তাড়াশে চাষাবাদে কৃষকের সাফল্য সচ্ছলতা ফিরেছে সংসারে

Spread the love

গোলাম মোস্তফা, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) :
উত্তরাঞ্চলের শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার কৃষকরা ধান ও রবি মৌসুমের ফসল চাষাবাদ করে আশাতীত সাফল্য পেয়েছেন। বিশেষ করে, ধানের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পেয়ে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
এদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছেন, বায়োটেকনোলজি বা জৈব প্রযুক্তি কৃষিতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। কাঙ্খিত জাত উদ্ভাবন ও ফসলের ফলন বৃদ্ধিসহ কৃষির বিভিন্ন ক্ষেত্রে এ প্রযুক্তির ভ‚মিকা অপরিসীম। তাছাড়া কৃষিতে প্রণোদনা, ভতুর্কী মূলে কৃষি উপকরণ বিতরণ ও মাঠ পর্যায়ে সঠিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কৃষকদের। আবহাওয়াও অনুক‚লে ছিলো। ফলে চাষাবাদ করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। চলতি বোরো মৌসুমের ধান ও রবি মৌসুমের ভুট্টারও বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
দেশিগ্রাম ইউনিয়নের গুড়পিপুল গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম ও তালম ইউনিয়নের গুল্টা গ্রামের কৃষক রমিজুল ইসলাম, আব্দুল গফুর, ইসমাইল হোসেন বলেন, আমনের মৌসুমে নতুন জাতের ব্রি ধান ৯০ চাষ করে বিঘায় ১৮ মণ পর্যন্ত ফলন পেয়েছেন। প্রতি মণ ধান ২ হাজার থেকে ২২ শ টাকায় বিক্রি করেছেন। কৃষক সচিন মাহাতো, হায়দার আলী, জহুরুল ইসলাম বলেন, ধানের ভালো ফলন ও দাম পেয়ে তাদের সংসারের অভাব অনটন কেটে গেছে।
সগুনা ইউনিয়নের কুন্দইল গ্রামের কৃষক মোজাম্মেল হোসেন বলেন, ৩০ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছিলেন। ৮ মণ পর্যন্ত ফলন হয়েছে বিঘায়। বিক্রি করেছেন ৪ হাজার টাকা মণ। সরিষার ব্যাপক চাহিদা থাকায় ব্যাপারীরা বাড়ির উঠান থেকেই বেশিরভাগ সরিষা কিনে নিয়ে গেছেন।বারুহাস ইউনিয়নের সান্দ্রা গ্রামের কৃষক হোসেন আলী বলেন, খিরাই চাষেও কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। প্রতি বিঘা জমির খিরাই ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন।
সগুনা ইউনিয়নের নাদো সৈয়দপুর গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম, সোলায়মান হোসেন ও হাসিনুর রহমান বলেন, এ বছর বিঘায় ৩৫ থেকে ৪০ মণ রসুন পেয়েছি। প্রথম দিকে ১ মণ রসুন ৪ হাজার টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। এখনো ৩ হাজার টাকা দাম পাওয়া যাচ্ছে।
এ গ্রামের কৃষক খবির উদ্দীন, মোফাজ্জল হোসেন ও আব্দুল কুদ্দুস বলেন, গমের ফলনও ভালো হয়েছে। ৩ বিঘা জমিতে ৫০ মণ গম পেয়েছি। বর্তমানে গমের বাজার ২ হাজার টাকা মণ।নাদোসৈয়দপুর বাহির পাড়ার কৃষক নবীর উদ্দীন, শাহা জামাল, কসিম উদ্দীন বলেন, চলতি রবি মৌসুমে হাইব্রিড জাতের ভুট্টার আবাদ করেছেন। ফসল ভালো হয়েছে। অন্যান্য ফসলের মতো ভুট্টারও বাম্পার ফলনের আশায় রয়েছেন তারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নাদৌ সৈয়দপুর ও মাগুড়া গ্রামের বিস্তীর্ণ মাঠের বোরো ধান গাছ থেকে শীষ বেড় হতে শুরু করেছে। ভুট্টার আকৃতিও বেশ ভালো।
এছাড়াও পুকুর পাড়ে কলা চাষ ও লিচুর চাষ করে বাড়তি আয় করছেন কৃষকরা। বড়ই চাষেও আগ্রহ বাড়ছে স্থানীয় কৃষকদের।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে ২২ হাজার ৩ শ ৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। রবি মৌসুমের আবাদও বেড়েছে। আশা করা যাচ্ছে বোরো ধানেরও বাম্পার ফলন হবে।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD