ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধিঃ
চৈত্র মাসের তীব্র দাবদাহে পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন ও পৌর সভার অধিকাংশ নলকূপ দিয়ে উঠছে না পানি। ফলে এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র পানির সংকট। পাশাপাশি পানির অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছে এসব এলাকার সাধারণ মানুষ।
আবার কোথাও কোথাও গভীর নলকূপেও পাওয়া যাচ্ছেনা পানি। অস্বাভাবিকভাবে পানির স্তর নীচে নেমে যাওয়ার ফলে অবস্থা প্রকট হওয়ায় এই রমজানে দিশেহারা এলাকাবাসী। পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। তারা ঠিকমত নামাজ রোজা পালন করতে পারছে না। এদিকে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতর জানিয়েছেন, পরিবেশগত নানা কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত পানির স্তর গড়ে ৪০ থেকে ৭০ ফুট গভীরে। বেশিরভাগ এলাকায় এ স্তর পৌঁছালেই পানি পাওয়ার কথা। কিন্তু উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় অস্বাভাবিকভাবে নীচে নেমে গেছে পানির স্তর। প্রতি বছর তীব্র তাপদাহে মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত এ অবস্থা আরোও প্রকট আকার ধারণ করে।
সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ এলাকায় অগভীর নলকূপে পানি উঠা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। সবচেয়ে কষ্টের সম্মুখিন হয়েছেন উপজেলার পল্লীঅঞ্চলের মানুষেরা। এ উপজেলার প্রতি ১০টি নলকুপের মধ্যে ৮টিই অকেজো হয়েছে। নামাজের ওযুর পানি থেকে শুরু করে খাবার পানি, গোসলের ও গৃহস্থলীর কাজের জন্য পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। উপজেলার পুকুর ও জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিশুদ্ধ পানির জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। উপজেলার খানমরিজ ইউনিয়নের সাতবাড়িয়া ও চন্ডিপুর গ্রামের রুহুল আমিন,আঃ করিম শিল্পি ও বিলকিস জানান, পানির সংকটে আমরা কোন কাজই ঠিকমত করতে পারছি না। বিশেষ করে এই রমজানে খুবই কষ্ট হচ্ছে পানির জন্য। দিনের বেলা পানি সংগ্রহ করে না রাখলে রাতে রোজা রাখতে সমস্যা হয়।
আর অষ্টমনিষা ইউনিয়নের ছোট বিশাকোল গ্রামের রহিম ও শেফালী বেগম জানান, পানির অভাবে যাদের সাব-মার্চেবল নলকুপ আছে তাদের ওখানে গিয়ে পানি নিয়ে আসি। অনেক কথা শুনতে হয়। আর কয়বারই বা যাওয়া যায়। পাবনা জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মেহরাজ উদ্দিন বলেন, পানির লেয়ার নীচে নেমে যাওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তারপর বৃষ্টিও নেই। যারা নিজস্বভাবে নলকুপ স্থাপন করেছে তাদেরই সমস্যা দেখা দিয়েছে। সরকারিভাবে গভীর নলকূপে তেমন কোন সমস্যা নেই।