মো: জাফর ইকবাল
সেঁউচি দিয়ে সারা জীবন সাগর সেচে যেমন সাগরের জলের পরিমাপ কমানো সম্ভব নয়। তেমনি জ্ঞানী একজন মানুষের জ্ঞান ভা-ারের অনুসন্ধান করে তাঁর জ্ঞানের পরিমাপ করা সম্ভব নয়। গত ৯ই নভেম্বরে সিরাজগঞ্জের দৈনিক প্রিন্ট মিডিয়া ‘দৈনিক কলম সৈনিক’ পত্রিকায় প্রকাশিত বিশেষ সংখ্যায় দেখলাম বাংলা সাহিত্যের অমর কথাশিল্পী কালজয়ী উপন্যাসিক মোহাম্মদ নজিবর রহমান সাহিত্যরত্ন এর প্রিয় উত্তরসুরি যুগের নন্দিত কথা সাহিত্যিক, কলামিষ্ট গাজী সৈয়দ শুকুর মাহমুদ এর ৬৭তম অবির্ভাব দিবস উপলক্ষে পত্রিকাটি বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে। এ উপলক্ষে দেশ বরেণ্য অনেক কবি, সাহিত্যিক, লেখক, কলামিষ্ট, গবেষকগণ গাজী সৈয়দ শুকুর মাহমুদ এর জীবনাচার ও সাহিত্যর্কমের আলোচনায় যা লিখেছেন তা দেখে বিস্মিত না হবার কোন সুযোগ নেই। সিরাজগঞ্জ প্রিন্ট মিডিয়া ‘দৈনিক কলম সৈনিক’ পত্রিকায় প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ “শাহজাদার কাঁধে ভিক্ষার ঝুলি” পড়ে তার সাথে সাক্ষাতের ইচ্ছা পোষণ করি। সে সূত্রেই এক সময়ে তার সাথে আমার সাক্ষাতের সুযোগ হয়। আর সে থেকেই জানা হলো তিনি গভীর জ্ঞানের একজন মানুষ।
গাজী সৈয়দ শুকুর মাহমুদ শুধু লেখনিতে নয় দেশ ও মাতৃভূমির সার্বভৌমত্ব রক্ষার্থে অতন্দ্র প্রহরি হিসেবে দয়িত্বরত অবস্থায় বিভিন্ন পরিবেশে তার অগ্রণী ভূমিকা পরিলক্ষিত হয়। তিনি ১৯৬৯ খ্রি: পূর্ব পাকিস্তান আনসার বাহিনীতে যোগদান করে সৈনিকের ভূমিকা পালন করেছেন। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে সফল মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিজয়ী বীর সৈনিক। ১৯৮৪ সাল হতে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি শাহজাদপুর উপজেলা আনসার কমান্ডার হিসেবে সুনাম ও দক্ষতার সহিত ভূমিকা রেখেছেন। একই সময়ে ১৯৮৪ সাল হতে বর্তমান সময় পর্যন্ত উপজেলা প্রকৌশলীর দপ্তর ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দপ্তরে অলিখিত সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন যা দেখলে মনে হয় তিনি একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ প্রকৌশলী। তার এসকল যোগ্যতার বিষয়ে গবেষণায় দেখা গেছে তিনি কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত না হয়েও যে সকল কার্যক্রম করে আসছেন তাতে সৃষ্টিকর্তার নিজস্ব জ্ঞানে জ্ঞানী না হলে এসকল কার্যক্রম সম্ভব হতো না।
আমরা যারা বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার্থীদের গুরু হয়েছি কোন না কোন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষা অর্জন করে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আজ শিক্ষার্থীদের গুরু হয়েছি। অথচ ভারত উপ-মহাদেশে আলোড়ন সৃষ্টিকারী বিখ্যাত উপন্যাস আনোয়ারার লেখক মোহাম্মদ নজিবর রহমান সাহিত্যরত্ন এর প্রিয় নাতি যুগের নন্দীত কথা সাহিত্যিক-কলামিষ্ট গাজী সৈয়দ শুকুর মাহমুদ তিনি আমাদের মত গুরুদের গুরুগিরি করার মত যোগ্যতা অর্জন করেছেন। এ বিষয়টি সত্য’ই অতি আশ্চর্য্যরে বিষয়। বর্তমান সময়ে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, যে সকল কবি-সাহিত্যিক ও কলামিষ্ট উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে লেখালেখি করছেন তারাও গাজী সৈয়দ শুকুর মাহমুদকে গুরু বলে সম্বোধন করছেন। এই সাহিত্যিক সকল বিষয়ে’ই চৌকষ ভূমিকা রাখছেন। তিনি যে সকল কবিতা রচনা করেন তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভাবার্থ লুকায়িত। সাহিত্য ও সংস্কৃতির সংস্কার বিষয়ে যে সকল কলাম লিখছেন তাতে মনে হয় তিনি সাহিত্যে পান্ডিত্য অর্জন করেছেন। ধর্ম ও সামাজিক বিষয়ে যে সকল কলাম বা প্রবন্ধ প্রকাশিত হচ্ছে তাতে নিঃসন্দেহে তিনি একজন উঁচু মানের গবেষক না ভাবার কোন সুযোগ নেই? তার ৬৭তম জন্ম বার্ষিকী স্বরণে তার সু-স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনার পাশাপাশি গবেষণামুলক আরো লেখা কামনা করছি।