তাড়াশ থেকে গোলাম মোস্তফা
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সম্পূর্ণ অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা পরিবেশে ঘোল তৈরি করে বিএসটিআই অনুমোদন না নিয়ে ভুয়া লেবেল লাগিয়ে বাজারজাত করা হচ্ছে। উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত মাধাইনগর গ্রামে লিটন ও রাব্বি নামে দুই যুবক নাম সর্বস্ব ‘আমার দই ও সাইফুল ফুড’ নামে দুটি ফুড কোম্পানি দেখিয়ে প্রতিদিন হাজারো লিটার ঘোল তেরি করছেন।
এদিকে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাশিদা আকতার বলেছেন, যে কোনো খাদ্য সামগ্রী প্যাকেট ও বোতলজাত করতে হলে বিএসটিআই অনুমোদন বাধ্যতামূলক। নয়তো এমন অবৈধ পণ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
সরেজমিনে সোমবার দুপুরে দেখা গেছে, লিটনের বাড়িতে তিন কড়াইতে দুধ জ্বাল দেওয়া হচ্ছে ঘোল তৈরির জন্য। পাশেই একটি ঘরে গাদাগাদি বসে হাতের স্পর্শে বোতলে ঘোল ভরছেন তার পরিবারের সদস্যরা। এ কাজে তারা হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করছেননা। রাব্বির বাড়িতে দেখা গেছে, ৪টি ছসমেনে ঘোল রাখা হয়েছে। ঘোলের মধ্যে মাছি ও ময়লা পড়ে আছে। ছসমেনের সেই ঘোল ময়লাযুক্ত কাপর দিয়ে ছেঁকে বোতলে ভরছেন তার মা ও বোন।
লিটন ও রাব্বি’র দাবি, তারা স্বাস্থ্যকর পরিবেশেই ঘোল তৈরি করে তা বিক্রি করছেন। কিন্তু দুজনেই স্বীকার করেন, বিএসটিআই অনুমোদনসহ প্রয়োজনীয় কাজপত্রের কোনটাই তাদের নেই।সোমবার বিকেলে তাড়াশ বাজার, বিনসাড়া হাট, বস্তুল বাজার, মাধাইনগর বাজারস ও কাটাগাড়ি বাজারের কয়েকটি খাবার হোটেল ও ফলের দোকানে লিটন ও রাব্বির তৈরি করা ঘোল বিক্রি করতে দেখা গেছে। তাদের ঘোলের বোতলে বিএসটিআই অনুমোদনের লেবেল লাগানো রয়েছে। উজ্জল ও কাজল নামে দুইজন ক্রেতা বলেন, সব কোম্পানির ঘোল দেখতে এক রঙের। বোতলগুলো একই রকমের। স্বাদে কিঞ্চিত কম-বেশি হলেও সারাদিন রোজা রেখে ইফতারির সময় তা খেতে বিবেচনায় থাকেনা।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জামাল মিয়া শোভন সতর্ক করেছেন, এ ধরনের ঘোল খেয়ে বিশেষ করে ইফতারিতে খেলে ফুড পয়জনিং থেকে ষ্টং ডায়রিয়া পর্যন্ত হতে পারে। এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নিবার্হী মাজিস্ট্রেট মো. মেজবাউল করিম বলেন, ভোক্তা অধিকার আইন অনুযায়ি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।