এম এ মাজিদ : গরমের আগমনি বার্তার সাথে সাথে জমে উঠেছে চলনবিলের ঐতিহ্যবাহী খিরার হাট। প্রতি বছরের মত শীত বিদায় আর গরম মৌসুমের আগমনের সাথে সাথে চলনবিলের প্রাণকেন্দ্রে এবছর জমে উঠেছে অস্থায়ী খিরার হাটটি। হাটে প্রতিদিন ভোর থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা নাগাদ বেচা-কেনা হচ্ছে শত শত টন খিরা ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চলনবিলের নাটোর জেলার সিংড়া ও সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলা সিমান্তবর্তী প্রত্যন্ত চলনবিলের প্রাণকেন্দ্র দিঘরিয়া গ্রামে বসেছে ওই হাট। হাটে সিরাজগঞ্জ,নাটোর ও বগুড়া জেলার খিরা চাষীরা খিরা বিক্রি করতে এসেছেন। খিরা কিনতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে আরতদাররা এসেছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকা হতে আগত ক্রেতা-বিক্রেতা ও দর্শকদের পদচারনায় প্রত্যন্ত গ্রামটি জনসমাবেশে মুখর হয়ে উঠেছে। চলনবিলের মাটি এঁটেল জাতিয় হওয়ায় এখানকার উৎপাদিত খিরা খুব সস্বাদু ।বিশেষ করে গরমে ক্লান্ত শরীরে একটু শান্তির পরশ পেতে খিরার বিকল্প কিছু নেই। তাই সারাদেশে এর আলাদা একটা কদর রয়েছে। হাটে প্রচুর পরিমাণে খিরার আমদানি হওয়ায় ওজনের পরিবর্তে এখানে বস্তা চুক্তিতে বিক্রি করা হয়। প্রকারভেদে প্রতি ছোট বস্তা খিরা বিক্রি হচ্ছে ত’শ থেকে ৪’শ টাকা এবং প্রতি বড় বস্তা খিরা বিক্রি করা হচ্ছে ৬’শ থেকে ৭’শ টাকা পর্যন্ত। হাটটি ফেব্রয়ারী থেকে শুরু হয়ে চলবে এপ্রিল পর্যন্ত। চলনবিলের সাচানদিঘি গ্রামের খিরা চাষী মো. রন্জু আহমেদ জানান, প্রতি বিঘা জমিতে খিরা চাষ করতে প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। আর ১বিঘা থেকে উৎপাদিত খিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা।
চলনবিলের মাটি খিরা চাষের উপযোগী হওয়ায় এখানকার কৃষকরা অন্য ফসলের চেয়ে খিরা চাষে বেশি আগ্রহী। তাই দেশের যেকোন এলাকার তুলনায় এখানে খিরা চাষ বেশি হয়। কুসুম্বী গ্রামের খিরা চাষী মো. জিয়াউর রহমান বলেন, অন্যান্য আবাদের চেয়ে খিরা আবাদে ঝুঁকি কম। কারণ এই আবাদে পোকা-মাকড়ের ঝামেলা কম। তাই চলনবিল এলাকার কৃষকেরা খিরা চাষে আগ্রহী বেশী। এবিষয়ে বারুহাস ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোক্তার হোসেন মুক্তা বলেন, খিরার হাটটি বসায় এলাকার খিরা চাষীদের সুবিধা হয়েছে। হাট সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগী দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, শুধু তাড়াশ উপজেলাতেই ৩ শত ৩০ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ করা হয়েছে।
