বিশেষ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের তাড়াশসহ চলনবিলের সর্বত্র ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর আশঙ্কাজনকভাবে নিচে নেমে যাচ্ছে। এ কারণে বোরো চাষীরা ১০ থেকে ১২ ফুট পর্যন্ত মাটি গর্ত করে শ্যালো মেশিন বসিয়ে পানি তোলার প্রাণান্তর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
সরেজমিনে তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়ন, মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়ন ও সগুনা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠে বোরো আবাদের জমিতে দেখা যায়, অনেক বোরো চাষী গভীর নলকূপ স্থাপনের পরও জমিতে সেচ কাজে আশানুরূপ পানি পাচ্ছেননা। তারা গর্তের মধ্যে মেশিন বসিয়ে পানি তোলার চেষ্টা করছেন। শুধু ফসলের মাঠে নয়, সগুনা ইউনিয়নের ভেটুয়া গ্রাম ও চরকুশাবাড়ি, নওগাঁ ইউনিয়নের মহেষ রৌহালী ও বিরৌহালী এবং মাগুড়া বিনোদ ইউনিয়নের মাগুড়া গ্রাম ও ঘরগ্রাম, দবিলাসহ বেশিরভাগ গ্রামে নলকূপ দিয়ে পানি পেতে সমস্যা হচ্ছে। লোকজন বাড়ির আঙিনার ১৮ থেকে ২০ ফুট নিচে গভীর নলকূপ বসিয়ে পানির ব্যবস্থা করছেন। ভুক্তভোগী বোরো চাষী আরমান আলী, ইয়াকুব আলী, কাজেম উদ্দিন, সামছুল হক ও কাদের হোসেন বলেন, ৯০ থেকে ১২০ ফুট গভীরে পাইপ বসিয়েও সেচ কাজের জন্য ঠিক মতো পানি পাওয়া যাচ্ছেনা। শ্যালো মেশিনে পানি কম ওঠায় বোরো চাষাবাদে জ্বালানি খরচ বেড়ে গেছে। সেচ কাজে সময় বেশি লাগছে। বসতবাড়িতে পানি সমস্যায় নলকূপ আলাদা-আলাদা স্থানে স্থাপন করে পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। উপজেলা বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও উপজেলা সেচ কমিটির সদস্য সচিব মো. ইমাম হোসেন বলেন, চৈত্র মাসের মাঝামাঝি সময়ে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর আরো নিচে নেমে যেতে পারে।এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লুৎফুননাহার লুনা বলেন, চলনবিলের নদী, ডোবা, নালা ও খালে পানি থাকলে বোরো চাষীদের সেচ কাজে অসুবিধা হতো না। অতি বৃষ্টি হলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর কিছুটা উপরে উঠবে। নয়তো বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে কোনো সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তবে বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, খালবিল শুকিয়ে যাওয়া এবং যুগযুগ ধরে ভূগর্ভের পানি তোলার ফলে আজকের এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।