আবুল কালাম আজাদ: চলছে বৈশ্বক মহামারী করোনার দ্বীতিয় প্রবাহের আতংক।মহামারি করোনার সংক্রমন ঠেকাতে দেশব্যাপি চলছে সর্বাত্মক লকডাউন।অপ্রয়োজনে বাইরে যাওয়া যাবে না,। গেলেও স্বাস্থবিধি মেনে যেতে হবে।
চলনবিলের দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠজুড়ে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। ধানের আশাতিত ফলন না হলেও কৃষকের আনন্দের কমতি নেই। তবে করোনাকালীন সর্বাত্মক লকডাউনে শ্রমিক সংকট দেখা দেয়ায় এই ধান কেটে ঘরে তোলা নিয়ে কৃষকেরা ছিল শঙ্কায়। সেই শঙ্কা দূর করে নির্বিঘেœ ধান কাটতে কৃষক-শ্রমিকের পাশে দাঁড়িয়েছে গুরুদাসপুর উপজেলা প্রশাসন। প্রশাসনের সহযোগীতায় কৃষকের ধানকাটতে আমদানি করা হয়েছে প্রশিক্ষিত শ্রমিক। শুধু যে শ্রমিক সংকট দূর করা হয়েছে তা নয়। কৃষকের ধান গোলায় তুলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও অর্থায়নে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন।
নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন- উপজেলার বিলশা, রুহাই পিপলাসহ বেশ কয়েকটি নিচু এলাকা রয়েছে। এসব এলাকার বিলগুলোতে বেশি ধান চাষ করা হয়েছে। সময় মতো ধান কাটতে না পারলে বা বৃষ্টিপাত-আগাম বন্যা দেখা দিলে এসব বিলের ধান নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে কৃষকদের। তাই নিচু এসব বিলের ধান দ্রুত কাটতে স্থানীয়সহ বহিরাগত কয়েক হাজার শ্রমিক আনা হয়েছে। এসব শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা বিবেচনা করে শ্রমিকদের চিকিৎসা প্রয়োজন হলে জরুরী ভিত্তিতে সেবা প্রদান করা হবে। এছাড়া শ্রমিকদের অস্থায়ী আবাসন সুবিধা রাখা হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনর রশিদ জানান- চলতি মওসুমে গুরুদাসপুরের বিলগুলোতে হাজার ৬শ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করা হয়েছিল। নির্বিঘেœ ধান কেটে ঘরে তুলতে পারলে গুরুদাসপুর উপজেলা এলাকার কৃষকদের খাদ্যে কোন সমস্যা থাকবে না। এসব বিষয় বিবেচনায় শ্রমিকের পাশাপাশি কম্বাইন হার্ভেস্টার দিয়েও ধান কাটা হচ্ছে।নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন- স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর এসব শ্রমিকদের ধানকাটার জন্য মনোনীত করা হয়েছে।রুহাই গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম ও আকিবুল ইসলাম বলেন, মাঠের পাকা ধান কাটার জন্য পর্যাপ্ত শ্রমিক রয়েছে। সংকট ছিল শ্রমিকের আবাসন। উপজেলা প্রশাসন কৃষি-কৃষক বান্ধব পদক্ষেপ নেওয়ায় তারা মাঠের ধান ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কা মুক্ত হয়েছেন।
এদিকে শ্রমিকদের উদ্বুদ্ধ করতে সোমবার বেলা ২টার দিকে রুহাই বিলে গিয়ে ধানকাটা শ্রমিকদের উদ্দ্যেশে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তমাল হোসেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভুমি) মোঃ আবু রাসেল ও কৃষি কর্মকর্তা মোঃ হারুনর রশিদ প্রমুখ। বক্তব্য শেষে দুইশতাধিক শ্রমিককে পানি,সাবান, মাস্ক, ও বিস্কুটসহ বিভিন্ন প্রকারের শুকনো খাবার দেওয়া হয়। উপজেলা প্রশাসনের এই কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে তাঁরা জানান।