সাব্বির আহম্মেদঃ মৎস্য ভান্ডার খ্যাত সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলর নওগাঁ ইউনিয়নের মহিষলুটি এলাকায় হাটিকুমরুল -বনপাড়া মহাসড়ক সংলগ্ন উত্তর বঙ্গের বিখ্যাত মাছের আড়ত মহিষলুটি। সেখানে খাজনা আদায়ে সরকারী নিয়ম মানা হয়না । ইজারাদারের কথাই শেষ কথা। আর প্রতিনিয়ত অতিরিক্ত খাজনার টাকা দিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শত শত খুচরা ও পাইকারী মাছ ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, উত্তর বঙ্গের সবচেয়ে বড় মাছের আড়ত তাড়াশের মহিষলুটি। সেখানে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ ,রায়গঞ্জ ,উল্লাপাড়া , শাহজাদপুর , পাবনার ফরিদপুর ,ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর ,নাটোরের গুরুদাসপুর , সিংড়া ও নওগাঁর জেলার আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে শত শত মণ পুকুরে চাষ করা ও দেশীয় প্রজাতির বিলের ভাসা মাছ আসে ।
আর ঢাকা , ময়মনসিংহ ,জানালপুর ,পাবনা ,কুষ্টিয়া সিরাজগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩০০-৩৫০ জন (মাছ ক্রেতা ) পাইকার মহাজন মহিষলুটি মাছের আড়তে মাছ কিনতে আসেন । আর সেখানে অবস্থিত প্রায় ১১০ টি আড়তে প্রতিদিন গড়ে ৪০-৪৫ লাখ টাকার মাছ কেনা বেচা হয়ে থাকে বলে জানান,আড়তদার সুজন সরকার।
কিন্ত মাছ কেনা-বেচার এই গুরুত্ব পূর্ণ স্থানটিতে খাজনা আদায়ের নেই কোন নিয়ম নীতি। ইজারাদার সরকারী নিয়ম না মেনে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে ১০-১২ গুন বেশী খাজনা আদায় করছেন বলে অভিযোগ আড়তে আগত মাছ ক্রেতা পাবনার সুজা নগরের আরব আলী । তিনি জানান , আমরা এক অর্থে ইজারাদারের কাছে জিম্মি ও অসহায় কেননা আড়তে ইজারার মূল্য তালিকা না টানিয়ে ইচ্ছে মত প্রতি মণ মাছ কিনতে পাইকারদের কাছ ইজারাদার ৬ টাকার স্থলে খাজনা আদায় করছেন ৮০-১২০ টাকা । এর রশিদ পর্যন্ত দেন না ইজারাদার। তাড়াশের মাঝিড়া গ্রামের সোহানুর রহমান জানান,আমার বাড়িতে একটি অনুষ্ঠানের জন্য মহিষলুটি মাছের আড়ত থেকে ১০০ কেজি মাছ কিনি এ সময় ইজারাদারের লোক আমার কাছ থেকে ৩০০ টাকা খাজনা নেন । আমি খাজনার রশিদ চাইলে তারা আমাকে বেঁধে রাখার হুমকি দেয় । মোট কথা এখানে ইজারাদারের কথাই শেষ কথা, তাদের নৈরাজ্যের সীমা নেই। ।
এ ছাড়া ঢাকার মহাজন আয়নাল শেখ ,জামালপুরের মিনহাজ, ময়মনসিহের ফরহাদ আলী সহ একাধিক মাছ ব্যবসায়ী অভিযোগ করে বলেন, ইজারাদার এক ঝাকা নাছের জন্য ৮০-১২০ টাকা ও কোন কোন ক্ষেত্রে এর চেয়ে বেশী খাজনা নেন। আবার প্রতি বরফের খন্ডের (পাটা) জন্য ১০-১৫. আড়তদারদের দাড়ি প্রতি ১০, প্রান্তিক ক্ষুদ্র মাছ বিক্রেতাদের কাছ থেকে ১২০-১৫০ টাকা আদায় করা হয় বলে অভিযোগ করেন সিংড়ার মাছ বিক্রেতা সবুর প্রাং । এ ছাড়া অনেক মাছ ব্যবসায়ীর অভিযোগ খাজনা আদায়কালে ইজারাদারের লোকজন তাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন । অবশ্য মহিষলুটি মাছের আড়তের ইজারাদার মোহাম্মাদ আলী ঝাকা প্রতি ৮০-১০০ টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন । তিনি বলেন, একটা ঝাকায় অনেক মাছ থাকে । আর অনান্য অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, সব অভিযোগ ঠিক না । আপনি দেখা করেন । এ প্রসঙ্গে তাড়াশ ইউএনও মোঃ মেজবাউল করিম বলেন, ইজারাদারকে ডেকে বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব ।