চলনবিল বার্তা ডেস্ক: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আটক অবস্থায় লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর পর এই আইন নিয়ে আবার প্রশ্ন উঠেছে। মানবাধিকারকর্মী ও আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই আইনের কয়েকটি ধারার অপপ্রয়োগ চলছে। যার অন্যতম নজির লেখক মুশতাকের মৃত্যু।তাঁরা আরো বলছেন, পুরো আইন নয়, এ আইনের কয়েকটি ধারা সংবিধান প্রদত্ত বাকস্বাধীনতা পরিপন্থী। আইনটির অপপ্রয়োগের যে অভিযোগ উঠছে, সেটা বন্ধ করতে হলে এর সংশ্লিষ্ট ধারাগুলো বাতিল করতে হবে। এ আইনের মামলাকে জামিনযোগ্য করতে হবে। যত দিন এটা না হবে তত দিন এ আইনের অপপ্রয়োগ চলতেই থাকবে। বাকস্বাধীনতা খর্ব হতেই থাকবে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনটি জাতীয় সংসদে ২০১৮ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর পাস হয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন আর্টিকেল-১৯-এর তথ্যানুযায়ী, আইনটি পাস হওয়ার পর থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ১৯৮টি মামলায় ৪৫৭ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে গণমাধ্যমকর্মীর সংখ্যা ৭৫।সম্পাদক পরিষদ ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন আইনটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছে। এ দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশও হয়েছে।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা জামিন অযোগ্য ধারায় হওয়ার কারণে নিম্ন আদালত থেকে কোনো আসামিই জামিন পাচ্ছেন না দীর্ঘদিন ধরে। সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলসহ এ পর্যন্ত যাঁরাই জামিনে কারামুক্ত হয়েছেন, তাঁরা সবাই উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। লেখক মুশতাক আহমেদকে গত বছর মে মাসে গ্রেপ্তার করার পর ছয়বার তাঁর জামিন আবেদন নিম্ন আদালতে খারিজ হয়েছে।লেখক মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় বিচার বিভাগীয় অথবা নিরপেক্ষ কোনো কমিটির মাধ্যমে অনুসন্ধানের দাবি করছেন আইনজীবীরা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অব্যাহত অপপ্রয়োগের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে গত বছর এই আইনটির চারটি ধারা (২৫, ২৮, ২৯ ও ৩১ নম্বর ধারা) বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়। এসব ধারা সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে প্রদত্ত মৌলিক অধিকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা পরিপন্থী উল্লেখ করে তা বাতিল চাওয়া হয়। তবে হাইকোর্ট দুটি ধারা (২৫ ও ৩১ নম্বর) কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন গত বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি। এই রুল এখন হাইকোর্টে বিচারাধীন। সূত্র: নিউজ ২৪।