ভাঙ্গুড়ায় চলছে নৌকা তৈরির ধুম 

Spread the love
মোঃ আকছেদ আলী , ভাঙ্গুড়া (পাবনা) থেকেঃ 

ভাঙ্গুড়ায় চলছে নৌকা তৈরির ধুম। চলছে পুরোনো নৌকা মেরামতের কাজও।  প্রতিবছর বর্ষা  আসার আগেই  চলনবিল অধ্যুষিত পাবনার ভাঙ্গুড়ায় শুরু হয় নৌকা তৈরির কাজ। এসময়টাতে নৌকার কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়।  বর্ষাকালে এ উপজেলার অধিকাংশ জনপদ পানিতে থৈ থৈ করে। ডুবে যায় রাস্তাঘাট ,নদী-নালা, খাল-বিল। যাতায়াত করতে হয় নৌকায়। মৎস্যজীবিরা মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করেন ছোটবড় নৌকা। তাই বর্ষা মৌসুম আসলেই এখানে বেড়ে যায় নৌকার কদর।
সংশ্লিষ্টরা জানান, পৌরশহরের কালিবাড়ি, জগাতলা ও উপজেলার অষ্টমনিষায় প্রায় ৫০/৬০ টি কাঠমিস্ত্রি পারিবার রয়েছে। কাঠের কাজ তাদের প্রধান পেশা। এসকল কাঠমিস্ত্রিরা বর্ষা মৌসুম শুরুর মাস খানেক আগে থেকেই নৌকা তৈরির কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। বছরের বাকি সময়টা তারা চেয়ার-টেবিল, দরজা- জানালা প্রভৃতি তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন।
নৌকার কারিগর কাঠমিস্ত্রি মহাদেব সূত্রধর বলেন, কাঠের কাজ তার পেশা। বর্ষাকাল শুরুর ১/২ মাস আগে থেকেই তিনি নৌকা তৈরির কাজ শুরু করেন। বর্ষায় নৌকা আর বছরের বাকি সময়টা চেয়ার-টেবিল, দরজা-জানালা তৈরি করে চলে তার সংসার।
এলাকার প্রবীণ কাঠমিস্ত্রি বিশনো সূত্রধর জানান, ৯ হাত লম্বা একটি নৌকা   ৩ /৪ হাজার টাকা এবং ১২ হাত নৌকা ৫/৬ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন তিনি। তিনি আরও জানান, কারখানা ছাড়া হাট-বাজারে তিনি নৌকা বিক্রি করেন না। ভাঙ্গুড়াসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষ এসে তার কাছ থেকে নৌকা তৈরি করে নিয়ে যায়।
কাঠমিস্ত্রি কালু জানান, শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন নয়। মুসলমানদের অনেকেই এখন এ পেশার সাথে জড়িত। তিনি বলেন, এ সময় নৌকা তৈরির কাজ বেশি পান। গত কয়েকদিনে তিনি বেশ কয়েকটি নৌকা বিক্রি করেছেন।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের দুগ্ধখামারী বাবলু ফকির জানান, তিনি সাড়ে ৯ হাত লম্বা একটি নৌকা সাড়ে ৫ হাজার টাকায় কিনেছেন। বর্ষা মাসে তিনি কচুরিপানা কাটার কাজে নৌকা ব্যবহার করেন।
পাশ্ববর্তী ফরিদপুর উপজেলার বেরহাউলিয়া গ্রামের ইসরাইল প্রামানিক নৌকা কিনতে এসে ছিলেন পৌরশহরের কালিবাড়ির কাঠমিস্ত্রি বিশনো সূত্রধরের কাছে। তিনি বলেন, বর্ষাকালে হাতে অন্যকোন কাজ না থাকায় তিনি মাছ ধরে থাকেন। তাই কাঠমিস্ত্রির কাছে এসেছেন ১২ হাত লম্বা একটি নৌকা তৈরি করে নিতে।  ভাঙ্গুড়া সরকারি হাজি জামাল উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের জীব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো: আব্দুল লতিফ বলেন, এলাকায় সড়ক পথের উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন হলেও বর্ষাকালে এখনও নিম্নাঞ্চলের মানুষের চলাচলের অন্যতম মাধ্যম নৌকা।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD