মোঃ মুন্না হুসাইন, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি : মানুষ মানুষের জন্য। এমন সত্য এ প্রবাদ বাক্য বাস্তবায়ন করেছেন সিরাজগঞ্জের বিশিষ্ট সমাজ সেবক রাজনীতিীবিদ ড. জান্নাত আরা হেনরী। তিনি সিরাজগঞ্জে দেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠান ‘হেনরীর ভুবন’ স্থাপন করেছেন। মনোরম পরিবেশে নির্মিত এ বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠানটি এখন শুধুই উদ্বোধনের অপেক্ষায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সমাজের অবহেলিত গরিব ও অসহায় বৃদ্ধ মানুষের জন্য জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শামীম তালুকদার লাবুর উদ্যোগে এই বৃদ্ধাশ্রম কেন্দ্র ‘হেনরীর ভুবন’ স্থাপন করা হয়েছে। এ দু’জন সমাজ সেবক সিরাজগঞ্জের কৃতিসন্তান মরণোত্তর একুশে পদকপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ মোতাহার হোসেন তালুকদারের পুত্র ও পুত্রবধূ।
তাদেও যৌথ প্রচেষ্টায় সিরাজগঞ্জ-কাজিপুর অঞ্চলিক মহাসড়কের পূর্বপাশে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার গজারিয়া গ্রামে প্রায় ১৮ বিঘা জমির উপর বিপুল টাকা ব্যয়ে এই বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণ করা হয় এবং এতে রয়েছে সুন্দর পরিবেশ ঘেরা ৫৬টি কক্ষ। এ বৃদ্ধাশ্রমে ১১২ জন বৃদ্ধ মা বাবা আশ্রয় পাবেন। এ বৃদ্ধাশ্েরমর সব কক্ষেই থাকবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ও পৃথক শৌচাগারের ব্যবস্থাও রয়েছে। সেইসাথে তাদের জন্য সব কক্ষের ভেতরেই থাকবে রেফরিজারেটর ও টেলিভিশন। এছাড়া সেখানে থাকবে একসঙ্গে বসে খাবারের জন্য বিশাল ডাইনিং হল ও নামাজ ঘর, পাঠাগার, ব্যায়ামাগারসহ মনোরম পরিবেশে তাদের চলাফেরার জন্য মাঠ ও ফুলের বাগান এবং ভবনের সামনে তৈরী করা হয়েছে একটি পুকুর। এ পুকুর পাড়েই অত্যাধুনিকভাবে তৈরী করা হয়েছে বৃদ্ধদের গল্প করে সময় কাটানোর বৈঠক খানা।
এ বৃদ্ধাশ্রম পরিচালনার জন্য বৃদ্ধাশ্রমের সংলগ্ন এলাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে আরো ৪-৫ টি প্রতিষ্ঠান। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে, হেনরী স্কলাস্টিকা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মোতাহার হোসেন তালুকদার হোমিওপ্যাথি মেডিকেল কলেজ, জান্নাত আরা হেনরী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কলেজ, হেনরী ইনস্টিটিউট অব বায়োসায়েন্স ও মোতাহার হোসেন তালুকদার পাঠশালা। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে উপার্জিত অর্থেই এ বৃদ্ধাশ্রম পরিচালিত হবে।
এ বৃদ্ধাশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ড.জান্নাত আরা হেনরী বলেন, বিপুল টাকা ব্যয়ে বৃদ্ধাশ্রম প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে এবং উদ্বোধনের অপেক্ষায় এই বৃদ্ধাশ্রম। আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পর এই স্বপ্নের বৃদ্ধাশ্রম চালু করা হবে। তিনি আরো বলেন, সমাজের অসহায় গরিব মা-বাবার কথা চিšন্ত করে এই বৃদ্ধাশ্রম স্থাপন করা হয়েছে। অসহায় মা-বাবা যেন জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত এই বৃদ্ধাশ্রমে মনোরম পরিবেশে দু:শ্চিন্তামুক্তভাবে থাকতে পারেন সেটা চিন্তা করেই এর গোড়াপত্তন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহম্মদ বলেন, সুন্দর পরিবেশে নির্মিত প্রতিষ্ঠানটি দেখেছি। এ সমাজের অনেক বৃদ্ধ মা বাবা গরিব ও অসহায় । তাদের সন্তানেরা কোন খোঁজ খবর রাখে না। এ জন্য বৃদ্ধাশ্রম অসহায় বৃদ্ধ মা বার জন্য আশ্রয়ের স্থান এবং বেসরকারি উদ্যাগে গড়ে তোলা এই বৃদ্ধাশ্রমের কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান তিনি।