বাংলাদেশে প্রতিটি জেলায় তৃতীয় লিঙ্গের (হিজরা) মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা দরকার 

Spread the love
ডাঃ আমজাদ হোসেন মিলন উল্লাপাড়া প্রতিনিধি 
বাংলাদেশে এই প্রথম হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য চালু হচ্ছে একটি পৃথক মাদ্রাসা। রাজধানী ঢাকায় আজ শুক্রবার থেকে এর আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে। হিজড়াদের জন্য এটিই দেশের প্রথম ও একমাত্র মাদ্রাসা।
ঢাকার কামরাঙ্গীর চরের লোহার ব্রিজ এলাকায় নির্মিত এই মাদ্রাসাটির নাম রাখা হয়েছে ‘দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদ্রাসা’।
প্রতিষ্ঠানটির আয়োজকরা সাংবাদিকদের বলেছেন, হিজড়া, বৃহন্নলা, কিন্নরী বা তৃতীয় লিঙ্গ- যে নামেই ডাকা হোক না কেন, পরিবার ও সমাজে এরা নানাভাবে অবহেলিত ও বঞ্চিত। তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানোর লক্ষ্যে এই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।সমাজসেবা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে হিজড়ার সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলোর মতে, এই সংখ্যা ৫০ হাজারের বেশি।
এর আগে হিজড়া জনগোষ্ঠীর জন্য বাংলাদেশে আলাদা কোনো মাদ্রাসা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার খবর পাওয়া যায়নি। এছাড়া মূলধারার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতেও হিজড়াদের পড়ানোর কোনো ব্যবস্থা নেই বলে জানা গেছে। তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর জন্য একেবারে একটি আলাদা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাকে স্বাগত জানিয়েছেন এই কমিউনিটির সদস্যরা। এই মাদ্রাসায় মূলত কুরআন শিক্ষার পাশাপাশি কারিগরী শিক্ষাও দেয়া হবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। ফলে এখান থেকে পড়াশোনা শেষে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কারিগরী পেশায় যুক্ত হতে পারবেন। মাদ্রাসাটির শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সচিব মোহাম্মদ আব্দুল আজিজ হুসাইনী গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, উদ্বোধনের পর ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা দেড়শ’র বেশি হিজড়াকে এই মাদ্রাসায় ভর্তি করা হবে।আব্দুল আজিজ হুসাইনী জানান, ‘ঢাকার যাত্রাবাড়ী, বাড্ডা, কামরাঙ্গীর চর, সিলেটি বাজার – এমন কয়েকটা এলাকায় আমাদের ২০-২৫ জন করে শিক্ষার্থী আছে, যাদের আমরা আলাদা করে পড়াতাম। এই মাদ্রাসাটি উদ্বোধন করা হলে তাদের সবাইকে এখানে রেখে এক সঙ্গে পড়াতে পারবো’। দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদ্রাসা স্থাপন করা হয়েছে একটি তিন তলা ভবনে। এর প্রতিটি তলায় প্রায় ১২০০ বর্গফুট জায়গা রয়েছে। এখানেই সব শিক্ষার্থীদের থাকা-খাওয়া এবং পড়াশুনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
মাদ্রাসার মহাসচিব মোহাম্মদ আব্দুর রহমান আজাদ জানিয়েছেন, এই শিক্ষার্থীদের পড়াতে ১০ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকেই এই মাদ্রাসা নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। দাওয়াতুল কুরআন তৃতীয় লিঙ্গের মাদ্রাসায় পড়ার ক্ষেত্রে কোন বয়স সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি, অর্থাৎ হিজড়া জনগোষ্ঠীর যে কোনো বয়সের মানুষ এই মাদ্রাসায় ভর্তি হতে পারবেন। এখানে পড়াশুনা করতে শিক্ষার্থীদের কোনো খরচ গুণতে হবে না। আব্দুল আজিজ হুসাইনী জানান, মরহুম আহমদ ফেরদৌস বারী চৌধুরী ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে মাদ্রাসাটির যাবতীয় কার্যক্রম চলবে
Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD