তাড়াশের গর্ব বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম এম মোবারক হোসেন মিয়া

Spread the love

মোঃ নজরুল ইসলাম
ছোটবেলা থেকেই যে মানুষটিকে আপন করে কাছে পেয়েছিলাম, সেই মানুষটিই হচ্ছেন তাড়াশ সদরের উত্তরপাড়া নিবাসী মরহুম মোবারক হোসেন মিয়া। তার বাবার নাম মরহুম সরবেশ আলী প্রাং মাতা-বেতন বেগম । চার ছেলের মধ্যে তিনি ছিলেন বড় সন্তান। তাড়াশ গ্রামে ছোট বেলায় তিনি সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। প্রাইমারি, হাইস্কুল ও কলেজ জীবন শেষ করে প্রথমে তিনি তাড়াশ হাইস্কুলে শিক্ষকতার কাজ করেন। পরবর্তীতে স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন এবং নয় মাস যুদ্ধের পাশাপাশি তিনি উল্লাপাড়ার কৃতি সন্তান বীরমুক্তিযোদ্ধা পলাশ ডাঙ্গা যুব শিবিরের সর্বাধিনায়ক মরহুম আব্দুল লথিফ মির্জার অধীনে পলাশ ডাঙ্গা যুবশিবিরের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর থেকে তিনি তাড়াশ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ছোট বেলা থেকে তিনি ছিলেন বাবা মার আদরের বড় সন্তান এবং সবার কাছে শ্রদ্ধাভাজন ছিলেন। ১৯৭২ সাল থেকে একাধারে তিনি ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত তাড়াশ সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। কোন ব্যাক্তি তার কাছে কোন কাজ নিয়ে আসলে তিনি কখনো না করতেন না, সাধ্যানুযায়ী কাজ করার চেষ্টা করতেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময় আশির দশকের আগে তাড়াশ থানায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কোন কমিটি ছিল না। ১৯৮০’র দশকে তার বাসাতে বসে আমি ও আমার বন্ধুগন খলিল,পলূ,করিম,প্রদীপ,রজত ঘোষ,উত্তম ঘোষ, কানাই কুন্ডু ও বিপুল সরকারকে নিয়ে তাড়াশ উপজেলা ছাত্রলীগের প্রথম কমিটি গঠন করি। বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী ম.ম. আমজাদ হোসেন মিলন এবং মরহুম এম মোবারক হোসেন মিয়া তার্ াউভয়ে আমাদের রাজনৈতিক গুরু। তিনি ছিলেন আমাদের শ্রদ্ধাভাজন নেতা এবং চলার পথের পথ প্রদর্শক। তার আদর্শ নিয়েই আমরা রাজনীতি করেছি এবং তার পরামর্শ মতই তার বাসায় বসে সকল কাজের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতাম। রাজনৈতিক কোন সমস্যা বা হামলা, মামলা হলে তিনি আমাদের সকল ধরনের সহযোগীতা করতেন। মরহুমের স্ত্রী মরহুমা রাহিলা খাতুন ছিলেন আমাদের কাছে নিজের মায়ের মত। সব সময় তিনি আমাদের রান্না করে খাওয়াতেন এবং বাড়িতে না খেয়ে তার বড় ছেলে দুলাল ভাইয়ের ঘরে বসে সময় কাটাতাম ও খলিলের সঙ্গে অনেক সময় রাত্রি যাপন করতাম। মরহুমের বড় মেয়ে মনোয়ারা খাতুন মিনি আমাদের নিজের ছোট ভাইয়ের মত দেখতেন। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, ও সবার কাছে ভালো মানুষ বলে পরিচিত এমন একজন ব্যক্তির জীবন বৃত্তান্ত লিখতে পেরে আমি খবুই আপ্লুত। তাড়াশবাসি তাকে সব সময় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বরণ করবে। আমি তার বিদেহী আত্বার মাগফেরাত ও বেহেস্ত কামনা করছি। পরিশেষে শ্রমিক নেতা ও জাতীয় শ্রমিক লীগের উপজেলার সাবেক সভাপতি মরহুম আবু মুছা প্রামানিকের আত্বার শান্তি ও বিদেহি আত্বার মাগফেরাত কামনা করে লেখা শেষ করছি।

লেখক : সমাজকর্মী ও সাহিত্যামোদী, তাড়াশ ঘোষপাড়া।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD