন্ড ড্রাগিস্টস্ সমিতি পাবনার চাটমোহর উপজেলা শাখার বার্ষিক সমাবেশ ২০২৩ গত শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চাটমোহর কেমিস্টস্ এন্ড ড্রাগিস্টস্ সমিতির সভাপতি মোঃ রফিকুল ইসলাম রফিক । সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক হেলালুর রহমান জুয়েলের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ মকবুল হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল হামিদ মাস্টার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ মমতাজ মহল, চাটমোহর পৌর মেয়র এ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন সাখো, চাটমোহর উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এসএম নজরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মোঃ আতিকুর রহমান আতিক, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ ইছাহক আলী মানিক, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ ফিরোজা পারভীন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জালাল উদ্দীন, কেমিস্টস্ এন্ড ড্রাগিস্টস্ পাবনা জেলা শাখার সিনিয়র সহ সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ সাইদুর রহমান খান পিন্টু, সহ সভাপতি তারেক ইবনে আনছার, চাটমোহর ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ জিয়ারুল হক সেন্টু প্রমুখ।

 

স্বাধীনতার ডাক

মোছাঃ সাদিয়াতুল কুবরা
তাড়াশ মহিলা ডিগ্রি কলেজ
একাদশ, বিজ্ঞান।

মুজিব শুধু নাম নয়, মুজিব মোদের চেতনা।
মুজিবের মাঝেই লুকিয়ে ছিল, স্বাধীনতার বাসনা।
দিয়েছিলে ডাক স্বাধীনতার, করেছিলে উৎসাহিত।
বজ্রকন্ঠে তোমার ঐ ডাক, হয়েছিল প্রতিধ্বনিত।
তুমিই মোদের মহান নেতা, স্বাধীনতার স্বপ্নকথা।
সকল বাঙালির হৃদয়ে তুমি, এক সূত্রেই গাঁথ্।া
ঘাতক সেনারা করেছে লুটপাট, করেছে বর্বরতা।
তোমার চেতনায় ছিনিয়ে আনলাম, লাল সবুজের পতাকা।
তুমি মোদের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, শ্রেষ্ঠ জাতির পিতা।
ধন্য তুমি ধন্য মুজিব,তুমিই মহান নেতা।
চলে গেলে তুমি মোদের ছেড়ে, চিরকালের তরে।
তোমাকে পাওয়ার আশা, বাঙালির যুগ যুগ ধরে।

 

 

 

 

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD