সিংড়ায় চারগুণ সুদ দিয়েও বাড়িছাড়া সংখ্যালঘু পরিবার

Spread the love
সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি :
নাটোরের সিংড়ায় আসলের চারগুণ সুদ পরিশোধ করার পরেও এক সংখ্যালঘু পরিবারের বাড়ি দখলের অভিযোগ উঠেছে।বাড়ি থেকে ওই সংখ্যালঘু পরিবারকে বের করে দেওয়ার কারণে পরিবারের ১১ জন সদস্য নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে পরিবারটি। এমন ঘটনা ঘটেছে সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম ইউনিয়নের পাঁড়েরা গ্রামের দরিদ্র বৃদ্ধ কৃষক শ্রী মরু প্রামাণিকের সাথে।
জানা যায়, পাঁড়েরা গ্রামের সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরের সামনে ফাঁকা জায়গায় খোলা আকাশের নিচে নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ শ্রী মরু প্রামাণিক তার পরিবারের ১১ জন সদস্য নিয়ে মাটিতে বসে আছেন। খেতে না পেয়ে শিশুরা কান্না-কাটি করছে। আর প্রতিবেশীরা এই দৃশ্য নিরবভাবে তাকিয়ে দেখছেন। পাশেই মরু প্রামাণিকের দখলকৃত বাড়িতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন এর নেতৃত্বে বসেছে দরবার।ভুক্তভোগী মরু প্রামাণিক বলেন, সংসারের খরচ চালাতে প্রায় ৩ বছর আগে চৌগ্রাম এলাকার দাদন ব্যবসায়ী শাহিন শাহ এর কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। পরে সেই টাকা পরিশোধ করতে সুদে-আসলে ২০ হাজার টাকা করে ১৬ কিস্তিতে ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা ফেতর দিই। কিন্তু তাতেও রেহাই মিলেনি। শেষ পর্যন্ত একমাত্র সম্বল ভিটেমাটিও দাদন ব্যবসায়ী শাহিন শাহ এর নামে লিখে দিতে হয়েছে। কথা ছিল কয়েক মাস পর আবার বাড়িটি ফেরত দিবে। কিন্তুু এখন জোর করে ঘরের বাইরে বের করে দেওয়া হচ্ছে। পরিবারের লোকজন নিয়ে খোলা আকাশের নিচে থাকতে হচ্ছে।
এলাকাবাসী জানান, চড়া সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় দাদন ব্যবসায়ী শাহিন শাহ জোর করে বাড়িটি লিখে নিয়ে গোপনে মরু প্রামাণিকের প্রতিবেশী সুমন নামের একজনের কাছে আবার বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন সেই বাড়িটি দখল মুক্ত করতে ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন নেতৃত্ব দিচ্ছেন।গত বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় মরু প্রামাণিক ও তার পরিবারের সদস্যদের বাড়ি থেকে জোর করে বের করে দিয়েছে ইউপি সদস্য’র লোকজন। তারপর থেকেই খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করছে ওই পরিবারের সদস্যরা।এ বিষয়ে ভূক্তভোগী কৃষকের ছেলে শ্রী তরুণ বলেন, বাড়িটি ফিরে পেতে তারা সিংড়ার সহকারি জজ আদালতে একটি মোকাদ্দমা (পেনশন) দায়ের করেছেন। আদালত উভয়পক্ষকে স্থিতিবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিলেও তাদেরকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিচ্ছেন ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন ও তার লোকজন।দাদন ব্যবসায়ী শাহিন শাহ বলেন, তিনি সুদের কোন কারবার করেন না। তিনি সাড়ে ৩ লাখ টাকা দিয়ে ওই জায়গা কিনে অন্য আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন। এখন তার নামে মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।ইউপি সদস্য বেলাল হোসেন বলেন, সমাজে শান্তি-শৃংখলা বজায় রাখতে সামাজিকভাবে তাদেরকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তবে এলাকা ছাড়া করার হুমকি-ধামকি বিষয়টি সঠিক নয়।এ বিষয়ে সিংড়া থানার ওসি নূর-এ-আলম সিদ্দিকী বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো. আল ইমরান বলেন, এই ধরণের কোন অমানবিক ঘটনা ঘটে থাকলে খোঁজ-খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD