তাড়াশের বারুহাস মেলায় চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত টোকেনে চাঁদাবাজি

Spread the love

তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ) সংবাদদাতা: সিরাজগঞ্জের তাড়াশে প্রতিবছরের মতো এবারও বৈশাখ উপলক্ষ্যে বারুহাস গ্রামে তিনদিন ব্যাপি মেলা বসেছে। কথিত আছে, প্রায় দেড় শত বছর আগে জমিদার আমলে গড়ে উঠা চলনবিলের ঐতিহ্যবাহী বারূহাস মেলা। মেলাটি বাঙালি সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের মেলবন্ধনের প্রতীক হয়ে আছে।
তিনদিনের মেলা হলেও আসলে তা সপ্তাহ গড়ায়। তবে কাঠের মেলা ভাঙতে আরো কয়েকদিন সময় লাগে। গত ২ বছরে করোনা মহামারীতে মেলা বন্ধ থাকায় এবছরে জাকজমকপূর্ণ ভাবে মেলা বসেছে। সরেজমিনে এ মেলায় গিয়ে দেখা গেছে, বারুহাস ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত টোকেন ব্যবহার করে তার নিজস্ব বাহিনী দিয়ে সরকারি নির্দেশ উপেক্ষা করে অবৈধ খাজনা আদায় করছেন। অনেক ক্ষেত্রে চেয়ারম্যানের নিজস্ব বাহিনীর লোকজনের হাতে সাধারণ ক্রেতা-বিক্রেতারা হেনস্থা ও লাঞ্ছিত হচ্ছেন। চেয়ারম্যানের নিজস্ব বাহিনী খাজনা নিয়ে ব্যবসায়ীদের নানাভাবে হয়রানি করছেন বলেও অনেক ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের চোখের সামনে চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত রসিদে খাজনা আদায় করছেন।
ক্রেতাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায়, মেলায় সরকারি ভাবে ডাক না হলেও বারুহাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও তার নিজস্ব লোকজন স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে বিভিন্ন এলাকা থেকে মেলায় আগত দোকান মিষ্টি ও ঝুড়িপট্টি, রসুন পিয়াজ, আদা-মরিচ, খেলনা, কসমেটিক্স, ঘুড়ি, ফার্নিচার কিনতে আসা ক্রেতাদের কাছ থেকে চেয়ারম্যান ময়নুল হকের স্বাক্ষরিত টোকেনের মাধ্যমে অবৈধভাবে খাজনার নামে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করছে।এতে করে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দোকানদার অতিরিক্ত খাজনার ভয়ে অনেক দোকানদার বারুহাস গ্রামের আশে পাশে যেমন, বিনোদপুর বাজার, সাচানদিঘী গ্রাম, কোহিত মোড়ে, হেদারখাল, মনোহরপুর ও দিঘরিড়া বাজার সহ তাড়াশ-সিংড়া রাস্তার পাশ দিয়ে দোকান বসেছে।
শাহজাদপুর থেকে আগত ঝুড়ি ব্যবসায়ী মোঃ রহমত আলী বলেন, আমার ছোট দোকান থেকে জোড়পূর্বক ১হাজার দুইশত টাকা চেয়ারম্যানের লোকজন খাজনা আদায় করেছে। তালম গ্রামের মিষ্টি ব্যবসায়ী মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, সরকারী রশিদ নাই, চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরিত টোকেন দিয়ে একহাজার পাঁচশত টাকা খাজনা নিয়েছে। এতে বাঁধা দিলে আমাকে প্রাণের ভয় দেখায় এবং আমার দোকানের জিনিসপত্র নষ্ট করার হুমকি দেয়।এবিষয়ে বারুহাস ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক মোঃ খায়রুল ইসলাম বলেন, এবিষয়ে আমার কোন বক্তব্য নাই, চেয়ারম্যান তার লোকজন দিয়ে খাজনা আদায় করছেন।স্থানীয় চেয়ারম্যান ময়নুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ে তিনি জানান. আমি এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, আমি আমার লোকজন দিয়ে মেলার খাজনা আদায় করবো। তবে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করা হচ্ছে না।
এবিষয়ে তাড়াশ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, মেলা বসানোর অনুমতি দেয়া হয়নি।
সহকারি কমিশনার (ভূমি) লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, খাস কালেশান, সরকারী আয়। ভূমি অফিসের লোকজন দিয়ে আদায় করা হয়। এতে চেয়ারম্যান বা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের কোন প্রকার অংশ গ্রহন নাই।

 

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD