সিরাজগঞ্জ জেলার মৌ চাষীরা ব্যস্ত সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে 

Spread the love

খোন্দকার আমিনুল ইসলাম আবদুল্লাহ , সিরাজগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :

সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর, বেলকুচি, কামারখন্দ, উল্লাপাড়া, তাড়াশ , রায়গঞ্জ, সিরাজগঞ্জ সদর ও চৌহালীর বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন সরিষা ফুলের সমারোহ। এ সকল এলাকায় সরিষার রূপ আর গন্ধে মাতোয়ারা চারিদিক। এসব ক্ষেত থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌ খামারীরা।  

সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে ক্ষেতের পাশে পোষা মৌমাছির শত শত বক্স নিয়ে হাজির হয়েছেন মৌয়ালরা।  দিকে এতে মৌমাছির মাধ্যমে । এই মৌসুমে মৌমাছিরা সরিষার ফুলে ফুলে ঘুরে মধু তুলে নেয়, আর সেই মধু সংগ্রহ করতেই যেন মৌয়ালরা উৎসবে মেতেছেন। এতে একদিকে যেমন সরিষা ফুলের পরাগায়ন হচ্ছে অন্যদিকে সরিষার উৎপাদন বাড়ছে। অপর দিকে এই ফুল থেকে মধু আহরণ করা যাচ্ছে। সমন্বিত এই চাষে সরিষা চাষি ও মৌ চাষি উভয়ই লাভবান হচ্ছেন। 

উত্তরবঙ্গের মৌচাষী সমিতির সহ সভাপতি খামারী আব্দুর রশিদ বলেন, সিরাজগঞ্জ জেলা মোট মৌখামারীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ শত। যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে প্রায় ৩ হাজার মানুষের। এবার আবহাওয়া ভালো থাকলে গত বছরের চেয়ে মধু সংগ্রহের পরিমান বেড়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। উল্লাপাড়া উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা সূর্বনা ইয়াসমিন সুমি জানান,  চলতি রবি মৌসুমে চলনবিল অধ্যুষিত উল্লাপাড়া উপজেলার সরিষা উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা ২৬ হাজার ৪ শত ৬১ মেট্রিক টন। এর মধ্যে নতুন জাতের সরিষার আবাদ করা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গত বছর উপজেলার ১১২ জন খামারীর নিকট থেকে প্রায় ১৫৬ টন মধু সংগ্রহ করা হয়েছিলো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার এই লক্ষ মাত্রা তার চেয়েও বেশী মধু সংগ্রহ করা সম্ভব হবে। সরিষায় মৌমাছি থাকলে পরাগায়নটা ভালো হয়। ফলে ফলনটাও বেশি হয় বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা ।

তাড়াশ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার লুনা জানান, গত বছর তাড়াশ উপজেলায় ২২ মেট্রিক টন মধু উৎপাদন হয়েছিলো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর ৩২ মেট্রিক টন মধু উৎপাদন হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সিরাজগঞ্জে সরকারিভাবে মধু প্রসেসিং প্লান্ট স্থাপনের দীর্ঘ দিনের দাবির প্রেক্ষিতে উল্লাপাড়া উপজেলার লাহিড়ী মোহনপুরে মধু প্রসেসিং প্লান্টটির স্থাপনে অবকাঠামো নির্মাণ চলমান রয়েছে বলে উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেদুয়ান মওদুদ আহমেদ বলেন ।  এতে মধু আহরণকারীরাও লাভবান হবে বলে তিনি জানান। 

এব্যাপারে সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আবু হানিফ জানান, এ বছরে সিরাজগঞ্জের ৯টি জেলায় সরিষা চাষের লক্ষ মাত্রা ছিলো ৪৯,৫৫০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু তা বৃদ্ধি পেয়ে ৫৩.৯৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। সরিষা আবাদে সল্পপরিশ্রমে কৃষকেরা অধিক লাভবান হবেন ।মধু আহরণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এ সকল সরিষার ক্ষেত থেকে গত বছর মধু আহরণ হয়েছিলো ২১০ মেট্রিক টন। এ বছরে ইতিমধ্যেই ৬০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গতবারের তুলনায় এবার আরও বেশি মধু আহরণ সম্ভব হবে।

Please follow and like us:
Pin Share

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Website Design, Developed & Hosted by ALL IT BD