গ্রামে গঞ্জের গরিব শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার আশস্কা বাড়ছে শিশু শ্রমিব ও বাল্যবিবাহ

Spread the love
ফারুক আহমেদঃ দেশে করোনা দেখা দেওয়ার পর গত ১৭ মার্চ থেকে সারা দেশে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধের কারণে পরিস্থিতির উন্নতি না হাওয়ায় কয়েক দফা বাড়িয়ে সর্বশেষ ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুল – কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার ঘোষণা দেওয়ায় করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

 পুনরায় খুলে দেওয়া হবে ও পাঠদান শুরু করা হবে। তবে ঠিক কবে নাগাদ এসব প্রতিষ্ঠান খুলবে এবং খুলেও এত দীর্ঘ  সময় বাইরে থাকা সিরাজগঞ্জের শহর ও গ্রাম অঞ্চলের গরীব ও মধ্যবিত্ত পরিবারের শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার আশস্কা একই সঙ্গে বাল্যবিবাহের হারও  বাড়ছে । প্রায় ১০-১১ মাস ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ।  কবে খুলবে, কেউ তা জানে না। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি আরো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়তে পারে ফলে অনেক শিক্ষির্থীদের লেখাপড়ায় ধরে রাখা কঠিন হবে বলে মনে করেন সিরাজগঞ্জের সলঙ্গার বিশিষ্টজনরা। বিশিষ্টজনরা জানান, টেলিভিশনে রেকর্ড করা ক্লাস সস্পচার করছে, সেখানেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ভালো নয়। তারা আরো জানান, এসব প্রতিষ্ঠান ফের খুললেও এত দীর্ঘ সময় বাইরে থাকা শিক্ষার্থীদের কীভাবে ফের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানমুখী করা যাবে -সে নিয়ে এক ধরনের চ্যালেঞ্জের আশস্কা করছেন শিক্ষাবিদ ও গবেষকরা।
শিক্ষাবিদ ও গবেষকরা বলছেন, বেশি সমস্যা স্কুলের মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের নিয়ে। এর মধ্যে গ্রামগঞ্জের নারী ও গরীব শিক্ষার্থীদের নিয়ে ভাবনা বেশি। এসব শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবনে ফেরানোই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ এ দীর্ঘ সময়ে শিক্ষির্থীরা নানা সামাজিক বাস্তবতার মুখোমুখী হয়েছে। উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত,দরিদ্র, নব্য দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে এ বাস্তবতা হয়েছে অনেক শিক্ষার্থীকেই বেছে নিতে হয়েছে আয় – রোজগারের পথ। অনদিকে অধিকাংশ পরিবারেই ছিল তীব্র খাদ্য সংকট। গবেষকরা আরও বলছেন, করোনা দীর্ঘস্থায়ী হলে মাধ্যমিকের প্রায় ৪৫ শতাংশ শিক্ষার্থীরা স্কুলে ফিরবে না। নারী শিক্ষার্থীদের করোনাকালীন সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানায় বেড়ে গেছে।
নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক সিরাজগঞ্জের তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর  এক কর্মকর্তা  এই প্রতিনিধিকে বলেন, করোনার কারণে এবার অনেক বড়সংখ্যক শিক্ষার্থী শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ছিটকে পড়বে। এ সংখ্যা শতকরা ৪০ ভাগের ওপরেও যেতে পারে।  এর ফলে প্রায় ৬০ লাখ শিক্ষির্থী মাধ্যমিকের গন্ডি না পেরিয়েই ড্রপ আউট হতে পারে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে নারী ও গরীব শিশুশিক্ষির্থীরা।
এ ব্যাপারে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান এ্যাড, ইমরুল হোসেন তালুকদার ইমন এই প্রতিনিধিকে বলেন, করোনার কারণে স্কুল -কলেজ,  মাদ্রাসা, কিন্ডারগার্ডেন  বন্ধ থাকায় সারাদেশের ন্যায় রায়গঞ্জে বাল্যবিবাহসহ শিশুশ্রম বাড়ছে। সিরাজগঞ্জের সলঙ্গাম থানার ৩নং ধুবিল ইউনিয়নের আমশড়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার  সভাপতি আব্দুস সাত্তার মাস্টারকে স্কুল খোলার পর শিক্ষার্থীদের স্কুলে ফিরিই
 আনতে বিশেষ  কোনো উদ্যোগ আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের একজন শিক্ষার্থীও যাতে স্কুলবিমুখ না হয় সেজন্য আমাদের তদারকি থাকবে।সলঙ্গা থানার রৌহদহ হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মমিণ মাস্টার বলেন, শিক্ষার্থীদের এক শ্রেণি থেকে অন্য শ্রেণীতে উঠতে গেলে বাদের তো একটা ব্যাপার থাকে,কিন্তু এবার সেটাও থাকছে না।কারণ সবাইকে অটোপাশ করানো হয়েছে।  তবে করোনায় গরিব, মধ্যবিত্ত ও নিম্নআয়ের
মানুষদের ছেলেমেয়েদের স্কুলের ফেরানো অনেকটাই অসম্ভ হবে। বিশেষ করে নবম ও দশম শ্রেণির মেয়েদের ক্ষেত্রে করোনার দীর্ঘদিন ছুটি থাকার কারণে গ্রামের গরীব ও মধ্যবিত্ত ছেলেমেয়েদের তাদের অভিভাবকেরা অল্প বয়সী ছেলেমেয়েদেরকে বিয়শাদি দিয়ে কর্মমূখি করছে।এমন এক জন ছাত্র অভিবাক মহির মন্ডলের কাছে কেন এ বয়সে আপনার স্কুল পড়ুয়া ছেলেকে দিয়ে কেনো ইটভাটায় কাজ করান জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিনিধিকে বলেন, কি করবো আমরা গরীব মানুষ মরার উপর খাঁর খা। একেতো গরীব মানুষ তারপরেও করোনা আর চলতে পারি না।  ইচ্ছাতো জাগে আমার ছেলেকে দিয়ে পড়ালেখা করিয়ে মানুষের মতো মানুষ করবো। কিন্তু পারছিনা সংসার চালাতে গেলে অনেক কিছু লাগে। একা সংসার চালাতে পারিনা। তাই বাধ্য হয়ে এই আমার রৌহদহ হাইস্কুলের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র ছোট্র ছেলেকে দিয়ে বাধ্য হয়ে ইটভাটার কঠিন কাজ করাচ্ছি।
Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD