হজ করার চেয়ে বড় বিষয় হল জীবনব্যাপী হজ ধারণ করা। এটাই হজের আসল সার্থকতা।
আল্লাহর পথে দাওয়াত দেয়ার পদ্ধতি
মুফতি খোন্দকার আমিনুল ইসলাম আবদুল্লাহ ছবি
আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতিকে আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। আর তাদের সার্বিক জীবন পরিচালনার জন্য ইসলামকে একমাত্র দ্বীন হিসাবে মনোনীত করে তার যাবতীয় বিধি-বিধান অহী মারফত জানিয়ে দিয়েছেন এবং তা বাস্তবায়ন করার জন্য যুগে যুগে নবী-রাসূলগণকে প্রেরণ করেছেন। আর নবী-রাসূলগণের প্রত্যেকেই দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর যাবতীয় বিধানকে সর্বস্তরের মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘আমি এমন কোন জিনিসই ছাড়িনি যার হুকুম আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে দিয়েছেন; কিন্তু আমি তার হুকুম তোমাদেরকে অবশ্যই দিয়েছি। আর আমি এমন কোন জিনিসই ছাড়িনি যা আল্লাহ তা‘আলা নিষেধ করেছেন; কিন্তু আমি তোমাদেরকে তা অবশ্যই নিষেধ করেছি’। বর্তমানে আমাদের মাঝে রাসূলুল্লাহ (সঃ) জীবিত নেই। তবে তিনি আমাদের সার্বিক জীবন পরিচালনার দিশারী হিসেবে কুরআন ও ছহীহ হাদীসকে আমাদের মাঝে রেখে গেছেন। আর এই মানদন্ডের ভিত্তিতে আল্লাহর দিকে মানুষকে দাওয়াত দেওয়ার দায়িত্ব আমাদের উপর অর্পিত হয়েছে।
প্রথমে আমরা ইসলামের দিকে মানুষকে আহ্বান করার গুরুত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করার পর অমুসলিমদেরকে দাওয়াত দেয়ার পদ্ধতিগুলো নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।মানুষকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দেয়ার গুরুত্ব ও মর্যাদা: মহান আল্লাহ বলেন, “হেকমত (জ্ঞান ও প্রজ্ঞা) ও উত্তম উপদেশের মাধ্যমে তোমার রবের পথে আহবান কর। আর সর্বোত্তম পন্থায় তাদের সাথে বিতর্ক কর। আপনার রব তো সবচেয়ে বেশি জানেন কে তার পথ থেকে বিচ্যুত এবং তিনিই ভাল জানেন কে হেদায়েত প্রাপ্ত। (সূরা নাহলঃ ১২৫)
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:“তোমার মাধ্যমে যদি আল্লাহ একজন লোককেও হেদায়েত দেন তবে তা তোমার জন্য একটি লাল উট পাওয়া থেকেও উত্তম।” (বুখারী ১২/৩৭)তিনি আরো বলেন“যে ব্যক্তি হেদায়েতের পথে আহবান করে সে ঐ পরিমাণ সওয়াবের অধিকারী হয় যে ব্যক্তি তদনুযায়ী আমল করে। কিন্তু এতে আহ্বানকারীর সওয়াব কমানো হয় না।”
অমুসলিমকে দাওয়াত দেয়ার ১০টি পদ্ধতি:
১. যার নিকট ইসলামের দাওয়াত দিতে চান নিজেকে তার সামনে আদর্শ মুসলিম হিসেবে ফুটিয়ে তোলা। একজন দাঈ সকল অবস্থায় তার আচার-ব্যবহার, কথা-বার্তা, ইবাদত-বন্দেগি ইত্যাদি বিষয়ে আদর্শবান হবেন। কারণ আদর্শবান ব্যক্তিত্ব ও সুন্দর ব্যবহার মানুষকে ইসলামের দিকে আহ্বানের ক্ষেত্রে খুব বেশি অবদান রাখে।
২. দাওয়াত দেয়ার ক্ষেত্রে জ্ঞান, প্রজ্ঞাপূর্ণ সুন্দর ও নম্র ভাষা ব্যবহার করা এবং বিতর্কের প্রয়োজন হলে দলীল-প্রমাণ ও যৌক্তিক পদ্ধতিতে বিতর্ক করা।
৩. যাকে দাওয়াত দিবেন তার চিন্তা-ভাবনা, সংশয়, মতবাদ, দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি সম্পর্কে যথাসম্ভব জানার চেষ্টা করা এবং সে আলোকে তার সাথে কথা বলা।
৪. সবার আগে তার হৃদয়ে তাওহীদ তথা একত্ববাদ ও আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের বীজবপন করা। মহান আল্লাহ আমাদের স্রষ্টা এবং জীবন ও মৃত্যুদাতা। ভালো কাজ করলে তিনি পরকালে আমাদেরকে পুরস্কৃত করবেন এবং খারাপ কাজের প্রতিদানে শাস্তি প্রদান করবেন।এছাড়াও ইসলামের অন্যান্য আকীদা ও বিশ্বাসের মৌলিক বিষয়গুলো তার হৃদয়পটে প্রথিত করা।
৫. ধৈর্য ধারণ করা। সময়, শ্রম, তার অনাগ্রহ, অভদ্র আচরণ ইত্যাদির ক্ষত্রে ধৈর্যের পরিচয় দেয়া। তাড়াহুড়া ফল লাভের আশা করা ঠিক নয়। আপনার আজকের দাওয়াত হয়ত বহু দিন পর তার হৃদয়কে আলোড়িত করবে। তাই দাওয়াত অব্যাহত রাখতে হবে। কোনভাবেই হতাশা অনুভব করা যাবে না। বরং দীর্ঘ মেয়াদী চিন্তা সামনে রেখে সবরের পরিচয় দেয়া জরুরি।
৬. তাকে কুরআন পড়ার জন্য উৎসাহিত করা। প্রয়োজনে তাকে কুরআনের তরজমা ও তাফসীর উপহার দেয়া।
৭. তার সামনে ইসলামের সৌন্দর্যময় দিকগুলো ফুটিয়ে তোলা। অন্যের ধর্ম বা মতবাদের বদনামের চেয়ে তার কাছে ইসলামের সৌন্দর্যময় দিকগুলো তুলে ধরা অধিক ফলপ্রসূ।
৮. দাওয়াতের স্বার্থে যাকে দাওয়াত দিতে চান তার সেবা ও সমস্যা সমাধানে নিজের সময়, শ্রম, মেধা ও যথাসম্ভব অর্থ খরচ করা।
৯. তার জন্য ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞানার্জনের উপায়-উপকরণগুলো সহজলভ্য করা। যেমন কিছু ভালো বই পড়তে দেয়া বা ভালো ওয়েবসাইট, ভিডিও ক্লিপ ইত্যাদিগুলো সরবরাহ করা।
১০. তার হেদায়েতের জন্য মহান আল্লাহর নিকট দুআ করা।
মনে রাখতে হবে, আল্লাহই প্রকৃত হেদায়েতের মালিক। তিনি যাকে ইচ্ছা আলোকিত পথের সন্ধান দেন। আমাদের কাজ কেবল দ্বীনের দিকে আহ্বান জানানো এবং এ পথে যথাযথভাবে পরিশ্রম করা এবং ফলাফল একমাত্র আল্লাহর উপর সমর্পণ করা। সব নবী রাসুলই দাওয়াত, তাবলিগ, তালিম ও তারবিয়াতের কাজ করেছেন। যেহেতু নতুন কোনো নবী ও রাসুল আর আসবেন না, তাই কিয়ামত পর্যন্ত দাওয়াত, তালিমে দ্বীনের কাজ আখেরি নবীর উম্মত তথা উম্মতে মুহাম্মদীকেই করে যেতে হবে।ইসলামের কল্যাণের বিষয়গুলো মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হলো তাবলিগ। হাদিস শরিফে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘তোমরা আমার পক্ষ থেকে একটি আয়াত হলেও পৌঁছে দাও।’ (জামে তিরমিযি)। বিদায় হজের ভাষণে মহানবী (সা.)–এর সর্বশেষ বাক্য ছিল, ‘তোমরা যারা উপস্থিত রয়েছ তারা যেন অনুপস্থিতদের কাছে পৌঁছে দাও।’ (সিরাতে ইবনে হিশাম)। দাওয়াত তাবলিগের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো সৎকাজে আদেশ ও মন্দ কাজে নিষেধ করা।
বিজ্ঞ উলামায়ে কিরাম কোরআন ও হাদিসের আলোকে বলেন, দ্বীনি দাওয়াত, তাবলিগ, তালিম ও তারবিয়াতের কাজে সফলতার জন্য চারটি বিষয় থাকা জরুরি। এগুলো হলো: মোহব্বত, আজমাত, হিকমাত ও খিদমাত। অর্থাৎ দাওয়াত ও তাবলিগের ক্ষেত্রে প্রথমত ভালোবাসা ও দরদ থাকতে হবে; দ্বিতীয়ত সম্মানবোধ থাকতে হবে তথা বিনয়, নম্রতাসহকারে দাওয়াত দিতে হবে, তালিম ও তাবলিগের কাজ করতে হবে; তৃতীয়ত কৌশলী হতে হবে স্থানকাল পাত্র বুঝে দাওয়াত, তালিম ও তাবলিগ পেশ করতে হবে; চতুর্থত, দাওয়াত, তালিম ও তাবলিগের জন্য খেদমত বা সেবার পথ অবলম্বন করতে হবে।সর্বোপরি দাওয়াত, তালিম ও তাবলিগের কাজে সব সময় ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ধারণ ও লালন করতে হবে। কখনো নেতিবাচক চিন্তা মনে স্থান দেওয়া যাবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরা আহ্বান করো তোমাদের রবের পথে, হিকমাহ এবং সুন্দর উপদেশের মাধ্যমে।’ (সুরা-১৬ নাহল, আয়াত: ১২৫)।দাওয়াত ও তাবলিগের কাজে মননে চিন্তায় ও কর্মে উদার হতে হবে। সারা বিশ্বকে একই পরিবার ভাবতে হবে। পুরো মানবজাতি একই পরিবারের সদস্য। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির কল্যাণের জন্য তোমাদের আবির্ভাব ঘটানো হয়েছে; তোমরা সৎকাজের আদেশ করবে, অসৎ কাজে নিষেধ করবে এবং আল্লাহকে বিশ্বাস করবে।’ (সুরা-৩ আলে ইমরান, আয়াত: ১১০)।
কাউকে হেয় জ্ঞান করা যাবে না, কাউকে প্রতিপক্ষ ভাবা যাবে না। কারও প্রতি হিংসা–বিদ্বেষকে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না এবং কাউকে অশ্রদ্ধা করা বা অসম্মান করা সমীচীন হবে না। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তুমি এমন উত্তমভাবে মন্দের মোকাবিলা করবে, যাতে তোমার সঙ্গে যার শত্রুতা রয়েছে সে–ও প্রাণের বন্ধু হয়ে যায়।’ (সুরা-৪১ হামিম সাজদাহ, আয়াত: ৩৪)। নিজের জ্ঞানগরিমা, যোগ্যতা ও সামর্থ্যের ওপর আত্মতৃপ্ত হওয়া যাবে না। সদাসর্বদা আল্লাহর ওপর ভরসা রাখতে হবে। দাওয়াত ও তাবলিগের উদ্দিষ্টদের জন্য দোয়া করতে হবে এবং নিজের ভুলত্রুটি অযোগ্যতা, অদক্ষতা ও অপারগতার জন্য প্রতিনিয়ত কায়মনোবাক্যে আল্লাহর কাছে শরমিন্দা থাকতে হবে ও ক্ষমা ভিক্ষা করতে হবে।
মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআন মাজিদে বলেছেন, ‘মহাকালের শপথ! মানুষ অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত; কিন্তু তারা ক্ষতিগ্রস্ত নয়, যারা ইমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পর একে অন্যকে সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্যধারণের পরামর্শ প্রদান করে।’ (সুরা-১০৩ আসর, আয়াত: ১-৩)।নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাবা যাবে না। আমি দ্বীনের যে কাজ করছি এটাকে একমাত্র দ্বীনি কাজ মনে করা যাবে না এবং এটাকে সর্বশ্রেষ্ঠ কাজও মনে করা যাবে না। এতে নিজেকে শ্রেষ্ঠ দাবি করা হয়। বরং দ্বীনি কাজকে ইমানি দায়িত্ব মনে করে নিজেকে দ্বীনের সামান্য খাদেম হিসেবে পেশ করতে হবে।
ধৈর্যধারণকারীর সাফল্য সুনিশ্চিত, কারণ আল্লাহ তাআলা ধৈর্যধারণকারীর সঙ্গে থাকেন, আর আল্লাহ রাব্বুল আলামিন যার সঙ্গে থাকবেন, তার সফলতা অবধারিত। কোরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে মুমিনগণ! ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে তোমরা সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সহিত আছেন।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৫৩)।
এ বিষয়ে আল্লাহ তাআলা কোরআন মাজিদে বলেন, ‘আমি তোমাদের কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং ধনসম্পদ, জীবন ও ফল-ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দ্বারা অবশ্যই পরীক্ষা করব। তুমি শুভ সংবাদ দাও ধৈর্যশীলগণকে, যারা তাদের ওপর বিপদ আপতিত হলে বলে, “ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন” অর্থাৎ আমরা তো আল্লাহরই এবং নিশ্চিতভাবে তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তনকারী।’ (সুরা-২ বাকারা, আয়াত: ১৫৫-১৫৭)। আজও আমরা বিপদ-আপদে পড়লে এই দোয়া পড়ি; কিন্তু এটি আমরা পড়ি অধৈর্য হয়ে পড়লে তখনই। মূলত আমরা এর দর্শন ভুলে গিয়ে এটিকে প্রথায় পরিণত করেছি।
নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের দাওয়াতের মূলনীতি ছিল এমন যে, ‘না তারা কোনো মূর্তিকে, না ক্রুশকে, না আগুনকে এবং না অন্য কোন কিছুকে প্রভু বলে স্বীকার করবে। বরং কেবল এক আল্লাহরই ইবাদত করব। আর এটাই ছিল প্রত্যেক নবির দাওয়াত। রোম সম্রাটের প্রতি বিশ্বনবির চিঠি : কোরআনুল কারিমের এই নির্দেশ অনুযায়ী রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রোম সম্রাট হিরাক্লিয়াসের কাছে চিঠি পাঠান এবং চিঠির মাধ্যমে এই আয়াতের দাবী অনুযায়ী তাকে ইসলাম কবুল করার প্রতি আহবান জানান। দাওয়াতটি ছিল এমন-
‘ইসলাম কবুল করে নাও, নিরাপত্তা পাবে; মুসলিম হয়ে যাও, তাহলে মহান আল্লাহ তোমাকে দ্বিগুণ নেকি দেবেন। কিন্তু যদি তুমি ইসলাম স্বীকার না কর, তাহলে তোমার কতৃত্বাধীন প্রজাদের পাপও তোমার উপর পতিত হবে।’ (বুখারি) কারণ, প্রজাদের ইসলাম স্বীকার না করার কারণই হবে তুমি। কোরআনুল কারিমের আলোচ্য আয়াতে তিনটি মৌলিক বিষয় উল্লিখিত হয়েছে। তাহলো-
১. কেবল আল্লাহরই ইবাদত করা;
২. তাঁর সঙ্গে কাউকে শরিক না করা এবং
৩. কাউকে শরিয়তের বিধান প্রণয়নের ইলাহি মর্যাদা না দেওয়া।
এটাই সেই ‘অভিন্ন বাক্য’ যার উপর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রতি আহলে-কিতাবদেরকে আহবান জানানো হয়েছিল। (আহসানুর বয়ান)সুতরাং বর্তমান সময়েও এই শতধা-বিভক্ত ও বিচ্ছিন্ন উম্মতকে ঐক্যবদ্ধ করতে এ আয়াতে উল্লেখিত উক্ত তিনটি বিষয়কে এবং এই ‘অভিন্ন বাক্য’কে অধিকরূপে মূলনীতি ও বুনিয়াদ হিসাবে গ্রহণ করার বিকল্প নেই।
তাফসিরে জালালাইনের বর্ণনায়- হে রাসুল! আপনি বলে দিন, হে আহলে কিতাব তথা আসমানি কিতাবের অনুসারি ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানরা, আস এমন কথার দিকে; যা আমাদের ও তোমাদের মাঝে একই রকম। একই সমান তার বিষয়সমূহ। তাহলো- আমরা আল্লাহ ব্যতিত কারও ইবাদত করি না, কোনো কিছুকেই তাঁর সঙ্গে শরিক করি না। তোমরা যেমন তোমাদের ধর্মের অভিজ্ঞ ও সন্ন্যাসীদেরকে ‘রব’ বলে মেনে নিয়েছ, তেমনি আমাদের কেউ আল্লাহ ব্যতিত অপর কাউকেও রব বলে গ্রহণ করে না। যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়। তাওহিদ তথা আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী হওয়া থেকে বিমুখ হয় তবে তোমরা তাদের বল- তোমরা আমাদের ব্যাপারে এ কথার উপর সাক্ষী থাকা যে, আমরা আত্মসমার্পণকারী অর্থাৎ তাওহিদ তথা আল্লাহর একত্ববাদের অবলম্বনকারী।
ভিন্ন ধর্মে দাওয়াতের মূলনীতি ঃ
আল্লাহ তাআলা এ আয়াতে দাওয়াত ও তাবলিগের মূলনীতি, পদ্ধতি কেমন হবে তা ঘোষণা করা হয়েছে। তাহলো- ‘আস! ওই বিষয়ের দিকে, যা আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে সমান’। এ আয়াত থেকে তাবলিগ ও ধর্মের প্রতি কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলকে আহ্বান করার মূলনীতি জানা যায়। তাহলো এমন যে-‘ভিন্ন মতের কাউকে ধর্মের প্রতি আহ্বান জানাতে হলে প্রথমে তাকে শুধু এমন বিষয়ের প্রতি আহ্বান জানানো উচিত, যে বিষয়ে উভয় পক্ষ একমত হতে পারেন।’আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনুল কারিমের নির্দেশনা অনুযায়ী ইসলামের দিকে আহ্বান করার তাওফিক দান করুন। নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শেখানো পদ্ধতিতে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজে সম্পৃক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।
লেখক ঃ বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ, লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক। শেরপুর, বগুড়া।
সম্পাদকীয়
তাড়াশে গরুর মহামারি রোগ
প্রাণী সম্পদ অফিসে চিকিৎসক নেই কেন ?
ছবি
দেশের অন্যান্য জায়গার মতো তাড়াশ উপজেলায়ও লাম্পিং স্কীন নামে গরুর ভয়াবহ সংক্রামক রোগ বর্তমানে মহামারী আকার ধারণ করতে যাচ্ছে। বলাবাহুল্য উপজেলার সর্বত্র দ্রæত এ ভাইরাসজনিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। গত ১৫ দিনে ৫০টির অধিক গরুর মৃত্যু ঘটেছে বলে জানা গেছে।এখনও আশংকাজনক হারে গরুর মড়ক ও গরু মৃত্যু বেড়ে চলেছে। মশা-মাছির মাধ্যমে এক গরু থেকে অন্য গরুতে এ রোগ সংক্রমিত হচ্ছে বলে ধারণা। সাধারণ কৃষক ও খামারিরা এরই মধ্যে কোন উপায়ান্তর না দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। তারা এ ব্যাপারে সঠিক পরামর্শ ও গরুর রোগ চিকিৎসার জন্য দিকবিদিক ছোটাাছুটি করে চলেছে। লাখ লাখ টাকার গরু মালিকের চোখের সামনেই উপযুক্ত চিকিৎসা না পেয়ে কয়েকদিনের মধ্যেই মারা যাচ্ছে। সঠিক ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন না পেয়ে তারা পল্লী ভেটেনারী চিকিৎসক কিংবা ভেটেনারীওষুধের দোকানদারের পরামর্শে দোকানের ঔষধ কিনে অথবা টোটকা চিকিৎসার উপর নির্ভর করছে বাধ্য হয়ে। কেননা, উপজেলার একমাত্র পশু চিকিৎসা ও সেবার কেন্দ্রস্থল তাড়াশ উপজেলার প্রাণী সম্পদ অফিসে এই দুর্যোগপূর্ণ জরুরী মুহূর্তে পশু-প্রাণীর ডাক্তার তো দূরের কথা কোন স্টাফই নেই। অর্থ্যাৎ প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ ও শূন্য পড়ে আছে তাড়াশ প্রাণী সম্পদ কার্যালয়। উপজেলার ২ লক্ষাধিক মানুষের পশু-প্রাণী সম্পদের চিকিৎসার একমাত্র ভরসাস্থল যে অফিস, তার এই দুর্দশা তথা জীর্ণদশা এলাকাবাসীর জন্য কাম্য হতে পারে না। প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ তাদের রোগ জর্জরিত গরু বা অন্য প্রাণীর চিকিৎসার্থে উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসে এসে কোন প্রকার সেবা-সহায়তা না পেয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যাচ্ছে। একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারী দপ্তরে কোন জনবল বা স্টাফ থাকবে না এটা তো কল্পনার বাইরে। তাহলে সরকারের এসব বিভাগীয় কর্মতৎপরতা কিংবা জনসেবা শুধুই কি লিপ সার্ভিস। সাধারণ মানুষের দুঃখ-দুর্দিনে এমন কি জরুরী প্রয়োজনে যদি সরকারী বিভাগীয় সেবা-সহযোগিতা না-ই পাওয়া যায়; তবে জনগণের করের টাকায় পরিচালিত সরকারী প্রাণীসম্পদ বিভাগের মতো অতি জনগুরুত্বপূর্ণ একটি অফিসের কি ভুমিকা থাকে তা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে।
আজকাল গরু-ছাগল পালন কৃষকের বা জনসাধারণের অন্যতম প্রাধান্যের পেশা বলে বিবেচিত। এখন একটি গরুর মূল্য ন্যূনতম লাখ টাকা। গরু বা গাভী পালন কৃষক বা সাধারণ জনজীবনে অগ্রাধিকারে পরিণত হয়েছে। অধুনা একটি গরু মারা গেলে কৃষক বেশী ক্ষতিগ্রস্থ ও দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়। এমকি গরু মরার ফলশ্রæতিতে মানুষের জীবনেও ভয়াবহ দুঃখ-দুর্দশা নেমে আসে। এর ফলে বহু মানুষ পথে বসে যায় । একই কারণে অর্থনৈতিকভাবে কৃষক বা খামারিরা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। তাই সমাজ জীবনে এর অভিঘাত সাংঘাতিকরুপে রেখাপাত করে। লক্ষ্যনীয়, আগের দিনের মতো নয়। আজকের দিনে গরু বা গাভী পালন কিংবা গরু মোটাতাজাকরণ মানুষের জীবন জীবিকার অন্যতম প্রধান অবলম্বন। সেইজন্য গরুর এই সংক্রামক ব্যাধিতে এলাকার জনজীবনে চরম হতাশা ও মানসিক ভগ্ন অবস্থা বিরাজ করছে। যদি আমরা গরুর মহামারি ঠেকাতে বা রুখতে না পারি অথবা প্রতিরোধ করতে না পারি তবে আমাদের স্থানীয় আর্থসামাজিক জীবনে বিরাট ধ্বস নেমে আসবে। পরিনামে জাতীয় অর্থনীতিও প্রভাবিত হবে। সর্বোপরি উক্ত মড়কে অসংখ্য গরু মারা গেলে মানুষের জীবন জীবিকায় এর মারাত্মক প্রভাবের কারণে স্থানীয় অর্থনীতি ক্রমশ দুর্বল হয়ে এলাকার উন্নয়ন অগ্রগতি ব্যাহত করবে। অতএব সময় থাকতে যথাশীঘ্র সম্ভব তাড়াশ উপজেলা প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় প্রাণী চিকিৎসক ডাক্তার সহ পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন সরকারী কর্তৃপক্ষের জরুরী দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। এই গরুর অতিমারী পরিস্থিতিকে উপেক্ষার কোন সুযোগ নেই।
বাংলাদেশের কবি সাম্য রাইয়ানকে নিয়ে
ভারতীয় পত্রিকার বিশেষ সংখ্যা প্রকাশছবি
ড. আশুতোষ বিশ্বাস, সম্পাদক, তারারা (সাহিত্যের আলোকপত্র), কলকাতা, ভারত ।
সম্প্রতি বাংলাদেশের এক কবিকে নিয়ে ভারতের বাংলাভাষী সাহিত্যপাড়ায় শুরু হয়েছে তুমুল হৈ চৈ। তাঁর লেখা নিয়ে চলছে আলোচনা, সমালোচনা, তর্ক-বিতর্ক। বয়সে তরুণ এই কবির নাম সাম্য রাইয়ান। সম্প্রতি তাকে নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে ড. আশুতোষ বিশ্বাস সম্পাদিত সাহিত্যের আলোকপত্র ‘তারারা’ বিশেষ সংখ্যা।আলিপুরদুয়ারের ক্লাউড লাইন হলে ৬ আগস্ট ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ তারিখে (রোববার) মহাসমারোহে প্রকাশিত হয়েছে সাহিত্যের আলোকপত্র ‘তারারা’ পত্রিকার ‘সাম্য রাইয়ান বিশেষ সংখ্যা’। পত্রিকার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন ড. সৌরভ চক্রবর্তী (চেয়ারম্যান, শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি ডেভলপমেন্ট অথরিটি), বঙ্গরতœ প্রমোদ নাথ, সুধাংশু বিশ্বাস (প্রধান শিক্ষক ম্যাক উইলিয়াম হাই স্কুল), রণজিত মালাকার (বিশিষ্ট কবি), শ্রবণ মাল (অধ্যাপক আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়), গোবিন্দ রাজবংশী (বিশিষ্ট অধ্যাপক), অজিত নাথ (বিশিষ্ট শিক্ষক) প্রমুখ।
কবি, সম্পাদক, প্রাবন্ধিক সাম্য রাইয়ান বাংলাদেশের কুড়িগ্রাম জেলার অধিবাসী। সাহিত্যচর্চা এবং লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের এই মুহূর্তের উজ্জ্বল এবং বিপরীত ধারার কবি হিসেবে এপার ওপার বাংলায় বহুল চর্চিত নন্দিত-কবিনাম। এই তরুণ বয়সেই নেই-নেই করে দশটিরও বেশি গ্রন্থ-রচয়িতা। গ্রন্থ রচনার নিরিখে সংখ্যাধিক্য না হলেও এই তরুণ জ্যোতিষ্কের আলোকপ্রভা ছড়িয়ে পড়েছে স্বদেশ থেকে বিদেশের মাটিতে। ইতিমধ্যেই সাম্য রাইয়ানের ‘হলুদ পাহাড়’ কাব্যগ্রন্থের কলকাতা সংস্করণ হাতে পেয়ে গেছে পশ্চিমবাংলার কবিতাপ্রেমী মানুষ। তাঁর লেখা কবিতা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে নতুন কাব্যগ্রন্থ প্রকাশের তোড়জোড়ও শুরু হয়েছে। এর আগে আমেরিকা থেকে প্রকাশিত সাহিত্যপত্র ‘মনমানচিত্র’ তাকে নিয়ে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছিলো।
‘তারারা’ পত্রিকার এই বিশেষ সংখ্যায় প্রাবন্ধিকগণ সাম্য রাইয়ানের কবিতার ভেতরে লুকিয়ে থাকা শব্দ-গহীন গাঙের অতলে ডুব দিযয়ে তুলে আনতে চেয়েছেন তাঁর কবিত্ব শক্তির অপরিমেয় বহুমাত্রিকতা এবং তাঁর রচনার অনন্য বাঁকফেরা চৈতন্যে প্রবাহিত চোরাস্রোতকে পাঠক দরবারে উন্মুক্ত করে দেওয়ার প্রয়াস রেখেছেন তাদের প্রবন্ধে। এপার ওপার বাংলার প্রথিতযশা কবি, প্রাবন্ধিক, কাব্য সমালোচক সোৎসাহে কলম ধরেছেন তাঁর কবিতার পাঠ এবং পাঠকমুগ্ধতার রহস্যময় প্রেক্ষিতটিকে ছুঁয়ে যেতে চেয়েছেন। প্রতিটি রচনাই গবেষণাধর্মী হয়ে উঠেছে। এ সংখ্যা শুরু হয়েছে সাম্য রাইয়ানকে উৎসর্গীকৃত নির্বাচিত কবিতাগুচ্ছ দিয়ে। যা লিখেছেন, ইয়ার ইগনিয়াস, রুবেল সরকার, সাজ্জাদ সাঈফ, উপল বড়–য়া ও গিয়াস গালিব৷ এরপর ছাপা হয়েছে সাম্য রাইয়ানের একগুচ্ছ অপ্রকাশিক কবিতা।
সাক্ষাৎকার বিভাগে লাবণী মন্ডল, সাইদুর রহমান সাগর, হিম ঋতব্রত, আবু জাফর সৈকত ও অন্যান্যের নেয়া সাম্য রাইয়ানের ছয়টি সাক্ষাৎকার ছাপা হয়েছে।সাম্য রাইয়ানের কবিতা ও গদ্য প্রসঙ্গে গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ লিখেছেন, ড. অমিতাভ কর, ড. সুশান্ত চৌধুরী, ড. মধুমঙ্গল ভট্টাচার্য, ড. আশুতোষ বিশ্বাস, ড. অনিন্দ্য রায়, ড. বিশ্বম্ভর মন্ডল, হরিৎ বন্দোপাধ্যায়, ধীমান ব্রহ্মচারী, স্বাগতা বিশ্বাস, সন্দীপন দাস৷ সাম্য রাইয়ানের লিটলম্যাগ অ্যাক্টিভিটিজ প্রসঙ্গে প্রবন্ধ লিখেছেন, অনুপ মুখোপাধ্যায় ও আহমেদ মওদুদ। সাম্য রাইয়ানের গ্রন্থ পর্যালোচনা লিখেছেন, ড. অমিতাভ রায়, ড. প্রবাল চক্রবর্তী, অবন্তিকা সেন, ফেরদৌস লিপি, সব্যসাচী মজুমদার, সুবীর সরকার, সৈয়দ আহসান কবীর, তানজিন তামান্না, অমিতাভ অরণ্য, সুতপা রায়, সাজ্জাদ সুমন, শামীম ফারুক, বিপুল বিশ্বাশ, আইরিন সুলতানা ও আহমেদ তানভীর। সাম্য রাইয়ানের সাহিত্যের পাঠ অনুভব লিখেছেন, কৌশিক সেন, মাহ্দী আনাম, শামীমসৈকত ও হোসাইন মাইকেল।
‘তারারা’ সম্পাদক জানিয়েছেন, ‘প্রায় দুবছরের অনলস প্রয়াসে এই পত্রিকাগোষ্ঠী এই বিশেষ সংখ্যাটিকে দাঁড় করাতে পেরেছেন’। এগারোটি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ, তাঁর কাব্যগ্রন্থের বহুকৌণিক পনেরোটি বিশ্লেষণ, পাঠ অনুভব যেমন আছে তেমনি কবি সাম্য রাইয়ানকে উৎসর্গীকৃত নির্বাচিত কবিতা ছাড়াও জবরদস্ত অনেকগুলি সাক্ষাৎকার এই সংখ্যায় রাখা হয়েছে।
একশত আটষট্টি পৃষ্ঠার এই সংখ্যাটির দৃষ্টিনন্দন প্রচ্ছদ এঁকেছেন দয়াময় বন্দ্যোপাধ্যায়। পত্রিকাটির দপ্তর সুভাষিণী পল্লি, মানবাজার, পুরুলিয়া হলেও এই প্রথম ‘তারারা’ পত্রিকার এই বিশেষ সংখ্যার আনুষ্ঠানিক আত্মপ্রকাশ আলিপুরদুয়ারের সারস্বত সুধী-প্রাজ্ঞ মালীর করস্পর্শে সম্পন্ন হল। পত্রিকার সম্পাদক আশুতোষ বিশ্বাস, সহ সম্পাদক স্বাগতা বিশ্বাস। পত্রিকার সংগ্রহমূল্য মাত্র দুইশত টাকা।তারারা পত্রিকার ওয়েবসাইট: িি.িঃধৎধৎধঢ়ধঃৎরশধ.পড়
বাঁধনকে নিয়ে কবিতা
স্বপন কুমার মন্ডল
বাঁধন একটি শিশুর নাম বয়স সাত কি আট
জুতা সেলাই করতে বসে রায়গঞ্জের হাট।
যে বয়সে করবে সে খেলাধুলা মাঠে
সেই বয়সে শ্রমের কাজে সময় তাহার কাটে।
রোদ বাদলে পথের ধারে তার বাক্স পাতা
মাথার উপর বেঁধে রাখে ছোট্ট একটি ছাতা।
সারাটা দিন ছোট হাতে জুতা সেলাই করে
কামায় টাকা বাঁচার তরে মা রয়েছে ঘরে।
বছর আগে বাবা যে তার হার্ট এ্যাটাকে মরে
চিরকালের জন্য গেছে এই পৃথিবী ছেড়ে।
অসহায় ওই শিশুর চোখে হতাশারই জল
সকাল বিকাল দেখি চোখে করছে টলোমল।
স্কুলে তার হয় না যাওয়া হয় না খেলার বেলা
জুতা সেলাই টাকা কামাই এই যেন তার খেলা।
কতজন হেলা ভরে কই যে কতই কথা
সেসব শুনে প্রাণে কি তার লাগে নাকো ব্যাথা!
সম্মুক্ষে তার নেই যে আশা নেই কোন তার ভাষা
তার ভাগ্য চাকা বদলে দিলো সে কোন সর্বনাশা!
ভাগ্যে কি তার নেই কোন সুখ রুদ্ধ ভবিষ্যৎ
কে ঘুচাবে জীবন হতে সকল মছিবত!
বাবার ¯েœহ পাবার তরে বুক খানা তার কাঁদে
জন্মেই সে পরে গেছে দুর্ভাগ্যের ফাঁদে।
বাবার ¯েœহ আদর থেকে বঞ্চিত সে হলো
তবুও বাবার ফেলে যাওয়া কাজের বাক্স পেল।
সেই বাক্সের হাতুর বাটাল ভোমর কিছু চাম
তাই নিয়ে সে সারাটা দিন করছে জুতার কাম।
এই শিশুটির জন্য কারও দরদ কিছু আছে
তবুও তাহার যথেষ্ট নয় যাহা পেত বাবার কাছে।
তবু সষ্ট্রা সৃষ্টিকে তার যেন রক্ষা করে
সেই কামনা আজকে হোক সবার দু’হাত ভরে।
সাইবার নিরাপত্তা আইন
নতুন মোড়কে পুরাতন বিধিবিধান
ডেস্ক রিপোর্ট ঃবিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বিভিন্ন ধরনের অপরাধকে যেভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, তা প্রায় হুবহু প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনেও রাখা হয়েছে। দুটি আইনের বিষয়বস্তুও প্রায় একই রকমের।এমনকি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক কমিশন, সম্পাদক পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের যেসব আপত্তি-উদ্বেগ ছিল, প্রস্তাবিত নতুন আইনেও সেসব দূর করা হয়নি। শুধু কিছু ক্ষেত্রে সাজা কমেছে এবং জামিনযোগ্য ধারা বেড়েছে।গত ৯ আগষ্ট বুধবার সন্ধ্যায় সরকারের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অধীন ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির ওয়েবসাইটে প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। এই খসড়ার সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, দুই আইনের মধ্যে পরিবর্তন বলতে প্রথমত শাস্তি কমানো ও জামিনযোগ্য ধারা বাড়ানো হয়েছে। দ্বিতীয়ত, মানহানিকর তথ্য প্রকাশ ও প্রচারের অপরাধের (প্রমাণিত হলে) ক্ষেত্রে কারাদন্ডে পরিবর্তে শুধু জরিমানার বিধান যুক্ত করা হয়েছে।এ ছাড়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুটি ধারা (৩৩ ও ৫৭) প্রস্তাবিত আইনে একেবারে বাদ দেওয়া হয়েছে। এই দুই ধারায় প্রথমটিতে ‘বেআইনিভাবে তথ্য-উপাত্ত ধারণ, স্থানান্তর ইত্যাদির দন্ড’ সম্পর্কে বলা আছে। আর দ্বিতীয়টিতে ‘সরল বিশ্বাসে কৃত কাজকর্ম’ সম্পর্কিত অপরাধের কথা বলা আছে।
আইনমন্ত্রী বলেছেন, এখন যেটা করা হয়েছে, আমার মনে হয় এটি (সাইবার নিরাপত্তা আইন) সাইবার অপরাধ বন্ধ করতে অত্যন্ত সহায়ক হবে। আর আপনারা (সাংবাদিকেরা) যেসব অভিযোগ করছিলেন, সেই অপব্যবহারও বন্ধ হবে। তবেসম্পাদক পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট সবাই মনে করেন, এতে নতুন মোড়কে পুরাতন কালাকানুনগুলোই রেখে দেয়া হয়েছে।
সরকার পতনই একমাত্র উদ্দেশ্য বিএনপির: মির্জা
ডেস্ক রিপোর্ট ঃসরকার পতনই বিএনপির একমাত্র চাওয়া বলে মন্তব্য করে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এ ফ্যাসিবাদী-নির্যাতনকারী সরকারের দমনপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা এক যুগের বেশি সময় ধরে লড়াই-সংগ্রাম করছি। লক্ষ্য একটাই-এ ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে মুক্তি চাই। তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের আত্মত্যাগ কখনো বৃথা যাবে না। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে ল²ীপুর থেকে আসা আহত নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে লন্ডন থেকে স্কাইপে বক্তব্য দেন তারেক রহমান। দলের পক্ষ থেকে সজীবের পরিবার ও আহতদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়। গত ১৮ জুলাই কেন্দ্র ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচিতে ল²ীপুরে সংঘর্ষে নিহত কৃষক দল নেতা সজীব হোসেনের পরিবার এবং পুলিশের গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানো দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপি।
মতবিনিময় সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ইতোমধ্যে অনেকে প্রাণ দিয়েছেন। সাধারণ মানুষ প্রাণ দিয়েছেন, অনেক মানুষ গুম হয়ে গেছেন। শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ সরাসরি গুলি করে সজীব হোসেনকে হত্যা করেছে। অনেকে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছেন। এখন একটাই পথ বা রাস্তা তা হলো- এ সরকারকে সরাতে হবে। এদের পতন ঘটাতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে এ দেশ নিরাপদ নয়। কেউই নিরাপদ নয়। আমাদের অধিকার ও অস্তিত্ব ফিরে পেতে এ সরকারকে সরাতে হবে।
পানির খোঁজে চাঁদে মহাকাশযান পাঠাল রাশিয়া
ডেস্ক রিপোর্ট ঃইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার সহায়তা ছাড়াই রাশিয়া চাঁদে অবতরণযোগ্য একটি মহাকাশযান পাঠিয়েছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে এই অভিযান পরিচালনা করবে মহাকাশযানটি। এর মাধ্যমে সেখানে পানির অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হবে দেশটি। এই অংশে বরফ ও পানি রয়েছে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞানীরা। খবর-আলজাজিরার।
রাশিয়ার মহাকাশ সংস্থার প্রধান ইউরি বরিসভ জানান, গত শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ২টা ১০ মিনিটে রাশিয়ার ভস্তোচনি কজমোড্রোম মহাকাশকেন্দ্র থেকে লুনা-২৫ মহাকাশযানকে বহনকারী একটি রকেট চাঁদের উদ্দেশে রওনা হয়। ২১ আগস্ট মহাকাশযানটির চাঁদে অবতরণের কথা। আশা করছি, নিখুঁতভাবে মহাকাশযানটি চাঁদে অবতরণ করতে পারবে।মহাকাশযানটি প্রায় এক বছর ধরে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে গবেষণা চালাবে। এই অঞ্চলটিতে যুক্তরাষ্ট্রের নাসা ও অন্যান্য মহাকাশ সংস্থা বরফ পানির উৎস খুঁজে পেয়েছেন। গত ৪৭ বছরের ইতিহাসে এটিই হবে রাশিয়ায় প্রথম চন্দ্র অভিযান। এর আগে ১৯৭৬ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন আমলে চাঁদে প্রথমবারের মতো মহাকাশযান পাঠিয়েছিল রাশিয়া। আর গত মাসে ভারত চন্দ্রযান-৩ অভিযান শুরু করে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে এবার ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির কোনো সহযোগিতা নেয়নি রাশিয়া। রাশিয়া বলছে, ইউরোপীয় স্পেস এজেন্সির সহযোগিতা ছাড়াই তারা মহাকাশযান পাঠাতে সক্ষম। ছোট একটি গাড়ির আকারের মহাকাশযানটির ওজন প্রায় ৮০০ কেজি। মার্কিন নভোচারী নীল আর্মস্ট্রং ১৯৬৯ সালে প্রথম মানুষ হিসেবে চাঁদে পা দেন। তারও ১০ বছর আগে ১৯৫৯ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন লুনা-২ অভিযানের মাধ্যমে চাঁদের বুকে প্রথম মহাকাশযান পাঠিয়েছিল। পরে ১৯৬৬ সালে লুনা-৯ মহাকাশযানটি চাঁদে নিখুঁতভাবে অবতরণ করতে সক্ষম হয়।
তাড়াশ উপজেলা ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা
লুৎফর রহমান, তাড়াশ ঃতাড়াশকে ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা করলেন জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মোঃ আব্দুল আজিজ। এ সময় নতুন আরো ৩৫টি পরিবারের হাতে জমির দলিল ও প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ঘরের চাবি তুলে দেন।গত ৯ আগষ্ট বুধবার সকালে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অপরদিকে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে তাড়াশ উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপকারভোগীদের হাতে খাদ্য সামগ্রী ও নতুন ঘরের চাবি হস্তান্তর করেন সিরাজগঞ্জ এর রায়গঞ্জ-তাড়াশ আসনের জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. মোঃ আব্দুল আজিজ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মেজবাউল করিম।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি, উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা ) মোঃ রায়হান কবির, উপজেলা চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান মনি, ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন খান ও প্রভাষক মর্জিনা ইসলাম,বীর মুক্তিযোদ্ধা আরশেদ আলী,তাড়াশ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক মাসুদ, ইউপি চেয়ারম্যান ময়নুল হক,ও মেহেদী হাসান ম্যাগনেট, ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান রুবেল ও সাধারণ সম্পাদক সুলতান মাহমুদ সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপকারভোগীদের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়।অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি নূরী তাসমিন উর্মি।
তাড়াশ পৌর মেয়র-কাউন্সিলরদের রাজশাহীতে সংবর্ধনা
স্টাফ রিপোর্টার :সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌরসভার নব নির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের তাড়াশ উপজেলা সমিতি রাজশাহীর পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। গত ১০ আগষ্ট বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটরিয়াতে মেয়র ও কাউন্সিলরদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন তাড়াশ পৌরসভার মেয়র আবদুর রাজ্জাক, মহিলা কাউন্সিলর রোখসানা খাতুন রুপা, তাড়াশ উপজেলা সমিতি রাজশাহীর আহŸায়ক প্রফেসর ডা. জুলকার নাইন রুবেল, সদস্য সচিব মাহফুজুর রহমান খান মিলন চৌধুরী, সহকারী অধ্যাপক মো. আবু সাইদ, দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার তাড়াশ সংবাদদাতা গোলাম মোস্তফা প্রমূখ।
তাড়াশ প্রাণিসম্পদ দপ্তর চিকিৎসকশূন্য
বিশেষ প্রতিনিধি :
ক্স অর্ধ শতাধিক গরু মারা গেছে
ক্স ভেটেনারী ওষুধের দোকানদারের পরামর্শে গরুর চিকিৎসা করছেন গেরস্তরা
ক্স চিকিৎসা ব্যবস্থা একেবারে বন্ধ
ক্স ২৫৬ গ্রামেই লাম্পিং স্কিন রোগ ছড়িয়ে পড়েছে মহামারী আকারে
ক্স পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মত চিকিৎসক তাড়াশ প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নেই- রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলাতে গরুর লাম্পিং স্কিন রোগ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এই ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বিগত ১ মাসে প্রায় অর্ধ শতাধিক গরু মারা গেছে বলে জানিয়েছেন গেরস্ত লোকজন। বিশেষ করে, লাম্পিং স্কিন রোগে আক্রান্ত গবাদি পশুর সুস্থ হয়ে ওঠা নিয়ে অধিকাংশ গেরস্ত আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
এদিকে তাড়াশ প্রাণিসম্পদ দপ্তরে চিকিৎসক নেই দীর্ঘ দিন ধরে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে রায়গঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. অলিউল ইসলামকে তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের অতিরিক্ত দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি সপ্তাহে এক থেকে দুইদিন হাসপাতালে আসেন। ভুক্তভোগী গেরস্তরা সরকারি চিকিৎসাসেবা না পেয়ে বাধ্য হয়ে পল্লী ভেটেনারী চিকিৎসক, ভেটেনারী ওষুধের দোকানদারের পরামর্শে ওষুধ কিনে রোগাক্রান্ত গরুর চিকিৎসা করছেন। এতে গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। প্রাণিসম্পদ দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন, ইউএলএ, ভিএফএ, এফ.এ.(এ.আই), কম্পাউন্ডার, অফিস সহকারী, ড্রেসার ও অফিস সহায়কের পদের আরও ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারির পদ শূন্য রয়ে গেছে দীর্ঘ দিন ধরে। এ কারণে চিকিৎসা ব্যবস্থাও একেবারে বন্ধ। পৌর এলাকার আসানবাড়ী গ্রামের গেরস্ত রেজাউল বলেন, লাম্পিং স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় লক্ষাধিক টাকা মূল্যের ১টি গরু মারা গেছে আমার। সরকারিভাবে কোন চিকিৎসাসেবা পাইনি। এ গ্রামের রফিক নামের আরেক গেরস্ত বলেন, লাম্পিং স্কিন রোগে আমারও ১টি গরু মারা গেছে। ২৫ দিন চিকিৎসা করিয়েছি পল্লী পশু চিকিৎসক দিয়ে। এতে আমার বাড়তি টাকা খরচ হয়েছে। লাম্পিং স্কিনে আক্রান্ত আমার গোয়ালের ১টি বাছুরের মুমূর্ষ অবস্থা এখনো। অপরদিকে একই গ্রামের আলমাছের স্ত্রী ছাবেদা খাতুন বলেন, অভাব-অনটনের সংসার আমাদের। গোয়ালের দুইটি গরু অর্থ যোগানের অন্যতম ভরসা। ১টি গরুর লাম্পিং স্কিন রোগ হয়েছে ১৫ দিন হয়ে গেল। বিগত ৩ দিন ধরে অসুস্থ গরুটি দাঁড়িয়ে আছে। অনেক শুকিয়ে গেছে গরুটি। দুশ্চিন্তায় রাতে ঘুমাইনা আমিও। বারুহাস ইউনিয়নের কাজিপুর গ্রামের খোকা মিয়া ও আব্দুল মজিদ বলেন, আমাদের ১১ টি গরুর লাম্পিং স্কিন রোগ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌর এলাকার আসানবাড়ী গ্রামের আলমাছের গরু, আবু ছাইমের গরু ও আব্দুল মালেকসহ আরো অনেক গেরস্তের গরু লাম্পিং স্কিন রোগে কাতর হয়ে পড়েছে। এসব গরুর সমস্ত শরীরে গুটি বেড়িয়েছে। কোন কোন গরুর শরীরে ঘা হয়ে গেছে। গেরস্তরা কাপড়ের ন্যাকড়া দিয়ে ঘা বেঁধে রেখেছেন মশা-মাছি পড়ার ভয়ে। জানা গেছে, তাড়াশ উপজেলার ২৫৬ গ্রামেই লাম্পিং স্কিন রোগ অনুরূপ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে।প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. অলিউল ইসলাম বলেন, প্রত্যেক সপ্তাহে একদিন হলেও তিনি তাড়াশে অফিস করেন। এ প্রসঙ্গে রাজশাহী বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ডা. মো.নজরুল ইসলাম চলনবিল বার্তাকে বলেন, পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মত চিকিৎসক তাড়াশ প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নেই। বিসিএসসের নতুন নিয়োগ থেকে জনবল নিয়োগ দেওয়ার জোর সুপারিশ করা হবে।
তাড়াশের ৬০ হাজার মানুষ ব্যাংকিং সেবা বঞ্চিত
শফিউল হক বাবলু ,তাড়াশ ঃসিরাজগঞ্জের তাড়াশের ৩টি ইউনিয়নে কোনো তফসিলি ব্যাংকের শাখা নেই। ফলে ওই ৩ ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। সেই সাথে তাদের আর্থিক লেনদেনও ঝুকির মধ্যে রয়েছে।ইউনিয়ন ৩টি হলো ১ নং তালম, ৭ নং মাধাইনগর ও ৮ নং দেশীগ্রাম ইউনিয়ন। মৎস্য,কৃষি ও প্রাণীসম্পদের প্রাচুর্যে ভরা ওই ইউনিয়ন ৩ টিতে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের বসবাস।
তালম ইউনিয়নের শহীদ এম মনসুর আলী ডিগ্রী কলেজের সহকারী অথ্যাপক আবুল বাসার জানান, ওই ৩ ইউনিয়নের জমি তিন ফসলী হওয়ায় যেমন প্রচুর ফসল উৎপাদন হয় ,তেমনই সরকারী ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বিপুল সংখ্যক পুকুর থাকায় মাছ উৎপাদনেও শীর্ষে রয়েছে ওই তিন ইউনিয়ন। এছাড়া প্রতিসপ্তাহে তিনটি ইউনিয়নে ৭ থেকে ১ টি প্রসিদ্ধ হাটে কোটি কোটি টাকার মাছ ও খাদ্য শস্য বিক্রি হয়।
মাধাইনগর ইউনিয়নের ওয়াশীন গ্রামের কৃষক মিলন সরকার, তালমইউনিয়নের উপরসিলট গ্রামের খামারি খলিল মিয়া ও দেশীগ্রাম ইউনিয়নের মাঝদখিনা গ্রামের মৎস্যচাষী ফজলুর রহমান জানান, ওই তিন ইউনিয়নের কোথাও সরকারী তফসিলি বা বাণিজ্যিক ব্যাংকের শাখা নেই। ফলে ২৫ থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরে উপজেলা সদরের ব্যাংকগুলোতে গিয়ে আমাদের আর্থিক লেনদেন করতে হয়। ফলে আমরা ঋণ সুবিধাসহ সকল ব্যাংকিং সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।এ বিষয়ে ৭ নং মাধাইনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিলুর রহমান জানান, উপজেলার ৮ ইউনিয়নের অন্য ৫টিতে বিভিন্ন ব্যংকের শাথা থাকলেও ১ নং তালম, ৭ নং মাধাইনগর ও ৮ নং দেশীগ্রম ইউনিয়নে কোনো ব্যাংকের শাখা নেই। এতে ওই তিন ইউনিয়নের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ ব্যাংকিং সেবা থেকে বঞ্চিত এবং আর্থিক নিরাপত্তাহীনতায় আছেন।এ প্রসংঙ্গে তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেজবাউল করিম বলেন, ওই তিন ইউনিয়ন উপজেলা সদর থেকে বেশ দূরে। তাই ইউনিয়নগুলোয় ব্যংকের শাখা স্থাপন জরুরী। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
তাড়াশ মার্কাস জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটি গঠন
মোশাররফ হোসেন মল্লিকী । দীর্ঘ পনেরো বছর পর তাড়াশ মার্কাস জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটি গঠন হলো। গত ১১ আগস্ট ২০২৩ রোজ শুক্রবার বাদ জুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মেজবাউল করিম-এর সভাপতিত্বে সাধারণ অধিবেশনে পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপস্থিত সকলের সাথে মতবিনিময় করে বিগত বছরগুলোর মসজিদের হিসাব-নিকাশ সমাপন করেন। পরবর্তীতে মিটিং-এর এজেন্ডা মোতাবেক তাড়াশ মার্কাস জামে মসজিদের পরিচালনা কমিটি গঠনকল্পে তিনি সকলের অভিমত নিয়ে সিলেকশনের মাধ্যমে ২৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করেন। যার সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ও মোঃ কামরুজ্জামান মিয়া, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মোঃ শিহাব উদ্দিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আনোয়ার হোসেন খান, কোষাধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন মল্লিকী এবং কার্যনির্বাহী সদস্য হলেন যারাঃ আলহাজ মোঃ মোক্তার হোসেন, মোঃ শামসুল ইসলাম মির্জা, আলহাজ মোঃ তাইবুর রহমান, মোঃ আব্দুল জলিল, মোঃ ফরহাদ আলী বিদ্যুৎ, আলহাজ সুজাব আলী প্রামানিক, মোঃ আব্দুল বারিক খন্দকার, এস আলম, মোঃ আব্দুল ওহাব এ্যাডভোকেট, গাজী ফরহাদ হোসেন, আলহাজ আমিরুজ্জামান আমির, স.ম. আফসার আলী, মোঃ আব্দুল আজিজ, মোঃ আব্দুল মান্নান, মোঃ মিন্টু মিয়া, আলহাজ হাফেজ মোঃ আব্দুল্লাহ।
সম্প্রতি বাংলাদেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সরকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে এক জনমত জরিপ চালিয়েছে ওয়াশিংটনভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনষ্টিটিউট (আইআরআই) যার সারকথা হলঃ
বাংলাদেশ ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন ৫৩ শতাংশ ।
দেশের অর্থনীতি ভাল অবস্থানে নেই মনে করেন ৫১ শতাংশ।
নাগরিক সমাজ রাজনৈতিক অভিজাতদের স্বার্থ সুরক্ষায় কাজ করছে বলে মনে করেন ৬২ শতাংশ।
সরকার প্রধান হিসেবে শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা আছে ৭০ শতাংশের।
বিরোধী দলের সমর্থন বেড়ে হয়েছে ৬৩ শতাংশ।
তত্ত¡াবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনর্বহাল দরকার বলে মনে করেন ৪৪ শতাংশ।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তাড়াশে ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তার ঘুষ বাণিজ্য
তাড়াশ প্রতিনিধি ঃ সিরাজগঞ্জের তাড়াশে অবসরপ্রাপ্ত অফিস পিয়ন আব্দুল হামিদ ও মাধাইনগর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা সেলিম রেজার বিরুদ্ধে রমরমা ঘুষ বাণিজ্য ও প্রজা হয়রানির অভিযোগ উঠেছে । ওই ইউনিয়নের একাধিক প্রজার অভিযোগ, ভূমির নামজারি, খাজনা রশিদ, পরচার ফটো কপিসহ সর্বক্ষেত্রে তাদের দিতে হয় মোটা অংকের ঘুষ। না দিলে হতে হয় সিমাহীন হয়রানী ও খারাপ আচরনের শিকার।ভূমি কর দিতে আসা মাধাইনগর গ্রামের গ্রজা নজরুল ইসলাম জানান, আমরা শুনেছি মাধাইনগর ইউনিয়ন ভূমি অফিস ওয়াশীন কার্যালয় থেকে গত এপ্্িরল মাসে অবসরে যান অফিস পিয়ন আব্দুল হামিদ। এরপরও ওই অফিসের ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা সেলিম রেজা সরকারী নিয়ম কানুন উপেক্ষা করে আব্দুল হামিদকে নিয়ে কাজ করছেন এবং দুজনে মিলে অফিসটাকে ঘুষ বানিজ্যের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত করেছেন।
ওয়াশীন গ্রামের প্রজা জয়নুল আবেদীন জানান, পিয়ন আব্দুল হামিদ তার ৪ শতক জমি খারিজ করতে ৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। সোনাপাতিল গ্রামের প্রজা নয়ন সরকার বলেন, আমার একটি খারিজে আব্দুল হামিদ ১৫ হাজার টাকা নিয়েছেন। ভাদাস গ্রামের শহিদুল,আলম,কাদের ওয়াশীন গ্রামের আবু বকর, সাইদুরসহ একাধিক প্রজা ভূমি কর্মকর্তা সলিম রেজার বিরুদ্ধে প্রজাদের সাথে অসৌজন্যমুলক আচরন, প্রজাদের হয়রানী ও প্রতিটি খাজনার দাখিলার জন্য ৪শ থেকে ৮শ টাকা বাড়তি আদায়ের অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে পিয়ন আব্দুল হামিদ গত এপ্্িরল মাসে অবসরে যাওয়ার কথা স্বীকার করেন। ঘুষ গ্রহণ ও অবসরে গিয়েও অফিস করার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি নিরব থাকেন। মাধাইনগর ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা সেলিম রেজার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। অন্যদিকে সেলিম রেজা কর্মস্থলেও ছিলেন অনুপস্থিত । তাড়াশ উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) নুরী তাসমিন ঊর্মির সাথে কথা বলার জন্য বার বার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
শেষের পাতার ফিচার
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীঃ আজীবন যারা শ্রমজীবি
গোলাম মোস্তফা
ক্স ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অধিকাংশ প্রান্তিক লোকজন জানেনা আদিবাসী দিবস কী
ক্স শ্রমের মজুরীতেও বৈষম্যের শিকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী শ্রমিকরা
ক্স পাহাড়ের আদিবাসীদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় রয়েছে। জাতীয় বাজেটে তারা অন্তর্ভুক্ত। সমতলে বসবাসরত আদিবাসী পাহাড়ী আদিবাসীদের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশী। কিন্তু তাদের জন্য কোন পৃথক মন্ত্রণালয় নাই। কিছু অর্থ থোক বরাদ্দ হিসেবে দেওয়া হয়। এই সামন্য অর্থে সমতলের আদিবাসীদের জীবন মানের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়- জাতীয় আদিবাসী ফোরামের সভাপতি রবিন্দ্র নাথ সরেন।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশে সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর লোকজন মাঠে কৃষি শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু বছরে ৭ মাস কাজ থাকেনা। এই সময় তাদের সীমাহীন দু:খ দুর্দশার মধ্যে পড়তে হয়। আগামীকাল ৯ আগষ্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অধিকাংশ প্রান্তিক লোকজন জানেনা আদিবাসী দিবস কী ?
এদিকে শ্রমের মজুরীতেও বৈষম্যের শিকার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী শ্রমিকরা। সারাদিন মাঠে কৃষিতে শ্রম দিয়ে তারা ২৫০ টাকা পায়। ইট ভাটার কাজের নারী শ্রমিকদের দেওয়া হয় মাত্র ১৫০ টাকা।
তালম ইউনিয়নের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী অধ্যূষিত গুল্টা গ্রামের উরাঁও সম্প্রদায়ের কাঞ্চন, বাসন্তী, শিল্পি, মঞ্জু, মনিকা ও দিপালী বলেন, বোরো মৌসুমে ৩ মাস কাজ করেছি। গত শুক্রবার থেকে স্বল্প পরিসরে রোপা আমন ধান রোপনের কাজ শুরু হয়েছে। এর আগে তিন মাস ঘরে বসে থেকেছি। অনেকে বিন্যার ফুল, খেজুর পাতা ও তালপাতার ঝাটা, সাপটা, পাটি বুনে তা বিক্রি করে কোনমতে সংসার চালানোর চেষ্টা করেছেন। মাঠে কাজ না থাকলে সহায় সম্বলহীন উরাঁওদের অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটে। দুবেলা খেতে অনেকে মহাজনের চড়া সুদের ঋণে, দোকানে বাকি ও ধার দেনাতে জড়িয়ে পড়েছেন। রোপা আমন ধানের কাজ দুই মাস থাকে। তারপরে আবার চার মাসের কর্মহীন কষ্টের জীবন শুরু হয়ে যাবে।অপরদিকে আদিবাসী দিবস সম্পর্কে প্রান্তিক উরাঁও কৃষি শ্রমিকরা বলেন, দিন মজুর খেটে পেট চলে আমাদের। আদিবাসী দিবস কি জানিনা, জানতেও চাইনা। মাঠে কাজ থাকলেই আমরা খুশি।জানা গেছে, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারী কৃষি শ্রমিকরা রোপা আমন ধান রোপনের কাজ করে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা পাচ্ছেন। আর যারা ইট ভাটায় ইট তৈরি, ইট কাটা ও রোদে শুকানোর কাজ করেন তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হয় ১৫০ টাকা।
সরেজমিনে গত রবিবার বিকেলে গুল্টা গ্রামের পূর্ব মাঠে দেখা গেছে, এক দলে ১১ জন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্টীর নারী ও ৫ জন পুরুষ ধানের চারা রোপনের কাজ করছেন। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি সুশীল কুমার মাহাতো বলেন, আদিবাসীরা আগে কুটির শিল্পের কাজ করতেন। কিন্তু উন্নত প্রযুক্তির শিল্প পণ্যের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে এ পেশা থেকে বেড়িয়ে এসেছেন। তাদের একমাত্র কর্ম কৃষি শ্রম। সময়ের সাথে আদিবাসীরা আরো প্রান্তিক হয়ে পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন এই আদিবাসী নেতা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম বলেন, সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বৃত্তি চালু রয়েছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা উপকরণ ও সাইকেল দেওয়া হচ্ছে। আয় বর্ধক কর্মসূচির আওতায় গবাদি পশু দেওয়া হচ্ছে।এ প্রসঙ্গে জাতীয় আদিবাসী ফোরামের সভাপতি রবিন্দ্র নাথ সরেন দৈনিক ইত্তেফাককে বলেন, পাহাড়ের আদিবাসীদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় রয়েছে। জাতীয় বাজেটে তাদের বরাদ্দ রাখা হয়। সমতলে বসবাসরত আদিবাসী মানুষের সংখ্যা পাহাড়ী আদিবাসীদের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশী। কিন্তু তাদের জন্য কোন পৃথক মন্ত্রণালয় নাই। কিছু অর্থ থোক বরাদ্দ হিসেবে দেওয়া হয়। এই সামন্য অর্থে সমতলের আদিবাসীদের জীবন মানের উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব নয়। তিনি আদিবাসীদের চাকরির ক্ষেত্রে সরকারি ৫% কোটা পূনর্বহালের জোর দাবি জানান।
তাড়াশে নারীদের জন্য বিশেষ চক্ষু শিবির
স্টাফ রিপোর্টার : সিরাজগঞ্জের তাড়াশে দরিদ্র নারীদের চক্ষু সেবা প্রদানের জন্য বিশেষ ক্যাম্পের আয়োজন করা হয় গত ৬ আগষ্টরবিবার পৌর এলাকার কহিত স্কুল মাঠে। বিনামূল্যে এ সেবাদান চলে সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত। চোখের অসুখজনিত কারণে ১৩৬ জনকে চশমা ও ১১৫ জনকে ওষুধ দেওয়া হয়। এছাড়াও ১৩ জনের চোখের ছানি অপারেশন করে দেওয়া হবে। সিরাজগঞ্জের প্রফেসর এম.এ মতিন মেমোরিয়াল বিএনএসবি বেজ আই হসপিটালের উদ্যোগে তাড়াশেরবেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা পরিবর্তন এর সহযোগিতায় নারীদের বিশেষ ক্যাম্পে চক্ষু সেবা প্রদান করেন রিফ্রাকসনিষ্ট জিয়াউল কবির, প্যারামেডিক নজরুল ইসলাম খান, অর্গানাইজার তালহা, এমএলওপি আরিফুল বারি, সাব্বির হায়দার ও ইনক্লুসিভ অফিসার মাহমুদুল হাসান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পরিবর্তন সংস্থার পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক রাজু, উপপরিচালক ও পৌর কাউন্সিলর রোখসানা খাতুন, কর্মসূচি পরিচালক গোলাম মোস্তফা প্রমূখ।
সিংড়া প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সাহিত্য আসর
সিংড়া প্রতিনিধিঃ নাটোরের সিংড়া প্রেসক্লাবের উদ্যোগে মাসিক সাহিত্য আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শনিবার (৫ আগষ্ট) বেলা ১১ টায় সিংড়া প্রেসক্লাব কমপ্লেক্সে ভবনে এ সাহিত্য আসর অনুষ্ঠিত হয়। সিংড়া প্রেসক্লাবের সভাপতি মোল্লা মোঃ এমরান আলী রানার সভাপতিত্বে ও প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৌরভ সোহরাবের সঞ্চালনায় সাহিত্য আসরে প্রায় অর্ধ শতাধিক নবীণ প্রবীণ কবি ও সাহিত্যিক অংশ নেন। আসরে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি মাহাবুব এ মান্নান, কবি আজাহার আলী, আমজাদ হোসেন, আবুল হোসেন, সরদার মোহাম্মদ আলী, আলতাফ হোসেন, এনামুল হক মিন্নতি, রিক্তা বানু, শাকিল বাদশা, প্রত্যয় সাহা, সামাউল ইসলাম, কবির হোসেন, প্রমূখ।
কবিতা পাঠ শেষে সমাপনি বক্তব্যে অনুষ্ঠানের সভাপতি মোল্লা মোঃ এমরান আলী রানা বলেন, প্রযুক্তির এই যুগে সাহিত্য চর্চা থেকে মানুষ অনেকটাই দুরে সরে গেছেন। প্রতি মাসে একবার করে এই সাহিত্য আসরের আয়োজন অব্যাহত থাকবে। আমরা চাই নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা যেন প্রযুক্তির অপব্যবহারে ধবংস না হয় সেই লক্ষ্যেই তাদেরকে বেশি করে সাহিত্য চর্চার উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
তাড়াশে খামারিদের প্রশিক্ষণের টাকা আত্মসাৎ
তাড়াশ প্রতিনিধি: রাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের এলএফএ বলাই সিংহ’র বিরুদ্ধে প্রশিক্ষণার্থীদের নামে বরাদ্দকৃত ভাতার টাকার ভিতর থেকে ২’শ টাকা করে কেটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। জেলা ও উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে এ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীরা এবিষয়ে তদন্তপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগে জানাগেছে,তাড়াশ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের মাধ্যমে গত জুলাই ২০২৩ মাসে মাধাইনগর ইউনিয়ন পরিষদে খামারিদের সাইলেজ তৈরি পদ্ধতি শিখানোর উপর ৮০ জনকে ট্রেনিং দেওয়া হয়। দুইদিন ট্রেনিং শেষে প্রত্যেক খামারিকে এক হাজার করে টাকা সম্মানিভাতা দেওয়া হয়। কিন্তু এসময় উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের এলএফএ বলয় কুমার সিংহ খামারী প্রশিক্ষণার্থীদের নিকট থেকে জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তার নাম ব্যবহার করে প্রতি প্রশিণার্থীর বরাদ্দকৃত ভাতার ভিতর থেকে ২০০ টাকা করে কেটে নেন। কিন্তু ওই টাকার বিষয়ে প্রশিক্ষনার্থী খামারিরা জানতে চাইলে প্রশিক্ষনার্থীদের তিনি জানান এই টাকা জেলা ও তাড়াশ উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাকে দিতে হবে। অপরদিকে একই কায়দায় দেশীগ্রাম ইউনিয়নের কাটাগাড়ি বাজারে অনুষ্ঠিত ট্রেনিং থেকেও তিনি ২০০ করে টাকা কেটে নিয়েছেন। এতে খামারিরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ও এবিষয়ে এফএলএ বলয় সিংহ’র বিরুদ্ধে তদন্তপুর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন । সেইসাথে এফএলএ বলয় কুমার সিংহ’র অপসারণও দাবি করেছেন তারা।
অভিযোগে আরো জানাযায়, খামারিদের ঘর মেরামত বাবদ ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়। সেই টাকাও তিনি উত্তোলন করে নিজেই ১৫ হাজার টাকার মধ্যে কাজ শেষ করে,সে টাকার ভিতর থেকেও ৫ হাজার করে টাকা আত্মসাত করেছেন। এছাড়াও গ্রামে খামারিদের প্রাণির চিকিৎসা দিতে গেলে তিনি ৫০০ টাকা করে ভিজিট নিচ্ছেন। অথচ ফ্রি চিকিৎসা দেওয়ার কথা রয়েছে। এভাবে সে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন তাড়াশ উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসকে। এলএফএ বলাই সিংহ’র এসকল দুর্নীতির বিষয়টি জেলা ও উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাগণ জানলেও তারা তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। তারাই রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভুমিকায় রয়েছেন এবং তাদের ছত্রছায়ায় তিনি এমন দুর্নীতি করে চলেছেন। এমনকি সংশ্লিষ্ট জেলা ও উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তাগণ তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় তিনি আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। ফলে ভুক্তভোগীরা তদন্ত পুর্বক তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন। এব্যাপারে তাড়াশ উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসের এলএফএ বলাই সিংহ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন ভুক্তভোগীদের সাথে বিষয়টি আমি নিস্পত্তি করে নেবো।
আসলে কতদেশ আছে পৃথিবীতে
ডেস্ক রিপোর্ট : পৃথিবীতে দেশ আসলে কটি। প্রশ্নটির উত্তর একটু জটিল। কারণ, এমন অনেক দেশ আছে, যাকে জাতিসংঘ স্বীকৃতি দেয় না, কিন্তু নিজেরাই স্বাধীন দেশ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। আবার কিছু দেশ আছে, তাদের জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলো স্বীকৃতি দেয় না। ফলে জাতিসংঘের তালিকায় তাদের নাম নেই। ফলে আসলে পৃথিবীতে দেশ ১৯৫, ১৯৭ নাকি ২০৭ এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ নয়।বর্তমানে জাতিসংঘের তালিকায় আছে ১৯৩টি দেশ। অর্থাৎ এই ১৯৩টি দেশ তাদের সদস্যরাষ্ট্র। এর বাইরে আরও ২টি দেশকে তারা পর্যবেক্ষক দেশের তালিকায় রেখেছে। দেশ ২টি হচ্ছে হলি সিটি/ভ্যাটিকান সিটি এবং ফিলিস্তিন।
আবার জাতিসংঘের এই তালিকা নিয়ে বিতর্ক আছে। যেমন তাইওয়ান। তাইওয়ান ১৯৪৫ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘের সদস্যরাষ্ট্রই ছিল। কিন্তু তা আর নেই। এখন দেশটিকে জাতিসংঘ আগের মতো স্বশাসিত এলাকা বলে স্বীকৃতি না দিয়ে বরং মেইনল্যান্ড চীনশাসিত এলাকা বলে এখন গণ্য করে। আবার কসোভোর কথাই ধরা যাক। জাতিসংঘের সদস্য প্রায় অর্ধেক দেশই কসোভোকে সার্বিয়ার অংশ বলে মনে করে। আবার অনেকের কাছে কসোভো স্বাধীন দেশ। সুতরাং জাতিসংঘ অনুযায়ী, পৃথিবীতে দেশ এখন ১৯৩টি।