গোলাম মোস্তফা : শীত-গ্রীস্ম সব ঋতুতেই মাটির ঘর আরামদায়ক বাসস্থান। তাড়াশ উপজেলা সহ চলনবিলের সব উপজেলার প্রতিটি গ্রামের প্রায় প্রত্যেক পরিবারেই ছিল মাটির দেয়ালের খড়ের চালের বসতঘর। ধনী-গরিব সবাই সেই ঘরে বসবাস করতেন। তবে কালের আবর্তে আর আধুনিকতার ছোঁয়ায় বিলুপ্ত হতে বসেছে মাটি দিয়ে তৈরি ঘর আর খর বা ছোনের ছাওয়া চাল।
অনুসন্ধান করে সরেজমিনে জানা গেছে, তাড়াশের ৮ ইউনিয়নে ২৪৮টি গ্রামের মধ্যে দেশীগ্রাম ইউনিয়নের আড়ঙ্গাইল গ্রামে পাশাপাশি ২টি পরিবারে শত বছরের পুরান ৩টি মাটির দেয়ালের খড়ের চালের বসতঘর এখনও রয়ে গেছে। ওই মাটির ঘরে বসবাসকারী আব্দুল মালেক (৫৫), আরেকজন ওফিজ উদ্দিন (৬৫)। স্ত্রী, সন্তান, নাতী-নাতনী নিয়ে তারা একসঙ্গে বসবাস করছেন।
আলাপচারিতায় আব্দুল মালেক ও ওফিজ উদ্দিন বলেন, আরামদায়ক মাটির ঘরে দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি বিত্তবানরাও একসময় পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতেন। এই ঘরে শীতকালে যেমন গরম অনুভব হয় তেমনি গ্রীষ্মকালেও থাকতো ঠান্ডা শীতল অনুভূতি। এঁটেল বা এঁটেল দো-আঁশ মাটি দিয়ে কম খরচে খুব সহজেই তৈরি করা যেতো এই ঘর। মাটির দেয়াল তৈরি সম্পূর্ণ হলে তার উপর খড়ের ছাউনি দেওয়া হত। বন্যায় ডুবে না গেলে এসব ঘর শতাধিক বছর পর্যন্ত টিকে থাকে।
তারা আরো বলেন, বর্তমানে মানুষের আধুনিক জীবন যাপনের ইচ্ছা ও আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সবাই মাটির ঘর ভেঙ্গে টিন আর ইটের পাকা-সেমি পাকা বাড়ি তৈরি করেছেন। বিলুপ্ত হয়েছে মাটির ঘর। তাই শুধু তাড়াশেই নয় চলনবিলের আর কোথাও এধরনের বাড়ীঘর আগামীতে খুঁজে পাওয়া যাবে না।